আমি উড়ে যাচ্ছি।
আমার চীর পরিচিত গ্রাম ছেড়ে
আমার প্রিয় শহর ছেড়ে
পরিবার, প্রিয়জনদের ছেড়ে
কতশত পরিচিত প্রিয়মূখ ছেড়ে
আমার হৃদয়ের জন্মভূমি ছেড়ে।
মাটি থেকে কয়েক হাজার ফুট উঁচু দিয়ে
অন্য এক জনপদে
ভিন্ন এক স্বপ্নের দেশে ছুটে চলে যাচ্ছি।
কখনো মেঘের ভিতর দিয়ে
কখনো মেঘের উপর দিয়ে।
এখানে সবুজ নেই
এখানে জনপদ নেই কোন
আশেপাশে যানবাহনের কোলাহল নেই
কোথাও কোন ঘরবাড়ি নেই
নদী নেই, সাগর নেই,পাহাড় নেই।
যতদূর চোখ যায় শুধু মেঘ আর মেঘ
পরিচ্ছন্ন সাদা মেঘ, ধূসর রঙের মেঘ,
কোথাও কোথাও ফ্যাকাশে রঙের মেঘ।
মেঘের ছোট ছোট পাহাড়, বিচিত্র নকশার পাহাড়
এ যেন সত্যিকারের মেঘেরই রাজ্য।
মেঘের ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে ঘন নীল আকাশ
কখনো মনে হচ্ছে মেঘের সড়কের উপর দিয়ে ছুটে যাচ্ছি
আবার কখনো মনে হচ্ছে বায়বীয় জাহাজে
মেঘের সাগর পারি দিয়ে দ্রুত চলে যাচ্ছি।
আশেপাশে মেঘের ভারি পর্দা
মনে হয় যেন সাদা মেঘের ঘন আবরণ।
পৃথিবী নামের যে গ্রহে এতদিন বাস করেছি
সেখান থেকে সাময়িক বিচ্ছিন্ন হলাম।
ছোট জানালা দিয়ে নীচে তাকালে
পৃথিবীর বৃহৎ সৃষ্টিগুলোকে মনে হয় যেন
আশ্চর্য্য রকমের ক্ষুদ্রাকার খেলনা।
কত নদী, সাগর, পাহাড়
কত শহর, কত দেশ পিছনে ফেলে
ছুটে চলে যাচ্ছি এক ভিণদেশে।
ওরা কথা বলে অন্য ভাষায়
ভিন্নসব নিয়ম কানুনের দেশ।
আমি তাদের দেখব, মিশবো, কথা বলবো
কারো কারো সাথে মিতালিও হতে পারে।
আমার জন্মকালের লালিত স্বপ্ন আজ পূরণ হবে
অদ্ভূত রকমের এক মাহেন্দ্রকালে।
হে আমার মালিক!
তোমাকে অশেষ ধন্যবাদ
অকুণ্ঠ ভাষায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
অজানাকে জানার অচেনাকে চেনার যে দুর্দান্ত ইচ্ছা আমাকে দিয়েছো
তোমারই কৃপায় তা আজ চরিতার্থ হতে চলেছে।
পৃথিবী নামের যে গ্রহে এতদিন বাস করেছি
সেখান থেকে সাময়িক বিচ্ছিন্ন হলাম
মহান আল্লাহর অপার করুণায়
আবার সেই গ্রহের মাটিতে পদার্পন করবো।


(মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে বিমানে অবস্থানকালে
লিখলাম)
২৭/৮/১৯
৪৫/২০