কোন কোন দিন মনে হয় , দিনটা ঝুপ করে ডুবে গেলে ভাল হয়, রাত্রির জলে । আসুক রাত , হোক তা আরও গভীর থেকে গভীরতর । গাঁঢ় অন্ধকারে ভরে যাক চারদিক , কেউ খুঁজে না পাক তাঁকে –তবেই বেশ ভাল হয় ! দিনের পাঁচালি গাইতে গাইতে বড় কালন্ত , অবসন্ন সে !
কে যেন বলেছিল , মেয়েদের আবার দিন-রাত ! দিন সবার আর রাত ? রাত একজনের ! তোর নিজের বলে কিছু নেই রে মেয়ে ! তখন এসব শুনে খুব হেসেছিল সে , হাসি ! একবারে খিলখিলিয়ে ! আর আজ , সে কথাগুলোর মানে সে বেশ বুঝতে পারে । মেয়েদের আবার দিন-রাত ! বড় সত্যি কথা !
সেই কৈশোর বেলা থেকেই মায়ের আচার আচরণে বুঝে গিয়েছিল সে , মা যেন খুব একটা খুশী হননি তাঁর আগমনে ! স্কুলের বই –খাতা নিয়ে বসলেই , মার মুখ কেন জানি একটা কাল মেঘে যেত ঢেকে ! সবাইকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলতেন; আবার পড়তে বসলি , রাতে পড়া যেত না ! ছোটগুলোকে এখন সামলাবে কে ? আর এত গাদা গাদা পড়েই বা কি করবি , সেই তো ঠেলতে হবে হেঁশেল !
মা মিথ্যে বলেননি । যদিও তাঁর সেদিনের বলার মধ্যে একটা ক্ষোভ ছিল ,ছিল একটা সুগভীর বেদনাবোধ –যা সাধ্য ছিল না উপলব্ধি করার সেই কাঁচা বয়সে । মাকে খুব খুব শত্রু মনে হত তখন । এখন আর হয় না ! মা মাই । মায়ের মত বড় কি কেউ আর হয় ? মায়ের মত আপন? মায়ের মত করে সবার ভাবনা ভাবা ?
মা আমার সাত সমুদ্দুর , মা আমার সাত রাজার ধন
মা নেই যার , পোড়া কপাল তাঁর
মা আছে যার , রাজার কপাল তার !!