হঠাৎ দেখা তোমার সাথে আলতো গায়ের একটা চালতে
রেল স্টেশনে । হাতে তোমার খবরের কাগজ সেদিনের
দু চোখে চশমা পুরু । চুলে ধরেছে ক্ষয় , আগের মতো
দোল খায়না মুক্ত বাতাসে । চায়ের কাপে ধরা তোমার
ডান হাতের দু আঙ্গুল , যা দিয়ে কতবার ছুঁয়েছ আমার
কৃষ্ণ কবরী কুন্তল !


অবাক হলেম , যেমন করে লোকে অবাক হয় একদা পুকুরে
হারিয়ে যাওয়া সোনার আংটি খুঁজে পেলে, সেই সাথে
পেখম মেলা ময়ুর আনন্দ । ভেবেছিলেম চিনবে আমায়
ততটা তো বদলিয়ে যায়নি , যে যাবেই না চেনা
চিনলে না !


বুঝলাম , পালটাও নি তুমি , এতদিনেও
বিন্দু পাল্টায়নি তোমার সেই পুরনো স্বভাব । আগের মতোই
আজও কি শুরু করতে হবে প্রথম আমায় । প্রথম কথা কিন্তু
এবার বলার পালা ছিল তোমারই ? কইব না কথা
আমিই কি পালটিয়ে গেছি !


ভাবলেম , দুজনেই থাকতেম আগের মত যদি বনসাই বৃক্ষের
ফুলরাজি , তাহলে বোধহয় জমা কথা হতো শুরু ।
না হলেও মন্দ হতো না ! বুকে তো জমাই আছে
সব কথা । এখনকার নতুন নুতুন কথাগুলো বলার
আর শোনার সময় আছে কি কারও কিংবা ইচ্ছে ?
নদীর কি সাধ হয় না সাগরে মিশে যাবার পর আবার
পুরনো চেনা পৃথিবীতে ফিরে আসতে ?
কি জানি !


চালতে রেল স্টেশনে , দরাদরি কম
কম আদল বাদল মুখের ছড়াছড়ি
ছেড়ে দিল ট্রেন ---------! জানালার ফ্রেমে মুখ রেখে
তাকালেম ছেড়ে আসা স্টেশনে নয়, তোমার দিকে, তোমারই দিকে
অবাক করা কাণ্ড, দেখলেম পালটিয়ে গেছ তুমি
এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছ আমার দিকে। তোমায় গাঢ় স্বরে
বলতে চাইলেম বদলে যাই নি আমিও
বদলে যাই নি । পারলেম না ।


হুস হুস শব্দ ট্রেনের আবার ফিরিয়ে নিয়ে গেল তোমায় আমায়
সেই পরিচিত জীবন মীড়ে। যেখানে পালটানো আর না পালটানো
সবই সমান !