বিশুদ্ধ সেকাল


গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের শাশ্বত ছবি
সবই যেন আজ অস্তমিত  রবি।
কালের আবর্তে হারিয়ে যায়  ঢেঁকি
ঢেঁকিছাঁটা চাল নেই,সব কিছু মেকি।
নেই কুপি বাতি নেই লন্ঠন
পড়ার টেবিল  থেকে উধাও হেরিকেন।
ড্রইংরুম কেড়ে নেয় কাছারি ঘর
শোনা যায় না হুক্কার গড়গড়।
অদৃশ্য কাঠের লাঙ্গল জোয়াল
চাষি চষে  না গরু-মহিষের হাল।
কৃষকের  কণ্ঠে নেই পল্লির  গান
চলে গেছে নানা পাখি ঘুঘু ডাহুকের কূজন।
বর্ষায় খাল-বিলে শাপলা শালুক
অন্তিম যাত্রায় করছে ধুক-ধুক।
রাখাল গরু পাল নিয়ে চলে না মাঠে
কৃত্রিম মোটা-তাজাকরণ চলে বাটে বাটে।
দল বেধে কিষাণের ধান কাটার দৃশ্য
রাতভর গরু-মহিষ দিয়ে মাড়াই অদৃশ্য।
আউশ চালের শিরনী যায় সুদূরে
হয় না এখন আর নতুন ধানের চিড়ে।
খেজুর গাছের  রস কাটা কদাচিৎ
শীতের পিঠাপুলি উৎসব সুদূর অতীত।
আখের গুড় এখন ডুমুরের ফুল
রাসায়নিকে গুড়ে বালি ভেজালে মরে কুল।
অলস  বিকেলে  গৃহবধূ সারিবদ্ধ বসে
মাথায় বিলি দেয়া হয় না কোনো মাসে।
নদী বুকে পাল তোলা নৌকা দেখা অলীক স্বপন
নেই  দাঁড়ের শব্দ আর মাঝির ভাটিয়ালি গান।
চন্দ্রালোকে পুঁথি পাঠ বসে না আসর
ফেইসবুক কেড়ে নেয় আনন্দ বাসর।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় গড়া কৃত্রিম  একাল
হারিয়ে গেছে মধুময় বিশুদ্ধ সেকাল।


    রচনাঃ০১/০৮/২০২২