ফিরে দেখা বন্ধুত্ব
(পর্ব—২)


মাঝে মাঝে শুধায় বন্ধুবর আমায়—
অবিশ্বাস্য! কারো সাথে বাঁধবো জুটি কোনদিন!
এক ঘন বন্ধুত্বের সানগ্লাসে ঢাকা পড়ে বাস্তবতা
ফেলে আসা দিনগুলো কাঁদায়! আহা কী মধুর সে ক্ষণ!
একদিন তার সাথে ইলুহার পথে—
ক'জন বন্ধু মিলে যাত্রা, লক্ষ্য অবকাশ যাপন,
পথিমধ্যে বানারীপাড়া ছোট্ট রেস্তোরাঁয়
রমজানে চলে মধ্যাহ্ন ভোজন!
ইলুহারে বন্ধু বাড়ি সবাই সুবোধ বালক!
দো'আ কত আদর করেন, বন্ধু বাবা চেয়ারম্যান,
তাঁর নির্দেশে ইফতারে প্রচুর সম্ভার
বলি বাঁচাও বিধাতা!করবো না আর এমন।  
চলে প্রস্তুতি চূড়ান্ত পরীক্ষার—
এর কদিন আগে ছাত্র সংসদ নির্বাচন,
ছাত্রলীগ প্রায় পূর্ণ প্যানেলে জয়ী
ভিপি নানক ভাই; জিএস শহীদ খান।
বিরোধীপক্ষ জয়ে সরকারি দলের তান্ডব!
সবক'টি ছাত্রাবাসে ভয়াবহ শঙ্কা নিরাপত্তাহীন,
যামিনী যাপন বন্ধুর আত্মীয়'র গৃহে
এভাবে সাম্মানিক পরীক্ষার সমাপন।
ক্ষণিকের তরে ফিরে যাওয়া শেকড় টানে
চিঠি চালাচালি চলে কিছুদিন,
প্রতিহিংসার দেশে ফলাফলে ঘটে বিপর্যয়!
আমরা দু'বন্ধু মিলে খানিকটা রাখি সম্মান।
জীবন রথ চলে ঢাকার পানে
জহুরুল হক হলে দু'বন্ধুর হয় আবাসন,
আবার একই কক্ষে! কাকতালীয় নয় কি?
শুরু হয় স্নাতকোত্তর পর্বের রণ।
একসাথে রাঁধি,একসাথে বাঁচি
এইতো সূচনা আগামীর স্বপন,
বাস্তব বোধ বাড়ে জ্যামিতিক হারে
রাজনীতি পঠন-পাঠন গ্রন্থাগারে চলে দিন।
বিরাশি'র মধ্য ফেব্রুয়ারি পড়ন্ত বিকেলে
দানাবাঁধে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন
অগ্নি শর্মা মিছিলে যাই দোয়েল চত্বরে
শহীদ জয়নালের লাশ রক্ষণে কারাবরণ!
কিছুদিন তরে বিচ্ছিন্ন  হয়ে পড়া
যেন শৃঙ্খলিত গোটা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গন।
নির্যাতন সেনানিবাসে, একদিন মুক্তি আসে
বন্ধুবর নিয়ে যায় ফয়েজ চাচার ভবন,
চিকিৎসা শেষে ফিরি মায়ের কোলে
নিখোঁজ সংবাদে মা মৃত্যু শয্যায় তখন।


রচনাঃ০৭ জুলাই, ২০২৩
(চলবে)