জননী


ধরিত্রী বুকে  মম আগমন তরে,
প্রথম কষ্ট দিয়েছিনু মায়ার আধারে।


মৃত্যুসম যন্ত্রণা নিভে খুশে নিমেষ
শত যাতনা সহে বিরক্তের নেই লেশ,
রক্ত-মাংসে গড়া নয় এ শরীর পাথুরে।


চলতে গিয়ে পিছল পথে পড়েছি বারে বারে
টেনে তুলে নিয়েছে বুকে চুম্বনে চুম্বনে;
মমতার আঁচলে জড়িয়ে সোহাগ ভরে,
এত সুখসুধা কোথা পাই বসুধা নীড়ে!


ব্যর্থতার বেদনায় সান্ত্বনার একক আগারে;
ভুল কর্মে ভয়ে জবুথবু লুকাই তাঁর আঁচলে,
অন্যায়ে কড়া শাসন ক্ষমার অফুরন্ত ভান্ডারে;
পৃষ্ঠে ছড়ির মমতা চিহ্ন দুষ্কর্মের উপহারে।


চাহি আরো এমন চিহ্ন গোটা শরীরে;
তব উপহার লয়ে বইবো চিরদিনে,
পাব কি এ দান কভু মায়া আঁচল হারিয়ে?
নিঃস্বার্থ দান কে দেয় হায়! ভুবন মন্দিরে।


পীড়িতকালে সদা বিনদ্র শিয়রে;
এমন শশ্রূষা মেলে কোন্ দেবলোকে?
বিপত্তির হাটে সবে যেতে পারে ছেড়ে,
শত ক্লেশে আগলে রাখা অপত্যরে।


চেতনার অগ্নিশিখায় বন্দি কারাগারে;
মৃত্যু শয্যয় অপত্য নিখোঁজ খবরে,
মুক্ত হয়ে দ্রুত ফেরা মমতার বুকে
অশ্রু বানে শীতল করে জড়িয়ে ধরে।


স্বর্গ দেখিনি কভু মিলায় পরকালে;
বসুধা স্বর্গ মিলে সব কুটীরে কুটীরে,
স্বর্গের চেয়েও শ্রেষ্ঠ জননী ইহকালে;
মম স্বর্গ হারিয়ে নিশিদিন অশ্রু ঝরে।


—অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন
   রচনাঃ০৮/০৫/২০২০