অন্য রকম ভালোবাসা!


ভালোবাসা দিবস এলে পড়ে মনে
ফুলে ফুলে সিক্ত অন্যরকম আবেগ
চৌদ্দ ফেব্রুয়ারি ঊনিশ'শ বিরাশি
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় স্বৈরশাসক বিতাড়ণে
হল ছেড়ে বেড়িয়ে আসি সতীর্থগণে
কলা ভবন চত্ত্বরে টগবগে সব তরুণ
স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত
কেঁপে ওঠে স্বৈরাচার সিংহাসন।
ছাত্রদের স্রোতধারা ফুঁসে ওঠে উর্মিমালায়
আছড়ে পড়ে রাজধানীর বুকে,
শ্যামল বাংলা মায়ের ভালোবাসার টানে
ভাষার যুদ্ধের ন্যায় আর এক যুদ্ধ!
উথলি ওঠা বান চলে সচিবালয় পানে।
স্বৈরশাসক সেনাদের বাধার মুখে
দোয়েল চত্বরে স্রোত প্রবাহে
ভাঙ্গে স্বৈরাচার ব্যারিকেট।
ভয়ার্ত শাসক জেনারেল
উপায় না পেয়ে চালায় গুলি!
নিমেষে  লুটিয়ে পড়ে জয়নাল!
রক্তক্ত রাজপথ; বহে রক্তস্রোত
চলে মল্লযুদ্ধ ছিনাতে শহিদ লাশ
উজ্জীবিত হই জীবন বাজি রেখে
সবে লড়ে যাই প্রাণপণ।
শহিদ নিথর দেহখানি
নিয়ে যাই কলাভবন
গগন বিদারী স্লোগানে
স্বৈর সিংহাসনে লাগে কাঁপন!
গোটা ক্যাম্পাস ঘিরে ফেলে
স্বৈর সেনা দল।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে
শহিদ লাশ করি বহন
উদ্দেশ্য সূর্যসেন হল
অমর আর এক শহিদ থান।
ছাত্র-জনতা রোষে
ঢাকা উল্টে যায়যায়!
রাতের গভীরে সহস্র  স্বৈরাচার সেনা
ছিনিয়ে নিয়ে যায় শহিদ লাশ
চলে দমন-পীড়ন,
গ্রেফতার হয়ে ঠাঁই সেনা কারাগারে
নির্যাতনে ভেঙে যায় বাঁ হাতের পাঞ্জা
যা এখনো বয়ে চলি
নিস্তার না কেউ পায়।
ছাড়া পেলাম, ভালোবাসার ক্ষত চিহ্ন নিয়ে!
খবর এলো নিঁখোজে মা মৃত্যু শয্যায়
প্রলাপ বকেন অজ্ঞান প্রায়!
নিঁখোজ ছেলের মুখে মা ডাক শুনে
জড়িয়ে ধরে ওঠে কোনোমতে!
সেদিন বুঝলাম মায়ের ভালোবাসা!
নিঃস্বার্থ স্নেহময় নাড়ির টান
এদিন এলে অন্য রকম
এক ভালোবাসা শেখায় আমায়!


—অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন শিকদার
  রচনাঃ১৪ ফেব্রুয়ারি,২০২৪।
  (সড়ক পথে ঢাকার পানে।)