আজ আমি নিঃসঙ্গ,বড়ো অসহায়,প্রাণহীন এক বৃক্ষ।
হৃদয় মাঝে প্রবাহিত সুখ শীতল প্রেম নদী আজ বড়ো রুক্ষ।
শুকনো মন,কেউ চায় না মোর,
ফেটে চুরমার হাড়ে সাজানো সুকোমল বক্ষ।


এসেছিলাম ধার গর্ভে ছোট্ট ক্ষুদ্র এককনা বীজ হয়ে,
মাটির পাঁজরে ছিলাম স্বযত্নে বহুকাল একা রয়ে।
যেমন শিশুবীজ রয় স্নেহমহী মায়ের উদরে,
একা থাকে তবু রয় পরম যত্নে আর অতি আদরে।


কে মহান,দিল মোর জল,বায়ু্‌,ভালোবাসা আর স্নেহের চুম্বন?
এতো আদরে, আসবো ধরায় হয়ে পড়ে চঞ্চল এই পাগল মন।
ছিলাম আমি এক সময়ে একাকী ক্ষুদ্র চারা।
পরম আদরে, নিজের পাঁজরে, রেখেছিল এই ধরা।


চালিয়ে প্রেমের শিকড় হৃদয়ের গভীর থেকে গভীরে।
ভালোবাসার ছিল বিস্তার শরীরের স্রোতে আর পাঁজরে।
এলো যৌবন, আসে অলি, উঁকি দেয় মনের গলি—
এক মনে করে গান,গুন গুন,দিবারাত্রি সারাক্ষণ।


যৌবনের রুপমাখা যুবতী,
আসে যায়, নানা রঙে, নানা ঢঙে-মধূলোভী প্রজাপতি।
আর আসে মধুকর, রঙ ঢালে, প্রেম ঢালে।আলোময় দিবাকর।
বুকে ফুটে উঠল-ধরার স্নেহের নানা ফুল নানা ফল-
আসে মালি বার বার, দেখে শুনে বহুবার, বার বার ঢালে জল,


সাজিয়ে রাখে, নানা সাজে, সাজায় মোর অঙ্গ।
সুবাস ছড়িয়ে পড়ে দিকে দিকে,ছুটে আসে নানা পাখি,কীটপতঙ্গ।
হেসে খেলে,কানে কানে,সুমধুর গানে গানে,
তুলে প্রেম প্রেয়সীর সুর----
বহু ছন্দে,মোর শরীরের রন্ধ্যে,রন্ধ্যে, ভাসে বহুদূর।


আজ অচল,অধম বৃদ্ধ আমি,
খসে পড়ে ত্বকরুপী ছাল সকল আর কেশ রুপী পাতা রাশি।
শুন্য হৃদয় সাগর, কোথায় রাখাল সাথী,প্রাণহীন তার সুরের বাশি।
বয়সের কালে কালে, সময়ের তালে তালে-
এক নিমেশে হয় শূন্য,সজল কৃষ্ণ কালো কেশ অরণ্য।
অচল শিকড় ছিন্ন ধারা ,নাহি পায়, ধরা জল।
করুন বেদনা-তবু কেন মুছি সদা আঁখিজল-?


.........................................................