নদীর ধারে...
একা দাঁড়িয়ে, নারীর চোখে শোক—
তোমার মতোই নদী ছিল প্রবাহমান।
আজ সে কেবল জমে থাকা শীতলতা...
স্রোতহীন, রাজনৈতিক খরায় মৃত।
প্রেম এসেছিল একদিন—
যুদ্ধের ছদ্মবেশে!
দেহে আগুন, চোখে পতাকার স্বপ্ন;
সেই প্রেম আজ...
সভা ঘরের করতালিতে ভেসে গেছে।
পিছনে ফেলে যায় একজন বঞ্চিতা,
যার নাম ইতিহাসে কেবল— 'নির্বাচন'।
বটগাছ জানে—
রাষ্ট্র কেমন ঠান্ডা মুদ্রা!
গণতন্ত্রের মঞ্চে ওঠা অভিনেতাদের
কান্নার সংলাপ চুরি- -
বিক্রি করে খবরের কাগজে।
নারীর গর্ভ থেকে জন্ম নেয় প্রতিবাদ—
তারাও একদিন পেট্রোল বোমা হয়ে ওঠে,
এই নপুংসক রাজনীতির প্রতিকারে।
দেশ কাঁদে...
প্রকৃতি খোঁজে প্রেমিকের ঠোঁটে সবুজতা—
কিন্তু বুলডোজার এসে ছিঁড়ে ফেলে বকুল গন্ধ,
আর বলে— ‘উন্নয়ন চাই—ঘ্রাণ নয়।’
শাসকের চোখে এখন প্রেম মানে নৈরাজ্য,
প্রেমিকার ঠোঁটে সংবিধান মানে অপরাধ।
নির্বাচনের রাতে—
যখন বাতাসও পক্ষ নেয়...
তখন চুপ থাকে পাহাড়,
চুপ থাকে ঈশ্বরও।
নৈরাশ্যের এই সুর কানে বাজে রোজ—
কখনো রেশন লাইনে,
কখনো শূন্য পকেটে,
কখনো শ্রমিকের কাঁধে,
কখনো সন্তানের ক্ষুধায়।
সংসদ কক্ষ এখন নাটকের সেট,
কেউ গলা তোলে না—
শুধু ‘মাননীয়’র অভিনয় চলে।
শহরের বাতি জানে,
কাকে খুন করা যায়,
আর কার বেঁচে থাকা
শুধুই এক স্ট্যাটিস্টিক।
মাঠে নেই কৃষক,
নেই কথার মালা—
আছে শুধু ব্যানার,
আছে শুধু প্রতিশ্রুতির পলিথিন।
না-পাওয়ার ভিতরেই জন্ম নেয়
বেদনার শাশ্বত গান!
সে গান মিশে যায়
কিশোরীর আত্মহত্যার খবরে—
যেখানে ভালোবাসা মানে ‘সময়ের অপচয়’,
এমনই শেখায় মোবাইলের স্ক্রিনে ঘোরা রাষ্ট্র।
তবু একদিন,
দ্রোহ ফিরে আসবে নদীর পাড়ে!
নারীর ঠোঁটে আবার ফুটবে রক্তজবা,
প্রেম তখন আর ভান হবে না—
হবে প্রতিশ্রুতি।