রাতের গভীর ঘুমে যখন শহর নিথর,
একটা ছায়া ধীরে নামে জানালার কাচে—
সে ছায়া কারো না, অথচ সবার
যেমন গ্লানির গন্ধে ভিজে থাকে পুরনো ডায়েরির পাতা।
একটি নিঃশব্দ হাত ছুঁয়ে যায় বাতাসের রন্ধ্র,
তাতে জেগে ওঠে হারানো কণ্ঠস্বর—
যারা কথা বলে না, শুধু প্রতিধ্বনি ছড়ায়
দেয়ালের গায়ে, আয়নার পিঠে,
তারা পোশাক পরে না—তাদের নেই কোনো আবরণ,
তবু তাদের শরীর ভরে থাকে প্রশ্নে।
নগ্নতা কি রক্তমাখা কোনো বিবৃতি?
নাকি নিভৃত আত্মার আর্ত চিৎকার—
যা কেউ শুনতে পায় না, তবুও সবাই অনুভব করে?
যেমন মৃত ফুলের ওপর পড়ে থাকে বেঁচে থাকা শিশির,
তেমনই কিছু অনুভব থেকে যায়
যা স্পর্শ করা যায় না,
তবু পোড়ায়, গলিয়ে দেয়—
অস্তিত্বের ভিতর জমে থাকা বরফ।
আমি হাঁটি, এক অচেনা রাস্তা ধরে,
রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে নগ্নতা—
তার চোখে রোদ, ঠোঁটে অন্ধকার,
সে আমাকে দেখে না,
তবু আমার ভেতর জন্ম নেয় তার প্রতিচ্ছবি।
একটা গাছ, যার পাতাহীন ডালে
ঝুলে আছে কিছু পরিত্যক্ত শরীর—
তারা লজ্জা চেনে না, ভয় পায় না কোনো চোখকে
কারণ তারা জানে,
নগ্নতা লুকিয়ে থাকে পোশাকেই,
আর মুক্তি শুধু উলঙ্গ নিসর্গে।
তাই আমি খুলে ফেলি সকল মুখোশ,
ভাঙি শব্দের প্রাচীর,
আর দাঁড়িয়ে যাই এক আদিম আলোর সামনে—
যেখানে আমি আর তুমি—
একই নগ্নতার দুটি বিপরীত দিক।