গুচ্ছ কবিতা/প্রনব মজুমদার
                    
     (জাদুপুঁটলি)
ছোটবেলায় অনেকবার চড়েছি ধীরগতি গোরুর গাড়ি
বড়বেলায় দ্রুতগতি মোটরগাড়ি
তবুও মাঝেমধ্যে সুযোগ পেলে গোরুর গাড়ি চড়ে বসি
আর অমনি ফিরে আসে আমার শৈশব
পলাশফুলের মুকুটপরা গ্রাম,ফড়িংদের দুষ্টুমি,জোনাকিদের লুকোচুরি
পুকুরজলে শাপলাফুলের নাচানাচি
ডাঙ্গুলি,কাচের গুলি,কলের গান,বাক্স-বায়োস্কোপ ইত্যাদি ইত্যাদি
নেমে পড়তেই সবকিছু হারিয়ে যায় দুরন্ত সময়ের বাঁকে
মনে পড়ে মাস্টারমশাই বলেছিলেন
জীবন একটা জাদুপুঁটলি সবাই হারানো জিনিষ হাতড়ে বেড়ায়
জীবনভর........


                  (ভার্চুয়াল ভার্চুয়াল ভার্চুয়াল)
মুখোমুখি হোস না--শিকড় থেকে উপড়ে দেবো
আমি দুরন্ত ঝড়।
আদুল গায়ে দাঁড়াস না--আগাপাশতলা ভিজিয়ে দেবো
আমি লাজুক বৃষ্টি।
উদাস হয়ে তাকাস না--গলা জড়িয়ে ধরবো
আমি গায়েপড়া চাঁদনী।
ল্যাপটপ বন্ধ করতেই
কোথায় ঝড়? কোথায় বৃষ্টি?
আর কোথায়ই বা চাঁদনী?
যান্ত্রিক যুগে সবকিছুই ভার্চুয়াল
তুমি আমি,আমরা সবাই
এমনকি কবিতাও...


এই আছি এই নেই.........


                    (ব্যাকডেটেড)
(১)
গোধূলির ইশারায় ভুলে
সন্ধ্যা সেজেগুজে এলো সখী হবে বলে
(২)
পরিত্যক্ত সাঁকো নিরূপায়
উড়ালপুলের তুমুল সম্বর্ধনা সভায়
(৩)
ছাদে শাড়ি একাএকা দোলে
সন্ধ্যায় রমণীয় আদুল গা ঢাকবে বলে
(৪)
অন্ধ ধীরে ধীরে হাঁটছে
আর মনে মনে যাবতীয় সৌন্দর্যের ছবি আঁকছে
(৫)
যমই একমাত্র রাজা
বাকি সব প্রজা-বাকি সব প্রজা
(৬)
কবিচিন্তনে গড়ে ওঠে চমত্কার
যাবতীয় সুখীদুখী কবিতার একান্নবর্তী পরিবার
(৭)
'হামি' রা ভারি দুষ্টুমিষ্টি হয়
যাবতীয় সন্তাপ ভুলিয়ে দেয় অবলীলায়


হামি- স্নেহচুম্বন