শৈশব থেকেই স্বভাবে বিদ্রোহী
ফলস্বরূপ অনেককিছু হারিয়েছি।


তখন আমি কিশোর- ভাবলাম
গরীব ঘরে কেন জন্ম হলো,
মন্দিরে গিয়ে ভগবানকে
দু চার ক্থা শুনিয়ে দিলাম।
সমাজে নাস্তিক বলে পরিচিত হলাম
আস্তিকদের সহানুভুতি হারালাম।
ভালো পড়াশোনা করা কেন সম্ভব হবে না
অমুকের ছেলে তমুক পড়ে,
বড় হয়ে এই হবে সেই হবে
        আমি কি হবো ঘন্টা?
মা-বাপকে যা নয় তা বললাম।
সারাজীবনের জন্যে অপত্যস্নেহ হারালাম।


সাদামাটা কেরানী জীবন
জুনিয়ররা তর তর করে এগিয়ে গেলো
আমার অগ্রগতি কেন রুদ্ধ?
বসের সাথে কথা কাটাকাটি করলাম
জীবনের শেষ সুযোগও হারালাম।
সেদিন বাড়ীতে ফিরে,
খুটিনাটি নিয়ে স্ত্রীকে নাজেহাল করলাম
প্রিয় ছেলেমেয়ে দুটোকে অযথা বকলাম।
ওরা অবাক হয়ে আমার দিকে চেয়ে রইলো।
গৃহকর্তার সম্মান হারালাম।


সত্যি কথা বলা যদি বিরোধ হয়
মিথ্যা বলা কি স্তাবকতা নয়?


এক গরীব আত্মীয়া হাসপাতালে মরমর
দুটো কিডনিই খারাপ।
এই প্রথম--
আমি নিজের শরীরের সাথে বিরোধিতা করলাম।
একটা কিডনি আত্মীয়াকে দিতে রাজী হয়ে গেলাম।
সমাজ সংসার আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব এমনকি
মন্দিরের পূজারী বলতে গেলে সারা গ্রামের মানুষ,
আমাকে ধন্য ধন্য করলো।


এই প্রথম কিছু না হারিয়ে আমি
মানুষের হৃদয় জিতে নিলাম।
অলক্ষ্যে কেউ বলে উঠলো--
সত্যি বলো আর মিথ্যে বলো
কার্যত অন্যের জন্যে কিছু করো।
তবেই তুমি বিদ্রোহী হলেও স্মরনীয় হবে।