বাবার কথা মনে হলেই বাবাকে খুঁজি।
প্রতিদিন তন্ন তন্ন করে  খুঁজি বাবা বয়সি সবার মাঝে।
ঘুটঘুটে কালো রাত্রিগুলোতে চুপচাপ কতশত বার যে বাবা কে খুজেছি।
আমি নিজেও জানিনা!
পাগলের মত সেই বয়সী লোকগুলোকে তৃষ্ণাভরে চেয়ে দেখি।
পুরাতন বিল্ডিং দেখলে বাবার কথা মনে হয়।
সবাই হাসছেন ভাই আমার কথা শুনে; হাসার কথাও।
মন বলে এই পথ ধরে হয়তো কখনো কোন কাজে বাবা এসেছিল ঢাকায়।
অথবা বাদশাগঞ্জ, ধরমপাশা, মোহনগঞ্জ বা নেত্রকোনার বিভিন্ন অলিগলিতে গেলেও ভাবি।
এই বিল্ডিংটা নিশ্চিত ছিল, এই রাস্তাটাও!
দিনে দিনে ভয়ানক কিছু ভাবনা ভর করছে আমার মাঝে।
বাবা  হারা দুনিয়াটা এত কস্টের হবে ভাবিনি।
কিছু কিছু অদ্ভুত ভাবনা মনে প্রতিদিন ভর করে।
যা আমার অভ্যাসে পরিনত হতে চলছে।
যা আপনি কল্পনা করলে হাসবেন।
আর হ্যাঁ আমি এতটাই বাবা পাগল।
বাবার মুখে শুনেছি কবিতা পাঠ।
বাবার মুখে শুনেছি গান।
আবার এই বাবাকে দেখেছি মসজিদ ভরা মুসল্লিদের মাঝে বয়ান করতে।
আমি নিজের কানে শুনেছি তেলাওয়াত।
আমি ভাবি বাবাকে জানিয়ে দিতে পারলে ভাল হত।
আমি লিখতেও পারি বাবার মত।
সেই চার বছর আগে উত্তাল সমুদ্রে তিমির রাত্রী কবিতাটি বাবা পড়তেছিলেন।
আমি কাছে বসে  লজ্জা পেয়েছিলাম।
আম্মা শুনেছিলেন কাছে বসেই।
সে দিন আমি বাবাকে খুশি করতে পেরেছিলাম হয়ত।
ভাললাগা ছিল খুব তাতে।
আমি ভাবি বাবাকে আরেকবার ফিরে পেলে খুব ভাল হত।
বাবার সাথে আমার কিছু কথা ছিল।
বলতে পারি নি।
বলতে পারি নি বাবাকে মুখ দিয়ে।
প্রতিদিন মনে হয় বাবাকে, খুজি প্রতিদিন।
বেশি খুজি বাড়ীর পাশে, পথে ঘাটে।
বাবাকে খুঁজে দেখার হাজার চেষ্টা করি বারংবার।
নিজের মাঝে খুজি, চাচাদের মাঝে খুজি, ভাইয়ের মাঝেও খুজি।
বাবাকে খুঁজি বাড়ীর পাশের পুরাতন গাছগুলিতেও
আমার বাবা ছিল যখন, এই গাছটাও ছিল নিশ্চিত।
আমার বাবা যে কতশত বার এই গাছটার পাশ দিয়ে হেঁটেছে
বাবা নিজেও হয়তো জানতো না।
এইতো কদিন আগেই বাবাকে নিয়ে এই পথ ধরেই বাদশাগঞ্জ বাজারে গিয়েছিলাম।
এই অবহেলিত খালটাও ছিল বাড়ীর পাশেই।
আজ যখন বাবাকে হারিয়ে আমি একা
গ্রামে এলে যে কোন অজুহাতে এই পুরাতন গাছ, খাল বিল, রাস্তাগুলোর পাশে নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি।
বাবার গন্ধ পাই, বাবাকে খুঁজি পাই। (চলবে............।।)