"বাংলা কবিতার আসর" নামক পরিবারে কয়েক হাজার কবির বসত। সবাই আপন যোগ্যতায় লিখে যাচ্ছেন একের পর এক কাব্য আর তা পাঠ করে কাব্যসুধা পানের সুখ উপভোগ করছেন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাঙলা ভাষাভাষির অগণিত পাঠক। যে কোনোদিন কবিতা কি জানতো না, কবিতা লেখার কথা স্বপ্নের মধ্যেও স্বপ্ন দেখার স্পর্ধা দেখানোর সাহস করতো না, সেও এই আসরের অলিগলিতে ঘুরতে ঘুরতে এক সময় নাম লিখিয়ে ফেলে কবিদের দলে। কেউ কেউ নাম লিখিয়ে দুর্দান্ত গতিতে কাব্যসাগরে কাব্যবোঝাই জাহাজ নিয়ে ছুটতে থাকে, আবার কেউ ডিঙ্গি নৌকায় ভর করে সাগরের তীরঘেষা ঢেউয়ের সাথে তাল মেলায় আপনমনে!


মোদ্দা কথা বাংলা কবিতার আসর এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে মেধাবী অমেধাবী সবাই খুব স্বাচ্ছন্দ্যে সহঅবস্থান করতে পারে। অগ্রগামী মেধাবী কবিগণ অনুগামীদের আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করায় এবং তাদের চলার পথকে সহজ করার আন্তরিক প্রয়াস নেয়ায় অমেধাবীরাও একসময় আপন মহিমায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।


বাংলা কবিতার আসরের অগ্রগামী মেধাবী কবিগণের একজন কবি ফারহাত আহমেদ। ০৩-১০-২০২০ খ্রিঃ তে এই আসরে প্রকাশিত হয় তার ১৫০০তম কবিতা। আসরের নিয়মিত কবিগণের মধ্যেও তিনি অন্যতম। আসরের পাতা খুললেই অন্যান্য কবিগণের সাথে কবি ফারহাত আহমেদ এর কবিতা পাঠককূল নিয়মিত উপহার পান। ছোট্ট পরিসরে সারগর্ভ বিষয়ের কবিতায় প্রতিনিয়ত মুগ্ধ হন তার বহু পাঠক। সিদ্ধহস্তে সুনিপূণ দক্ষতায় লেখা কবিতার বদৌলতে তার এক বিশাল ভক্তকূল তৈরী হয়েছে সময়ের পরিক্রমায়।


প্রচারবিমুখ এই কবির নীরবে নিভৃতে ১৫০০তম কবিতা প্রকাশের দিনেই তার ভক্তদের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সবার সাথে আসরের দু চারজন কবিসহ আমারও সৌভাগ্য হয়েছিল সেখানে উপস্থিত থাকার। ভক্তগণের পক্ষ হতে উপহার হিসেবে কবির নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে কবি জাহিদ হোসেন রঞ্জু এর লেখা কবিতাসম্বলিত কবির পোট্রেট এর আইডিয়াটি ছিল অসাধারণ! কবির তরফ থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এর জন্মদিন উপলক্ষে তার রচিত “দাবায়ে রাখতে পারবা না” উপহার হিসেবে সবার জন্যে ছিল বিশেষ প্রাপ্তি। এমন একজন মেধাবী কবিকে নিজেদের মাঝে পেয়ে উপস্থিত তার গুনমুগ্ধ ভক্তরা ছিলেন আবেগাপ্লুত। কবি নায়ার সুলতানা লাবণী নিজ হাতে গড়া অলঙ্কার উপহার নিয়ে আসেন কবিপত্নীর জন্যে। কবি সাদরে তা গ্রহণ করেন। তারপর কবিতা নিয়ে সবার আন্তরিক আলাপচারিতা আর আপ্যায়নের মধ্যে দিয়ে কেটে যায় পুরো দু ঘন্টা সময়। করোনা আতঙ্কে জবুথবু ঘরবন্দী সময় কাটানো অস্বস্তিকর সময়ের মধ্যে কবি ফারহাত আহমেদ এর ১৫০০তম কবিতাকে ঘিরে তৈরী হয়েছিল মুক্ত বাতাসে বুক ভরে শ্বাস নেয়ার এক নৈস্বর্গিক পরিবেশ। কবি হুমায়ূন কবীর গাজীপুর থেকে এসে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে প্রমাণ করে দিলেন করোনার চাইতে অনেক বেশি শক্তিশালী আমাদের আত্মিক বন্ধনের ভিত।


বাঙলা কবিতার আসরের প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।এই আসরের কারণেই আজ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থেকেও শুধুমাত্র কবিতাকে ভালবেসে কিছু মানুষ ভালবাসার বন্ধনে একে অপরকে জড়িয়ে রেখেছে। জয় হোক বাংলা কবিতার আসরের, জয় হোক আসরের সকল কবিগণের।


আন্তরিক অভিনন্দন কবি ফারহাত আহমেদকে তার ১৫০০তম কবিতা প্রকাশ উপলক্ষে এবং কৃতজ্ঞ ভয়কে জয় করে ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও এমন এক আনন্দঘন পরিবেশ উপহার দেয়ার জন্যে।