কবি- কিরে চামচা আছিস কেমন?


চামচা (ভ্রু কুচকে)- চামচা! কবি, আমি তোমার ভক্ত,
                          ভালবেসে দিতে পারি ঢেলে সব রক্ত।


কবি (অবজ্ঞা ভরে)- তাই নাকি তুই আমার ভক্ত!
                           ভক্তের মানে বুঝিস?
                           জানিস তা কত শক্ত?


চামচা- কবি মূর্খ আমি মানি
           অতসব কি জানি?


কবি- যখন বুঝিস মূর্খ
       তবে কেন করিস তর্ক?


চামচা (জিভ কেটে)- হবে না আর ভূল
                           নড়বো না এক চুল,
                           সুযোগ পেলেও ফোটাবো না
                           কথার কোন হুল।


কবি-বল তবে আছিস কেমন?


চামচা- ভাল নেই কবি, যায় কেটে দিন যেমন তেমন।


কবি- ভাল না থাকার কি কারণ?


চামচা- কবি, তা যে বলতে বারণ।


কবি- বল কোন ভয় নাই,
       আমিতো আছি।


চামচা-  ঠিক বলেছেন কবি
          তবু যেন মনে হয়
          উড়ছে কোথাও মাছি।


কবি- মাছি নয়, বল তোর কথা৷


চামচা- কি আর বলবো কবি?
          হৃদয়ে বড় ব্যাথা৷


কবি- হৃদয়ে ব্যাথা কেন?
       করিস না গোপন যেন৷


চামচা-  এই চামচার তরে কবি, দ্বার করেছো বন্ধ,
           তাইনা দেখে চামচা তোমার হয়ে গেছে অন্ধ৷


কবি (ধমকে)-  বেশ করেছি, বন্ধ করেছি দ্বার
                   কপাট নাহি খুলবে কভু আর৷


চামচা (কাচুমাচু হয়ে)- অপরাধ মোর কবি?
                             দেখেছি তোমার ছবি?


কবি (রাগান্বিত হয়ে)- ছবি দেখে তোর দুষ্টুমী ভরা মন্তব্যে
                            পৌছেঁ গেছি আমি এই গন্তব্যে,
                            চামচা তোর মতো, আছে ভবে যত
                            করবো সব সাফ, নাই কোন তোর মাফ৷


চামচা (হাত জোড় করে) - কবি একটাই প্রার্থনা,
                                   এবারের মতো করো মার্জনা৷


কবি (উচ্চস্বরে) - মার্জনা! এতই সহজ? দেখ তোর কি করি।


চামচা (ভীত হয়ে)- ও কবি আমি "সরি", সত্যি আমি "সরি"।


কবি (ধমকে)- চুপ কর চামচা, "সরি" বলবি না আর,
                  শুনলেই মনে হয় করি ক্রসফায়ার।


চামচা (পড়িমরি করে) - থামো কবি থামো, বন্দুক করো না তাক
                               অপরাধের লাগি আমি খত দিচ্ছি নাক।


কবি (পরিতৃপ্তির হাসি হেসে)- ঠাট্টা করিস নিয়ে হাসি,
                                     পড়বে তোর গলায় ফাঁসি।
                                     এখন তুই কি করবি? নির্ঘাত মরবি।


চামচা (দৃঢ় কণ্ঠে) -    শোন কবি বলি,
                           মরণে নাই ভয়,
                           যদি আমি করতে পারি
                           তোমার হৃদয় জয়।


কবি (বিরক্ত)-  চাস কি তুই বলতে?


চামচা (হেসে)- যদি দিতে তোমার সাথে একটু পথ চলতে।


কবি (হাল ছেড়ে)- আমার সাথে পথ চলবি? পারবি তাল মেলাতে?


চামচা (গদগদ হয়ে)- সাথে নয় কবি, অনুসরণ করবো তোমায়
                           চাই যে কিছু ফলাতে।


কবি- এত অপমান, এত লাঞ্ছনা, তারপরো কেন সইছিস গঞ্জনা?


চামচা- থাক না কবি সে কথা, খুঁজিতে চাই শুধু জীবনের বন্দনা।


কবি- আমায় কি তুই ভালবাসিস, সত্যি করে বল?


চামচা (মাথা নীচু করে)- তোমায় আমি ভালবাসি,
                                 নেইকো কোন ছল।


কবি- শোন চামচা, তুই অতি নগণ্য,
        পাবি না তেমন কিছুই,
        পেলেও পেতে পারিস দয়া
         তাও অতি  সামান্য।


চামচা (হাত কচলে)- হোক না দয়া সামান্য,
                            কবি তাতেই আমি ধন্য।


কবি (আশীর্বাদের ছলে) - তবে থাক পায়ে পড়ে,
                                  যদি কভু পড়ে মনে
                                কোথাকার কোন এক  চামচা,
                                চেয়ে আছে মোর পথ পানে
                                ফেলছে আশু নিভৃতে,
                                একটু আলোর পরশ পেতে।
                                হয়তো সেদিন করলেও
                                করতে পারি ক্ষমা,
                                সেই আশাটাই রেখে দে না
                                তোর ঝুলিতে জমা।


চামচা (দু হাত বাড়িয়ে)-
                        বসিলাম তবে তোমার দ্বারে এই আমি হাত পেতে
                        ক্ষমা নিয়েই উঠবো তবে অচিন দেশের রথে।