মনে পড়ে সখি, সেদিনের সেই প্রথম দেখা,
নির্জন দুপুর, কলেজ চত্বর, তুমি আমি একা!
কমলা শাড়ি, খোলা চুল, আর কাজল কালো চোখে,
কখন যে তোমার ছবি, আনমনে এঁকে নিলাম আমার এই বুকে।
তা আমি আজও বুঝে উঠতে পারিনি ।
তবে কি তুমি বলবে সময় থমকে গেছে ?
নাকি স্রোতের টান তোমার রূপে মুগ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ?
না সখি না! সময় আর স্রোত যে থেমে থাকার নয়, তা আমি বেশ বুঝি,
তবে কেন যে, হাজার একাকীত্বের মাঝেও তোমাকে বারবার খুঁজি,
তা আমার কাছে আজও অজানা !
এরপর মনে পড়ে, একবার বকুলতার মাঠে,
যখন সকালের সোনা রোদ, বিবর্ণ হয়ে বসেছিল পাটে,
যখন শুভ্র ধবল বকগুলি, এক পেট সন্ধ্যা নিয়ে,
রাখালের পালে পালে পা মিলিয়ে,
ফেরারি হয়ে উঠেছিল, তখন আমাদের দ্বিতীয়বার দেখা !
এক অসহায় বৃদ্ধ মাকে, যখন পরম স্নেহে বুকে জড়িয়ে নিলে,
হাঁটি-হাঁটি পা-পা করে হাত ধরে, যখন রাস্তা পার করে দিলে,
ইচ্ছে ছিলো তখনই, বিপ্লবীর মতো সম্মুখে ছুটে গিয়ে,
শুধু একটিবার তোমাকে বাহুডোরে জড়িয়ে নিয়ে,
হাজার শতাব্দীর জমানো কথাগুলো এক নিমেষে বলে ফেলি।
কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও, নিজেকে সেদিন বিপ্লবী করে তুলতে পারিনি,
ভালোবাসার কথা শুনে যদি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে কেঁপে উঠে ধরনী,
তাই চাতকের মতো তৃষ্ণা নিয়ে আজও আছি বর্ষার অপেক্ষায়,
কতো প্রহর, কতো দিবস, কতো রজনী কাটাচ্ছি শুধু তোমার প্রতীক্ষায়।
যদি পারো বৃষ্টি হয়ে নেমে এসে, বিঘ্ন ঘটাও এই প্রতীক্ষার !