জবা ছিলো বাগান কোনে
পায়ের গোছে কমলি লিলি
সকাল হতেই শুনতে পেলাম
"আমায় আবার মাড়িয়ে দিলি?"
জবার কিছু কম চোপা নয়
দাপুটে সে একশো ফুলে
পাল্লা দিয়ে সুর চড়ালো
"এসব বলিস কি আক্কেলে?
আমি কিনা সোহাগ বশে
কানের পাশটা চুলকে দিলাম
ঠাট্টা নেহাত বুঝলিনা তাও
পেরেম দিতেই এয়েছিলাম।"
শেষ কথাটি ফিসফিসিয়ে
তাও শুনলো বুদ্ধ যুঁই
দৃষ্টি তো তার সারাক্ষণই
অপরাজিতার চরণ ছুঁই।
একটু দূরেই সাদা গোলাপ
পড়শি থোকা টগরটায়
সন্ধ্যে হলেই ডাকতে থাকে
কেউ ঘরে নেই, এবার আয়।
মিলি,বেলি,রঙ্গনেরা
সবাই বলে কানেকানে
পরকীয়া একেই বলে
কেষ্টা বেটা সবটা জানে।
করবীটার বামপাশেতে
দামাল ঝোপের মাধবীলতা
নীলরঙা এক টুনি পাখি
বুনছে বাসায় প্রেমবারতা।
টগর আছে ঘরোয়াসুলভ
শিউলিতলায় প্রশ্রয়ে
সময় সুযোগ পেলেই দোলে
গন্ধরাজের বুক ছুঁয়ে।
মাটির টবে ঠিকানা যাদের
শিকড় ছোটো, অস্হায়ী
তারাও কিন্তু সময়মতো
ফুল ফোটাতে উৎসাহী।
এলামণ্ডা,জারবেরাকে
বাড়িয়ে ধরে চুমুর গাল
শান্তস্বরে বলতে থাকে
"টবটা কিন্তু সরবে কাল।"
লালগোলাপও শুনতে পেলো
কথাশেষের খানিক ভাগ
গোমড়ামুখো ওডোনিয়াম
যার ওপরে ঝাড়লো রাগ।
সেদিন যখন হ্যালুসিনিয়া
ঝড়ের রাতে উপুড় হয়
মল্লিকা আর ওডোনিয়াম
যা রটালো বলার নয়।
জল দিচ্ছি সকাল বিকাল
জলো কথার টানছি খেই
আমার বাগান ঘুরতে এলে
দেখতে পাবে এদেরকেই।