তখন সূর্য সবে পশ্চিমের কোলে ঢলেছে
বাতাসে শীত ও উষ্ণতার কোলাকুলি
মনের মগডালে রোমাঞ্চের স্রোত
খোলা কেশে পাশে বসে এক মুঠো হাসি ছিটিয়ে বলেছিলে,কার অপেক্ষায় আছেন?
বলেছিলাম অপেক্ষা!ঘোড়ার আবার ডিম
তাতে তা ?
তুমি আড় আঁখিই গোলাপী আবেশে বললে,অপেক্ষায় আছে আপনার ;আপনার বলার অপেক্ষায়।
তপ্ত ভ্যাপসা গরমের আঙিনায় এক ফালি মেঘের সঞ্চরণ
শিরায় উপশিরায় উটকো রোমাঞ্চে দিকভ্রান্ত হয়ে বললাম কে সে ?
নিকষ কালো মেঘের গহন থেকে উঁকি দিল এক চিলতে রূপালী ঢেউ
আমি আর কিছুই বলতে পারলামনা
হাতে আছে হাত নই হাত বাড়ালেও পাই নাই।
তারপর একরাশ নিস্তব্ধতার মাঝে লোলুপ আঁখির ঝিলিক।


সময়ের স্রোতে দেখা হয় বাতাস বয়ে চলে
গাছের পাতায় দোলা লাগে না
কতবার বাতাসের তানে নাচতে শুরু করেছি
ছন্দপতন হয়ে বারবার ঝরে পড়েছি।


মালবিকা তুমি কেন বলেছিলে?
দেখেতে চেয়েছিলে আমার পাকস্থলীর আর্তনাদের সুর?
নাকি আমার হৃদয়ের নগ্নতা দেখতে চেয়েছিলে ?


আমি নগ্ন তোমার প্রেমের নীল কমলে
আমি উদভ্রান্ত তোমার চুম্বনে ঝরে পড়া কুয়াশায়
আমি দিকভ্রান্ত বিশ্বাসের গর্ভে  আবছা মৃত হাসিতে
তুমি কি ভেবেছিলে ফড়িংয়ের মত ফুলে ফুলে সাঁতার চর্চার আসর জমাই আমি?
তুমি টোপ গিলিয়ে দেখতে চেয়েছিলে আমার পিলের পিঁপড়ে কেমন পিল পিল করে ?


না মালবিকা আমি তা চাইনি
আমি দীঘির আয়নায় তোমার অবয়ব দেখেছি
দেখেছি নীল পদ্মের উপরে তোমার সুশোভিত অন্তঃকরণ
আমার চোখের তারায় এঁকেছিলাম তোমার আলেখ্য।


তুমি ভুল বুঝেছিলে
আমার হৃদয়ের ভ্রমরাকে তুমি হিংস্র সিংহের সাথে তুলনা করেছিলে,
তোমার জুনিয়রদের কাছে বলেছিলে
ওর চরিত্রের কলিজায় কলঙ্কের জমাটি ভোজ।


আজ পনের বছর পরেও তোমার অপেক্ষায় আছি
জানো মালবিকা আমি সব সহ্য করে
তোমার বুলেটে ক্ষত বিক্ষত হৃদয় নিয়েই  রয়েছি
শুধু মনের সেই লাল দগদগে দাগটাই একটু মলমের প্রলেপের জন্য।
পাপড়ি ঝরা গোলাপের ডাঁটির মত একাকী দাঁড়িয়ে আছি মালবিকা
শুধু একটি বসন্তের অপেক্ষায়।