কেমন আছিস সোনা ?
আমি তোর বাবার সেই বাঁশ মাটিতে ঘেরা
অনাবিল আশ্রয়স্থলে ফিরলাম রে
জানি তুই জানলেই কষ্ট পাবি
তোর ঝকঝকে বাড়ির কার্নিশে  একটুকরো জীর্ণ খড়কুটো হয়ে থাকতে চাযইনা-রে  
তাই তুই কলকাতা গেছিস
আমি তো তখনই... ।


তোর অবস্থা বুঝেছি রে বাবা
নিত্যনতুন আমাকে নিয়ে তোর হয়রান ভালো সাবান লুকিয়ে রাখলে-
তোর হৃদয়ের কম্পন অনুভব করেছিরে সোনা
সেদিন একটি ভালো সাবান চুপি চুপি আমার হাতে দিয়ে বললি,
ফুরিয়ে গেলেই আবার দেব
জানিস বাবা আমি সেটি যত্ন করে রেখে দিয়েছি
দেখলে আবার কত কথায় না তোকে শুনতে হবে,
হয়তো তোর একমুঠো শান্তি করে খাওয়াই হবে না l


আমার উপরে যাওয়া বারণ
তুই যেদিন জানতে পেরে গর্জে উঠলি,
সেদিন রাতে আর তোর পেটে অন্ন গেলনা
তুই ভাবলি আমি ঘুমিয়ে পড়েছি?
আমি লুকিয়ে শুনিছি ;চোখ মুছেচি
তোর খালি পেটের যন্ত্রণায় আমারও ঘুম হয়নি রে
আমি তো বালিশ টা ভিজিয়ে
আবার চিন্তা যদি বলে আমি ......
যাক বাবা রাতেই শুকিয়ে নিয়েছিলাম
লেপের ভিতরে ঢুকে,পাখা চালিয়ে।


আমার প্রকোষ্ঠে তুই আসলে-
আমার রজনী জীবনে জোনাকির কিলবিল
আর এটি সহ্য হত না একালের ঝকঝকে আধুনিকার
বুনো ওলের গলাধকরনের মত দিনটায় কুটকুটে করে দিত
বাবু এত টুকু ছেলে!
ঠাকুমা বলে ডাকলেই আমার জমিনে সবুজের আবেশ
তবে কি জানিস নকল ঝগড়া করে
সরিয়ে দিই প্রাণের বাবুকে  
না হলে যে আবার খাবার আগে তাকে ঝাল খেতে হয় রে।


তুই ঘরে ফিরেই আমার খাবার খবর নিলে
হালুম করে ঝাঁপিয়ে পড়ে বলতো,
কোন সকালে হাত-পেট নিয়ে চলে গেছিস  
বাড়িতে যে বৌ-বাচ্চা রেখে গেছিস তার খবর রাখিস ?


জানিস বাবা আমি এখানে বেশ আছি
তুই ভাবিস না
তুই যেদিন ফিরবি,আসবি আমার বুকে
নিজের হাতে চচ্চড়ি করে দেব ,
খেটে শাকের ঝোল বানাবো
তোর ছোট বেলার সেই যে খাবারগুলো যেগুলো দেখে আমার ভাঙা ঘরে চাঁদের আলো দেখা যেত
সেগুলোই বানিয়ে দেব
আমার আঁচলে তুই কমল বদনটা মুছে নিবি,সেই ছোটটির মত।
তুই যে আজও আমার সেই খোকনই আছিসরে
তুই আসবি আমি আরও একবার জোছনা ভরা উঠানে স্নাত হব।