কি করে তোমাকে ছাড়ি
আল আমিন চৌধুরী স্বপন


তোমাকে ছাড়লে তো আমাকে মরতে হবে। তাই আমি ছাড়তে পারবো না তোমাকে। তোমার ভাল-মন্দ, সুখ-শান্তি, সকল দু:খ-কষ্ট একাকার হয়ে আছে এই আমার সাথে। তুমি তো আমাকে স্পর্শ করেছ, স্বযতনে লালন করেছ আমাকে। ঢাকার ফাষ্টফুডের দোকানগুলির কাচের দোরজায় এখনও তোমার হাতের ছাপগুলি চোখের সামনে দেখছি। রমনা পার্কের আড়া আড়ি পথটা দিয়ে স্বপ্নের মধ্যে আমি প্রায়ই হেটে বেড়াই। বটতলায় পরে থাকা বট পায়ে পায়ে মাড়িয়ে এখনও চলছি আর কচ কচ শব্দ শুনছি। একটি গোলাপের গন্ধ নিতে কতবার গিয়েছি শাহাবাগের মোড়ে, সামনে জাতীয় যাদুঘরটি আমাকে যাদু করে রেখেছে। অপর দিকে কহিনূর কনফেকশনারীর কলিজীর শিংগারা তেতুলের চাটনি দিয়ে খেয়ে খেয়ে সময় পার করেছি কতবার! চল্লিশ বছর পর আজও সেই স্বাদ মিটেনি মন থেকে। বাংলা একাডেমির পথ দিয়ে যেতে যেতে হয়রান হয়ে দোয়েল চত্বরে যেতে না যেতে বুকের ভিতর শিশ দিয়ে যায় শৈশব। হাইকোর্ট মাজারের কচকচা পান মুখে দিয়ে আত্ম উপলব্ধির শুদ্ধ নি:শ্বাস নিয়ে বেচে আছি এখনো। পুরান ঢাকার বাকরখানি আর মিষ্টিশিরার মজাদার স্বাদ আমার ঐতিয্যের অনুভূতি জাগিয়ে তুলেছে। কি করে ছাড়ি তোমাকে! জান-জট, হাজার মানুষের গেজাগেজি, রিক্সায়, বাসে ঝুলে ঝুলে চলবো, মরতে হয় মরবো, ঢাকা মেডিকেলের ইমার্জেন্সিতে গিয়ে মরবো। তারপরও তোমাকে ছাড়বো না।
© ২২/০৯/২০১৬