একদা অপরাহ্নে মুসাফির দুইজন।
রুটি খেতে বসে এসে করে আলাপন।
প্রথম জনের কাছে পাঁচ রুটি ছিল,
দ্বিতীয় জনের কাছে  তিন রুটি ছিল।
দু"জনেই মিলে বলে চলে এসো ভাই,
মোদের যা রুটি আছে হেথা বসে খাই।
চকিতে পথিক এক এলো সেখানেতে,
বলে ভাই কৃপা করে দিবে মোরে খেতে?
মোর কাছে টাকা আছে খাবার না পাই,
ক্ষুধায় কাতর আমি তাইতো সুধাই?
দিলে মোরে খেতে ভাই তোমাদের সাথে,
বিনিময়ে দিব টাকা তোমাদের হাতে।
পথিকের কথা শুনে ওরা খুশি হলো
তিনজনে সমভাগে রুটি খেয়ে নিল।
বিদায় কালে পথিক আট টাকা দিলে,
বলে যায় খুশি হব ভাগ করে নিলে।
টাকা পেয়ে দু"জনেই পুলকিত মনে,
বলে এসো ভাগ করি আমরা দু"জনে।
প্রথম মুসাফির বলে শোন দিয়ে মন,
মোদের খাবার খেয়ে পথিক সুজন,
আট টাকা দিয়ে গেল আমাদের হাতে,
সেই টাকা ভাগ হবে রুটি অনুপাতে।
মোর কাছে ছিল ভাই রুটি পাঁচখানা,
আমি নিব পাঁচ টাকা শোনবনা মানা।
তোমার কাছে রুটি ছিল তিনটি,
তুমি পাবে বিনিময়ে টাকা তিনটি!
দ্বিতীয় মুসাফির বলে রুষ্ট বচনে,
অন্যায় বিচার আমি মানিব কেমনে?
তিন জনে খেলাম যদি সমান সমান,
বিনিময়ে ভাগ নিব সমান সমান!
ভাগ নিয়ে ঝগড়া শুরু দু"জনাতে,
দু"জনেই দু"জনার অবিচল মতে,
সহসা সেথায় এক এলো সু পুরুষ।
দু"জনেই দেখে তারে ফিরে পেল হুশ।
স্ববিস্তারে শুনে তিনি দিলেন এই রায়,
রুটি যার তিনটি সে এক টাকা পায়।
অপর জনার রুটি ছিল পাঁচটি,
বিনিময়ে পাবে সে টাকা সাতটি!
রায় শুনে দু'জনেই পড়ে ভাবনায়,
আনমনে দু'জনেই ভ্যাবাচেকা খায়।
দ্বিতীয় মুসাফির দাঁত করে কিটমিট,
বলে ভাই আপনার মাথা আছে ঠিক?
তিন টাকা দিতে চায় তিন রুটি তরে,
সেইখানে একটাকা কি করেযে বলে!
আপনাকে দেখেতো মনে হয়েছিল,
মহান পন্ডিত বুঝি এইখানে এলো?
প্রথম মুসাফির বলে সু পুরুষ ভাই,
যে রায় দিলেন মোদের কিছু বুঝিনাই?
বিচার যদি ন্যায় হয়ে থাকে তবে,
মোদের বুঝিয়ে দিন সঠিক ভাবে?
সু পুরুষ বলে শোন মনোযোগ দিয়ে,
সঠিক বিচার এই তোমাদের নিয়ে।
তিনজনে সমভাগে আট রুটি খেলে,
তিন আটে চব্বিশ টুকরো তিনজনে পেলে।
রুটি যার পাঁচটি সে পনের টুকরো পেল,
আট টুকরো খেয়ে নিলে সাত রয়ে গেল!
রুটি যার তিনটি সে নয় টুকরো পেল
আট টুকরো খেয়ে নিলে এক রয়ে গেল।
পথিক সুজন যেথা দিল টাকা আটটি,
প্রথম মুসাফির সেথা পাবে টাকা সাতটি।
দ্বিতীয় মুসাফির পাবে এক টাকা করে,
বিচার সঠিক কিনা দেখো হিসাব কষে?
মুসাফির দু'জনেই খুশি মনে ভাবে,
এমন মহান জ্ঞানী কে তিনি তবে?
দু'জনেই শ্রদ্ধাভরে বলে ওহে ভাই,
আপনার পরিচয় মোরা জানতে চাই?
সু পুরুষ চলে যায় ভেঙ্গে আঁধারী,
যাবার কালে বলে মোর নাম আলী!
পেয়ে পরিচয় ওরা চমকিয়া উঠে,
জ্ঞানের বিশালতায় যোগ্য তিনি বটে।
তাইতো রাসুল পাক ঘোষনা”যে  দিল,
আলীকে মানিল যে সে আমাকেই মানিল।
আমি যার মওলা আলী মাওলা তার,
মুসকিলে ডাকিলে তারে করিবে উদ্ধার,
আমি যে জ্ঞানের শহর আলী হল দ্বার।