বুকের দু'পাশে ...
বারো জোড়া হাড় ,
স্পষ্ট দেখা যায় ।
খুব সহজেই গুণে নিতে পারো ,
খুব সহজেই গোণা যায় ।
মূর্খ হলেও ,
ভুল হবে না গোণায় ।  
আচ্ছা ,
কঙ্কালকেউ কি
এমন বীভৎস দেখায় !
ওর ও কি ক্ষুধা পায় !
না জানি কতো কাল ,
আমার পাকস্থলী ঘুমায় ।  
তুমি জানো !  
মাঝে মাঝে খুব ব্যথা হয় ...
অসহনীয় জ্বালা হয় ,
মরে যাওয়ায় ভালো মনে হয় ।  
কিন্তু পারিনা ,
সুন্দর এই ধরণী ছেড়ে কি যাওয়া যায় !  
কেউ কি যেতে চায় !
থাকনা ক্ষুধায় তো মেটে না ,  
তবুও ধরণীর সৌন্দর্য্যে মনতো ভরে ...  
সেটাই কি বেশি না !
অসুন্দর বলতে আমি আর ক্ষুধায় রয়েছি এই ধরায় ।  
তুমি জানো !
কালে রাতে বাসমতীর ঘ্রাণে ...  
আমার ঘরটা ভরে গিয়েছিলো ,
আমি ঘুমিয়েছিলাম ,
ঘুমটাও ভেঙ্গে গেলো ।  
চোখের তন্দ্রা কাটিয়ে ...
জানালার পাশে গিয়ে ,
মন ভরে ঘ্রাণ নিলাম ।
তারপর জানালা খুলতেই ,
উঁচু দালানের জানালার আলোয় ...  
আমার ঘর ভরে গেলো ।
হঠাৎ করে চোখ দুটো ...  
জানালার বাইরে নিয়ে দেখলাম ,
উঁচু দালানের জানালা দিয়ে ...
ওরা কি সব ফেলছে যেনো ।
আমি দরজা খুলে বাহিরে বের হলাম খোঁজ নিতে ,
দেখি ওরা ঝুটো করা খাবার ফেলেছে ।
রাস্তার কুকুরগুলো খাচ্ছে ...
আমার পাকস্থলীও জেগে উঠেছে ,  
হাত বাড়িয়ে ভাগ বসালাম তাতে ।
বেশ খেলাম ,  
পেট পুড়ে ।
পেটো ভরেছে  ,  
মনো মোজেছে ।
পথ ফিরছি বাড়ির দিকে ...  
আর ভাবছি ,
আচ্ছা !
ওরা এমন কেনো !
খাবারগুলো কুকুরকে দিলো ,
অথচ আমাকে দিলো না !  
আমাকে ডাকতো ,
আমাকে বলতো ,
আমাকে দিতো ।
আমার পেট ভরলে কি ওদের পেট ভরতো না !
ক্ষুধার আর্তনাদে কতো কাঁদি ,
কতো বলি -
"ভাত দে ,ভাত দে না ,
একমুঠো দে ভাত , দে না ,
আর কিছু চাই না । "
আমার আর্তনাদ কি ওদের কান অব্দি যাই না !
ওরা কি মানুষ !
ওরা কি শোনে না !
ওরা কি দেখে না !  
ওদের কি ক্ষুধা পায় না !
ওরাও তো মানুষ ...
ওরাও তো শোনে ...
ওরাও তো দেখে ...
ওদেরও তো ক্ষুধা পায় ,  
ক্ষুধা নিবারণ না করতে পারার যন্ত্রণা কি সেটাও তো ওরা বোঝে ।  
তারপরও ওরা এমন করে হায় !  
ওরা কি আসলেই মানুষ !
নাকি মানুষের মুখোশ পড়ে ,
মানুষ হবার অভিনয় করে যায় ।