সময়টা ১৯৪৭ চারিদিকে থমথম ঝমঝমে
সকলের মুখে-মুখে শোনা যায় বাণী,
     কতো কোলাহল কতো গুঞ্জন;
    বহুকালের লাঞ্ছনা গুচিবে আজি,
প্রতীক্ষা শেষ হলো তার, দু'খন্ডও হলো।  


প্রত্যাশা পূরণ হলো না,
পূর্ব বাংলা রয়েই গেলো পাকিস্তানের মধ্যে,
তবুও খুজিঁতে ছিলো আলো পূর্ব বাংলার জনতা,
সে আশাও ভুল;
  মহা চক্রান্ত !


গগনে ধূসর অন্ধকারের ছায়া,
শুধু দেখা যায় শকুনের প্রতিছায়া ,
   হচ্ছে লুটপাট হচ্ছে গুম।
কালি করিয়া নিচ্ছে কারিয়া,
হাঁকিয়া ডাকিয়া নিচ্ছে বাধিয়া,
আরও নিতে চায় মুখেরই বুলি সে যে বায়ান্নের দিনগুলি —


আন্দোলন! আন্দোলন!!
মাতৃ ভাষার বুলি দিবনা নিতে কাড়ি,
ভাষার তরে করেছি পণ যায়- যাক কাটা শির;
করিবো স্লোগান  রাখিব আজি,স্বীয় ভাষার দাবি—


‘‘ রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই ‚,


নরপিচাশের দল থামেনি থেকে,
বর্ষণ করেছে গুলি ছাত্রদের বুকে,
শূন্য করিয়াছে কত নিজ মাতৃ কোল,
হয়েছে শহিদ কত সালাম ও বরকত।


নিস্তব্ধ থাকিবো না কভু হবে জয়,
সিংহের মতো গর্জে উঠিব হবেনা পরাজয়;
সময়টা ১৯৫৪ সাধারণ নির্বাচন হইলো,
যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠন করিলো।
জালিমের দল ভেঙে দিলো ভয়ে —  


শুরু হইলো রাষ্ট্রপতি শাসন;
নির্বাচন আসিলে ভয়ে করে বানচাল,
সুযোগ নেয় কাড়ি দুষ্ট কত-চারি সামরিক শাসন করেছে গঠন।

বাঙালি সিংহের জাতি;
সময়টা ১৯৬২ সামরিক শাসন তুলে নেওয়া হলে
    আন্দোলন চলে দলে-দলে,
গঠন হয় ছাত্রদের 'স্বাধীন বাংলা বিপ্ল-বী পরিষদ'


থমথমে পরিবেশ !
সময়টা ১৯৬৫ যুদ্ধ চলিতেছে পাক ভারত;
   পূর্ব বাংলা অরক্ষিত যেন ভুলে গেছে।
বৈষম্য দূর করিতে হবে —


সময়টা ১৯৬৬ সাল আত্মপ্রকাশ ঘটে
  বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ছয় দফা;
যেন ঠিক ছয় দফা নয় মুক্তির সনদ।


পাক সরকার ক্ষিপ্ত বলিতেছে রাষ্ট্রদ্রোহী;
সময়টা ১৯৬৮ বঙ্গবন্ধু সহ পয়ত্রিশ জনের মিথ্যা মামলায় কারাবাস;
জনতার আন্দোলন বেগবান, সকলেরই স্লোগান —


‘জেলের তালা ভাঙব- শেখ মুজিবকে আনব ’


শুরু হয় গনআন্দোলন;
সময়টা ১৯৬৯ রাক্ষসরাজ ভয়ে থমথম,
গুলি করিতেছে বুকে বাহিত হচ্ছে রক্তের স্রোত,
থামেনি তবুও আন্দোলন চালাতে হবে; সকলেরই মুখে মুখে —


‘তোমার আমার ঠিকানা- পদ্মা মেঘনা যমুনা ’


আন্দোলনের তরে পিচাশের দল ঝড়ে,
বুঝিতে পারিল শেষে মানিতে হবে ছাত্রদের এগারো দফা;
দিতে হবে আজাদ পেলো মুক্তি মুজিব সহ সবে,
পিচাশের দল ভয়ে ক্ষমতা থাকবে তো টিকে ?


সময়টা ১৯৭০ রাখিতে পারিলোনা ধরে
ছেরে দিলো তারে, জারি হলো সামরিক শাসন
আন্দোলন বেগবান, বাধ্য হল নির্বাচন দিতে —
  বিজয়ী হলো পূর্ব বাংলার আওয়ামী লীগ;
ক্ষমতা হস্তান্তর তাহা নয় দিবো না তাহা আলোচনা হবে।


সময়টা ১৯৭১ শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন;
২রা মার্চ প্রদর্শন হলো বাংলার পতাকা,
পাঠ হলো ‘স্বাধীনতার ইসতেহার’ পড়া হলো —


‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’


আন্দোলন বেগবান হলো,
সাত'ই মার্চ এলো হলো শুরু সেই ঐতিহাসিক ভাষণ —


‘‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’’


ক্ষমতা প্রত্যাৰ্পণ হয়নি তবুও,
হচ্ছে কালক্ষেপণ গড়ে তুলেছে অন্ধকার নীল নকশা;
  এলো পঁচিশে মার্চ হত্যা করেছে নির্বিচারে
খালি হয়েছে জনতা, গ্রেফতার হয়েছেন শেখ মুজিব;


বন্দি হওয়ার আগে পূর্ব নির্দেশে
স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করিলেন
এম এ হান্নান ও মেজর জিয়াউর রহমান,
গঠিত হয় মুজিব নগর সরকার,
চলিতেছে যুদ্ধের আর্তনাদ শহিদ হয় আব্দুর রউফ,
মতিউর রহমান আরও কত নূর মোহাম্মদ শেখ ও হামিদুর রহমান।


গঠন হয় মিত্রবাহিনী
বাঙালির শক্তি বেড়ে গিয়েছিল একদাপ;
পরাজয় দেখে-দেখে নীল নকশা কত এঁকে; দেবোনা দাঁড়াতে —


ঠক! ঠক!! ঠক কে?
স্যার একটু বাহিরে আসবেন —
হত্যা করা হয় জাতির সূর্যসন্তান,
থামানো যায়নি তবুও,
বেধে দেওয়া হয় সময় সমর্পণ করতেই হবে—


দিনটা ১৬ ডিসেম্বর,
১৯৭১ অবশেষে হল জয়,
এটি জয় নয় ত্রিশ লক্ষ শহীদের তাজা রক্তের বিনিময়।


সকল শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রইল... ❤️
           — আব্দুল আলিম