মিথিলা,
মেহেদি পাতার ভেতর যে রক্ত খেলা করে,
তা সুন্দর, উৎসবের রঙ, উৎসবের রক্ত।
নিজেকে আমার মেহেদি পাতার মতো মনে হয়নি কখনো।
নিজেকে ভূপৃষ্ঠের সাথে তুলনা দিতে ইচ্ছে হয়,
উপরে সবুজ গাছ, কোটি কোটি প্রাণের চলাচল,
অথচ ভিতরে!
ভিতরে রক্ত পচা মাংস, হাড়গোড়, শেকড়ের কোন্দল।
আরও ভিতরের হৃদয় শক্ত পাথর, কঠিন শিলা।
আরও ভিতরে আগ্নেয়গিরির আগুন, গলিত লার্ভা।


ব্যথাতুর বিরহ যে ভালোবাসাকে আরও তাড়িয়ে বেড়ায়,
তা তুমি চলে না গেলে হয়তো জানতাম না।
যে মিথিলা, যে অনন্ত একসাথে পথ হেটেছে,
কেন তারা কষ্ট নিয়ে দূরে গেল,
কেন তারা পথ বেছে নিল ভিন্ন,
মনের মাঝে যাদের অমোঘ প্রেম, কেন তারা ব্যার্থ হলো।
কেউ জানে না, আমি জানি।


আমিই জানি,
কেন তুমি চলে গেলে ওমন করে হন্যে হয়ে;
কেন তুমি দুঃখ দিলে, বুকের তলের চিতানলে।
বুকের তলে আগুন নিয়ে,
একলা একা ঘরের মাঝে শুয়ে শুয়ে,
কেউ বাঁচে না ভালো করে। কেউ বাঁচে না পৃথিবীর 'পরে।


মিথিলা,
এ ডায়ারি যেদিন পাবে, সেদিন
তোমার অনন্ত বুক পেতেছে মাটির ভিতর;
আকাশ বানিয়েছে আর হাসনুহানা ফুটিয়েছে কবরের 'পর।
আমার কাছে আসতে হলে মাটির তলে দাফন হয়ে আসতে হবে।
আগ্নেয়গিরির আগুন হয়ে কোটি বছর জ্বলতে হবে।
এর চেয়ে বরং তুমি দূরে থেকেই ভালো থাকো। ইতি
তোমারই আগুনে পোড়া অনন্ত।