চলো পালিয়ে যাই,
রাতের অন্ধকারে সীমান্তবর্তী কোন ট্রেনে উঠে চলো পালিয়ে যাই।
এখানে আর না, এই শহর এই দেশ ছেড়ে চলো পালাই!
আমি ভীতু প্রতিবাদের ভাষা আমার জানা নেই;
আমার রক্তে মিশে আছে কাপুরুষতা, চোখে কালো কাপড় বাঁধা,
হাত পা অসাড় হয়ে গেছে, আমার কানে গরম সীসা দিয়ে সীল করে দেওয়া,
কন্ঠস্বর কেড়ে নেওয়া হয়েছে!


চলো পালিয়ে যাই,
এখান থেকে অনেক দূরে যেখানে মানুষ বাঁচে ন্যায্য অধিকার নিয়ে।
এখানে আর না, যারা আমার খাবার কেড়ে নিচ্ছে ওরাই নাকি ভালো?
আজকাল আমার বাবা কাগজের ঠোঙায় করে গভীর রাতে চাউল ডাল কিনে আনে।
ভাবতে পারো কতটা অভাব আমাদের ঘিরে ধরেছে?
তবুও নাকি হাজার হাজার ডলার মাথাপিছু আয় আমাদের হচ্ছে!
রাস্তায় দুর্ঘটনায় মরলে মৃত্যুর সামান্য দাম ধরে কতৃপক্ষ,
লাইসেন্স নেই চালকের তবুও পকেট গরম করলেই ওদের ছেড়ে দেয় জনগণের বন্ধুরা!
এখানে উত্তাল হয় সোস্যাল মিডিয়া ন্যায়ের দাবী করে তবুও তা চাপা পরে নতুন ইস্যু পেলে।
চলো না পালিয়ে যাই ভোর হওয়ার আগে।


চলো পালিয়ে যাই,
যে মেধাবী নিষ্ঠাবান ছেলেটা ঘর ছাড়ে সংসার ভোলে রাজনীতির ময়দানে এসে মরে, তার মূল্যায়ন কেই বা করে?
ন্যায়ের কথা যারা লিখে ছিলো কাগজে ওরাও মরেছে বহুদিন আগে!
হাজারো বিচার এখনো আছে ঝুলে বর্ষ শেষে কারা যেনো ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে থাকে প্রেসক্লাবের সামনে।
তোষামোদের তেল অনেক ওরা তেল কিনে বাপের রক্ত বেচা পয়সাতে।


চলো পালিয়ে যাই,
ভিটে মাটি সব ছেড়ে বিভ্রান্ত হৃদয় নিয়ে পালিয়ে যেতে চাই।
আমি বীর হতে চেয়ে কবেই তো দাসত্ব বেছে নিয়েছে সংগোপনে!
ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে কথা বললেই আমাকে নাস্তিকের তকমা লাগিয়ে দিবে কপালে।
না না আমি আর পারছি না এভাবে গর্তে লুকিয়ে বাঁচতে!
আজকাল নিজেকে পশুর মতো নির্বোধ লাগে, বুদ্ধি বিবেক বিক্রি করে দিয়েছি পানির দরে।


চলো পালিয়ে যাই,
পালিয়ে যাবো নিজ সার্বভৌমত্ব ছেড়ে নেকড়ের বেশে;
যারা মরে গেছে স্বাধীনতার লাল নিশানা মাথায় বেঁধে,
আমি ওদের মতো অত সাহসী নই ঘরে আমার পরিবার তো আছে!
যে এসেছিলো জাতির কাণ্ডারী হয়ে তোমরা তাকেও মেরে ফেলে ছিলে স্বপরিবারে!
এরপর যারা এসেছিলো মশাল হাতে দুর্গম পথে আলো দেখাতে তারাও হারিয়ে গেছে আঁধারের চোরাবালিতে।


--- চলো পালিয়ে যাই