বহুদিন পর স্মৃতির অ্যালবাম খুলে বসলাম,
প্রথম ছবিটি একটি ছোট্ট মেয়ের!
গামলায় স্নান করানোর দৃশ্য,
সাদাকালো ছবি কিছুটা অস্পষ্ট, মেয়েটি কাঁদছে।
ক্যাপশন; এক বছর দুই মাস বয়স,
আমি হাসছি!


সে এত ছোট্ট ছিল নাকি কোনো দিন!
অ্যালবামের পাতায় পাতায় শৈশব,
ছবিতে মেয়েটির সৌন্দর্য ধরা পড়ছে না
কিন্তু পাতা উল্টানোর সাথে সাথে বোঝা যাচ্ছে,
চেহারাটা বদলাচ্ছে, শরীরে রং লাগছে নিয়মিত।


অ্যালবামের পাতার সংখ্যা বাড়ছে
প্রতিটি পাতায় পরতে পরতে বয়স বাড়ছে,
মেয়েটির বয়স পনেরো যে পাতায়,
বেশ সুন্দরী তরুণী দেখাচ্ছে এখন!
এ যেন প্রতিমার নির্মাণ চলমান।


পাতা নম্বর চৌত্রিশ!
বয়স ষোলো কি সতেরো, একটু হ্যাংলা-রোগা,
শরীরে শাড়ি বেমানান!
কিন্তু ভালো লাগার মত সৌন্দর্য আড়াল হয়নি এতটুকু!
এ যেন রংয়ের প্রতিমা গড়ার সম্পূর্ণতা।
অ্যালবামের পাতা উল্টানো চলছে-
পাতা উল্টানোর সাথে সাথে সন্দেহ গাঢ় হচ্ছে!
হঠাৎ করে বুকের ভেতর খচ্ করে উঠলো!
এতো পরিচিত!
আমার শত জনমের পরিচিত!
এ আমার জীবনের দুঃখ-কষ্টের সাথী।


অ্যালবামের মলাটে আবার দু'হাত বুলিয়ে নিলাম
তারপর দু'চোখ মেলাতেই দেখি,
সে তো আমার অপরিচিত!
জনম জনমের পরিচিত!


আরেকটু নজর দিতেই বুঝলাম!
মনের চোখ দু’টো দিয়ে দেখলাম
স্মৃতির স্তরে স্তরে মিলিয়ে নিলাম,
তারপর বুঝলাম
কস্মিনকালেও সে আমার ছিল না!
ভুল করে অ্যালবামটি ফেলে গেছে আমার ঘরে।


কবিতাটি হয়ে ওঠার তারিখ ১৫/০৩/২০১৭ খ্রি.
রচনার স্থানঃ কুসুম কুঠির/প্রফেসর লজ, ফরিদপুর