নতুন ঠিকানায় লিখতে চেয়েছিলাম
ঠিকানা জানা নেই, তাই লিখছি পুরোনো ঠিকানাতেই
জানি পৌঁছোবে না, হয়তো পৌঁছোবে
নিভু নিভু আশা নিয়ে এই লেখা, যদি পেয়ে যায় তোমার স্পর্শ
ভয় লাগে, আমাকে নিয়ে যুগ ধরে কম জলঘোলা হয়নি তো!
বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী, সংবাদিক ইচ্ছেমতো শব্দ সাজিয়ে গেলো আমাদের নিয়ে
যদি আরো একবার গন্ধ পেয়ে বসে তাদের! একা থাকার সুখের ঘরে যদি হানা দেয় আবার!
স্বাধীনতার শেষ আঙুল যদি ছুয়ে যায় সম্পর্কের নাক-মুখ!
ভয় লাগে লিখতে, তাই এতদিন পর নিভুনিভু এই লেখা।


ভয় লাগে লিখতে, আমি অতি সাধারণ মানুষ তাই
ছোট্ট একটা দোয়েল কিংবা ঘাসফুলের চেয়েও ছোট্ট জীবন আমার
যদি আবারও ঝড় আসে, যদি দাঁড়াতে হয় কাঠগড়ায়!
আমাকে কেউ চিনতো না, এই তোমার জন্য বিখ্যাত বনে যাওয়া
আমি তোমার গোপন নয় প্রকাশ্য প্রেমিক ছিলাম, ছিলাম অকর্মণ্য মস্তিষ্কের ছায়া
নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা প্রহরী অথবা বিবেকহীন শয়তান
যে হৃদয় দিয়ে সব আগলে রাখতে চাইতো, আরাধনায় টানাতো প্রেম, তাবু
আমি জানতাম না- হৃদয়, প্রেম, মায়া, ছায়ায় পাকাপাকিভাবে চিরদিন কেউ থাকে না!
আমি জানতাম না- নিখাঁদ প্রার্থনা দিয়ে বাগান বিলাস হয়, দুঃখবিলাসও হয়
কিন্তু সংসার বিলাস হয় না।


ছোট্ট বেলা থেকে হাত উপুড় করে চলতাম, চিৎ করিনি কোনদিন,
তাড়া ছিলো না তোমাকে দখলের, তোমার কাছে পৌঁছানোর তাড়াও তো ছিল না
কারণ তোমার সাথে মানসিক জীবনযাপনের সময় যুগ পেরিয়েছে অনেক বছর আগে,
এই যাপনের সংসারে ইট পাথুরে দেয়াল নেই ঠিকই, নেই ইলেক্ট্রিকবাতির ঝলসানো আলো
বেডরুমে ঝাড় বাতির সাত রং কিংবা মশারির দেওয়ালও ছিল না
কিন্তু নিকোন উঠোন আছে, আছে দড়জার চৌকাঠ ঘেসে শুয়ে থাকা আমাদের সাদা বিড়াল,
ভাত ঘুমের ভাগাভাগির অলস দুপুর, অনুভূতিপ্রবণ মন, আকাশের ঠিকানা, কবিতার শব্দ ঝড়ের মাধ্যম
বিনে সুতোয় গেঁথে রাখা মালার মতো শব্দে বোনা কবিতার আবেগী লাইন
শীত শেষের বসন্তের পলাশ, সবই আছে
আছে তোমার সাথে দীর্ঘ যুগের মানসিক কিছু একটা, নাম জানি না
হতে পারে জীবনযাপন কিংবা সংসার।


এই যে তোমার অন্যর বাতোসা হয়ে যাওয়া, হারিয়ে যাওয়া, না পাওয়া।
আমার দুঃখ দিনে একা থাকার ইচ্ছে পোষণ
শহরের জাগতিক কোলাহল ছেড়ে রামগড় চলে আসা, পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরে বেড়ানো
কখনো বৈদ্যপাড়া, বৈদ্যপাড়া থেকে তৈচালাপাড়া, যৌথখামার চূড়া থেকে নক্ষত্রদের কাছে পাওয়া
রাতবিরাতে পাহাড়ের চূড়ায় চূড়ায় নক্ষত্র গুনেগুনে তোমাকে ভুলে থাকার অভিনয়
কিংবা বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে ভান্তেগণের সাথে মিলেমিশে 'সাধু' 'সাধু' জপ।
কিন্তু; জানো, এখানে জীবন আছে
মানসিক যাপনের মতো কিনা জানি না।
তোমার সাথে মানসিক যাপন-সংসারের মতো জীবন আছে কিনা তাও জানি না, তবুও আমি মানসিক সংসার পেতেছি
এখানে সংস্কৃতি আছে, মানুষ আছে, আছে নক্ষত্র গোনার পাহাড় চূড়া
আমি একা একা রাতে রাতে হাতবালিশে নক্ষত্র গুনি কেউ জানে না, শুধু তোমাকে বললাম
জীবন আমাকে ছুটি দিয়েছে, আমি রুটিনের বাহিরের একজন
এখানে প্রকৃতি হাসে, সুন্দর লাগে, আদুরে মায়াভরা বাদামি চোখে প্রকৃতি হাসে, ডাকে
পাহাড়ের চোখে ভালো আছি, চিঠি পেলে জেনো ভালো আছি।
সৃষ্টিকর্তা তোমাকে দু'দণ্ড শান্তি দিক, তোমাতে কেউ নির্ভার হোক, তোমার ভরসা হোক কেউ
কেউ তোমার ছায়াতরু হোক, আগলে রাখুক প্রেমে কিংবা অপ্রেমে; সুন্দর যাপন করো তোমরা
তোমরা জীবনযাপন করো নক্ষত্রের মতো আমি হাতবালিশে শুয়ে গুনতে থাকি আজীবন।