শিক্ষাগুরুরা যুগে যুগে তর্ক করতো
বিতর্ক করতো নজরুল-রবীন্দ্রনাথ
শওকত ওসমান, লরেন্স-বেকনদের নিয়ে।
তুমুল বিতর্ক করতো সভ্যতার আলো নিয়ে
ডিবেট হতো কে কতগুলো বই পড়েছে, কী তত্ত্ব পড়েছে
কে কোন কবিতার কত লাইন মুখস্থ করেছে
কার ঘরে কত বড়ো লেখক বাস করে
তর্কে ঝড়তো পড়ুয়া-পড়ুয়ানীদের ভেতর-বাহির।


আমরা শিক্ষকেরাও তর্ক করি, বিতর্ক করে অনেকেই
তুমুল বিতর্কের সংস্কৃতি আজও টিকে আছে।
তাদের রুমের সামনে দিয়ে গেলে শোনা যায়
বেতন কম! ইনক্রিমেন্ট নাই! পে-স্কেল হচ্ছে না!
প্রমোশন নাই, সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে না,
আমরা কিছু পাচ্ছি না, আমাদের কিছু হচ্ছে না;
কোচিং বাণিজ্য ঠিকমতো করানো যাচ্ছে না,
চুরিতে বাধা পড়ছে, আইন কানুন নিয়ে ইদানীং বেশি বাড়াবাড়ি হচ্ছে।
কী কাল আসলো, স্যার? কীভাবে টিকবো আমরা!
কথায় কথায় আব্দুর রাজ্জাকের মতো জাতীয় বেয়াদবেরা
গুমর ফাঁস করে দিচ্ছে, চারিদিকে পোড়া গন্ধ
বেয়াদবরা সব শেষ করে দিচ্ছে, স্যার!
সব শেষ হয়ে যাচ্ছে, ওঁরা (এডমিন, পুলিশ) এগিয়ে যাচ্ছে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি
আমাদের কিছু আসছে না, হচ্ছে না, পাচ্ছি না!!


শিক্ষকদের রুমের সামনে দিয়ে গেলে শুনবেন
শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে টাকা নিয়ে কোচিংয়ের গল্প
নায়িকাদের শর্ট পোশাকের চেয়ে ছোট ছোট সাজেশনের গল্প
গল্পগুলো শুধুই পাওয়ার, নেওয়ার, পকেট ভরার!
চারিদিকে চাই চাই আরো চাই, নাই নাই চেঁচিয়ে উঠা
জোড়া জোড়া হাত পেতে রাখা, কেউ দিতে চায় না, শুধু নিতে চায়।


আমাদের শিক্ষকেরা বিজ্ঞাপন দিতেন মেধার, প্রতিভার
দেওয়ার, দিয়ে আশার।
এখনও বিজ্ঞাপন দেখি, জমিজিরাত কেনার সমিতি গড়ার!
দেখি, নিষ্কাম সাধুসন্ত ঘুসখোরদের পাল নিয়ে ষড়যন্ত্র করতে
দেখি, সততা-দক্ষতা-ভদ্রতা-মনুষ্যত্বকে দুর্বল ভাবতে।


তারা বলে, বই পড়ে কী হয়?
আমি বলি, বই পড়ে সভ্যতা-সংস্কৃতি পেয়েছি,
পেয়েছি কুকুর-শেয়াল-জানোয়ার আর যন্ত্রের থেকে পৃথক স্বত্ত্বা।