ওরা দুই বোন এক ভাই,
ওদের মা আছে কিন্তু বাবা নাই ॥
কি করিবে সে,
এই আশি বৎসর বয়সে,
তাই থাকে চুপচাপ ঘরেতে বসে,
বড় অসহায়, শত ভাবনা মাথায়, আছে বুড়ো দাদু ॥
একজন অবলা নারী,
বলো আমি কি করিতে পারি,
পারলে যেতাম ভাই, সাধ্য নাই পালিয়ে যাই, সবারে ছাড়ি,  
আলাদীনের চেরাগতো আর নেই, ঘষা দিলেই নিমেষে সব এনে দেই, জানেনা তো সে কোন যাদু ॥
দারুন র্দূভাবনায়,
বহু আগে তার স্বামী মারা যায়,
মাথায় এলো নাবলা অনেক দায়,
তাতেই দাদু হয়ে পড়ে বড় অসহায়,
মাথা ঘূরপাক হিমশিম,
নিভে যেতে চায় যেন স্বামীর পিদিম,
যেন সে দিশে হারায়,
কি করে, কারে বলে, কই যায়,
এ সংসার দায় ভার, সে যেন এক বিশাল পাহাড়, কেমনে তা সে সামলায় ॥
যার কেউ নাই, কিছু নাই তারে,
কোনদিন, কেউতো দেয়না ঋন, যদি সে তা না শোধিতে পারে,
বড় কঠিন এ জমানায়,
কিছুনা কিছু বিনিময় কিবা প্রতিদান সকলেই চায়,
আবার কেউ মরে এই ভাবনায়,
প্রতিদান দূরে থাক, যদি শেষে হয় সম্প্রীতি ও সৌজন্য ক্ষয় কিবা পূরো আসলটাই যায় হারায় ॥
এ যুগে যতই আপন বলো,
আবু হকে বলে, আসলে আসল সত্যটা হলো,
বলিতে লাগে বড় ভয়,
এ জগতে আসলে কেউ কারো নয়,
পাশে দাড়ায়, মাথায় হাত বুলায় যদি সে আপনই হয়,
বলে-ভাবনার কিছু নাই, বিধাতার দয়া হলে একটা উপায় হবেই নিশ্চয়,
সাহস বুদ্ধি উপায় ও মনোবল, দেবে সান্তনা,
সে মানূষ তেমন খুঁজে পাওয়া যায়না, যে বলিবে হতাশা মানা,
আপদে নিদানে যে পাশে রয় সেইতো আপন আর, সুখের ভাগ দেয় আর দুঃখের ভাগ লয়, ওটাইতো আসল মানূষের পরিচয় ॥
কে কার দিকে ফিরে চায়,
কেউ নিতে চায়না আসলে কারো সামান্য দায়,
এক বেলার একজন কূটূম দেখেও যেন শহরের ধনীরা ওরে, তা মস্তবড় ঝামেলা মনে করে, আজিকে ভীষন ভয় পায় ॥
যার অনেক বিত্তধন আছে,
রক্তের বন্ধন কিবা পারিবারিক সূত্রেও অনেক কাছে,
যদিও কিছু কথা কয়,
মনে হয়, যেন তা অভিনয়,
নতূবা এমনই একটা অভিনব ভাব দেখায়,
যেন নিজেই সে আছে, অনেক অনটন ঝামেলা কিবা নানাহ সমস্যায় ॥
বেশী কথা শুনিবার বা কহিবার,
এত সময় বলো আজিকে আছে কার,
বদলে গেছে দিন এখন,
যেন সময় টাই র্নিমম কিবা কঠিন এমন,
কেউ যেন জড়াতে চায়না, সত্য বচন তা নহে ধারনা, বাড়তি কোন ঝামেলায় ॥
বিশ বছর আগে স্বামী চলে গেছে তারে ফেলে,
ঐ বুড়িটার চার মেয়ে আর, একটা ই ছিল তার ছেলে,
বয়স অল্প, নিয়তির নির্মম গল্প, বিদ্যাও তেমন হয় নাই, কেমনে হবে তা সুযোগ না পেলে,
একজন কলেজের ছাত্র,
চোখে লেগেছে যুগের রঙ সবে এইমাত্র,
কি করিবে শেষে,
আড্ডায় মাতার ঐ তরুন বয়সে,
নিদানে পড়ে আধপাগলের মত করুন বেশে,
কাধে লয়ে জোয়াল, নিরুপায় হয়েই হয়ত ধরেছে হাল, লেখাপড়া ফেলে ॥
বয়স ত্রিশ পার হয়েছে,
সকলে বলছে বলে তাই বিয়ে করেছে,
ছেলেতো নাই, তবে দুই মেয়ের বাপ হয়েছে,
এবার তার বউয়ের গর্ভে আবার এক শিশু এসেছে,
অনেকদিন পর, একটা ছেলে হবে, এই আশায় সবে বুক বেধে বসে রয়েছে ॥
কি বলিব ভাই,
ভাবিলে দুঃক্ষ পাই,
কিছুটা শুধু অবাক হয়ে যাই,
বিধির বিধান ভেদ বুঝিবার, সাধ্য বুঝি কারো নাই,
ঘরে বৃদ্ধ মা,
যূবতী বধূয়ার কত চাওয়া পাওয়া রয়েছে জমা,
অবুঝ দুটি কিশোরী কন্যা,
ছিল আহা কতনা তাদের অজানা সাধ বাসনা ও বায়না ॥
হতভাগা এক ছেলেকে,
তার মায়ের ছ’মাসের র্গভে রেখে,
বাপ বেটা কেউ কাউকে না চিনে না দেখে,
একজনের করুন বিদায়, আর হায় অন্যজনের শুভ আগমন,
সবইতো বিধাতার দায়, যে খাওয়ায় সবারে করিছে করে লালন পালন,
ঘটিল আচমকা এক অঘটন, বুঝা অতী ভার বিধাতার ভেদ লিখন, তাই কি হলো এমন ॥
চিৎকার শোনে বাসা থেকে,
স্বজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে এসে এম্ব্যুলেন্স আনলো ডেকে,
দূরন্ত যূবক ঐ সে অসহায় বাবা,
স্নেহ মমতার টান ছিলনা যদিও ছিল কিছু অনটন কিছুটা হাবা,
গেলো হাসপাতালে ফিরে এলো ঘরে, সটান শুয়ে সাদা কাপড়ে মোখটা ঢেকে,
একটি প্রদীপ নিভলো বলে, আহা সেই সামান্য ছলে, এ ঘরের নিয়তি যেন সহসা একেবারে গেলো বেঁকে ॥
কারো জুটেনা এক বেলার আহার,
আবার কারো টেবিলে নানান খাবারের সমাহার,
কারো গাল বেয়ে ঘি পড়ে যায়, আর কতনা অনাদর অপচয় তার,
বার মাসে তের রঙ কতনা তার বাহার,
বাবামার কত আহলাদ ঢং দিয়ে তার শিশুদেরে চটকদার পোষাক উপহার ॥
তার উপড় এসেছে ঈদ,
তাই আবার করছে বায়না ধরেছে জিদ,
সবারইতো টাকার দরকার, বলো কে কার হয় সুহৃদ,
জড়ি আঁকা, ষ্টেচো আর ষ্টিকার থাকা রঙ মাখা জামাজুতো চাই এবার,
শিশু কি জানে, কি অছে আর কি নাই তার বাবার, তাইতো সে কেন দেবে তার বাবারে এত ছাড় ॥
তার উপর আবার কতজন আছে কত বেহালে,
চাঁদ দেখা যায়, ঢুকে ঘরে বিদ্রুপ করে এসে জোছনায়, ফুটো দিয়ে ছনের চালে,
বুক ভরা কত সুখ কত ভোগ বিনোদন করে মাতামাতি,
আংগুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যায় কত শত জন দেখি রাতারাতি,
আর পঞ্চ সুখের মাতন, দেখি যেন সারাক্ষন, হর্ষ বিনোদন গড়াগড়ি যায়, যেন না চেয়ে পায়, দেখি কারো কারো কপালে ॥
থাকে তারা এই ঢাকাতেই,
মাথার উপড় টিনের চাল পায়ের তলে পাকা ভিট আছেতো আগের সেই,
বলবে কারে বুঝিবে কে আর, কে দেবে আহা যোগান তার, কত কিযে ঘরে নেই,
আজব বিাশাল শহর এই ঢাকা,
কত সুখ শত রঙ ভোগবিলাস সোনালী স্বপ্নের ছবি আঁকা,  
আনাচে কানাচে অজানায় অপরিচয় কোটি মানূয়ের হয় এখানে থাকা,
অগনিত অবিরত কত দুঃক্ষ কষ্ট বেদনা বিষাদ যাতনা অনটন লুকিয়ে গোপনে ঢেকে রাখা ॥
এই ঢাকায় নাকি বাতাসে টাকা উড়ে,
তাই আশায় এসে, পছন্দের কিবা আরামের কাজ না পেয়ে শেষে, কত অপর্দাথ এখানে হয়ে আছে ভবঘূরে,
উল্লাসে কত মানূষ নাঁচেগায় খায় ও ধূমপানের নেশায় টাকা উড়ায়, আর অজানায় খানা ও যথা চিকিৎসা বিনা কতযে মরে,
জানিনা তা সঠিক না ফাঁকি, যার ঐ দেখার চক্ষুটি নাই সে তা জানবে কেমন করে,
যখন যেটুকু যারে,
দিতে পারে কি না পারে,
দেয়না কভূ কারেও তাড়িয়ে, মায়া ডোর হতে নাহি ছাড়ে,
এই ঢাকা, অক্ষম অসহায় মায়ের মত, বুকে টেনে ধরে রাখা যেন মায়ার যাদুমাখা ॥
এমন কত শতশত অগনিত পরিবার ও ঘর,
কত পর আপন হয়ে যায় আবার, কত আপন হয়ে যায় হয়ে রয় পর,
অজানায়, কত ঘর পূড়ে ভেংগেচূড়ে দিয়ে যায় অদেখা অনল ও প্লাবন ঝড়,
হাসি নেই, সুখ নেই, নেই কোন বিনোদন, যেন শুধু অনটন ভরা এক ধূধূ বালুচর,
আছে ঢাকা, নাই জল নাই ছায়া, তবু যেন এক অজানা মোহমায়া ও যাদুর শহর এই ঢাকার ভিতর,
কজনে শোনতে পায়, কিবা দেখতে যায়, সে ঘটন অঘটন গল্প লেখে আর রাখে তার সব সুখদুঃখের খবর ॥  
খেতে চায়, কে দেবে কোথা তারা পায়, অবুঝ শিশু এতিম,
ইচ্ছে হয় পারেনা দিতে সে ইতো বড়দের কষ্ট ও দায়, বিস্কুট কলা মাছ দুধ ও ডিম,
বিলাসী মন রাখিও স্বরন, সে ওতো এক রোগ, ভাল নয় অপচয়, আছে অতিশয় ক্ষতি ও ভয়, কিবা ভোগ অপরিসীম ॥
কেউ সক্ষম কেউ অক্ষম,
যার কপালে যেমন, ক্ষতি কি হয় যদি নাহয় সুখের ভাগ একটু কম,
তা ও তো ভাল হওয়া পরের কষ্ট বেদনার কিছুটা ভাগ নেওয়া ভার বওয়া, যদিবা হয় তাতে সামান্য উপষম,
জেনেশুনে অকারনে কেন আনবে টেনে যম, করে বিধির বিধান লংঘন কিবা সীমানা অতিক্রম ॥
সাধ আছে সাধ্য নাই,
কিছু দিতে কিবা করিতে পারিনা তাই,  
দেখে শোনে অনূভবে অকারনে তাইতো এই মনে কষ্ট পাই,
সামান্য এটুকু যার, বাহিরে সাধ্যের সীমানার, বলো তার আবার শ্রেষ্ঠ হবার কিসের এত বড়াই ॥
সব বেচা শেষ, যা ছিল ঘরে সোনা রুপা কাশা পিতল ও তামা,
যে ঘরে চাল নেই, অনেক টাকা দোকান বাকী, তার শিশুর কিসের আবার ঈদের জামা,
বাবা নেই যার, যেন ঘর শ্বশানের বালুচর এ সংসার অরন্য তার, এ জগতে আসলে থাকে নাতো তার কোন চাচামামা,
কোন দেনাদারের কাছে তার পাওনাদার, হোক সে মালি কিবা চৌকিদার, চীরকাল ইতো সে এক মহাবীর ও বিশ্ব গামা ॥
বকেয়া ছয় মাসের বাসা ভাড়া,
ঘরে এসে চাপ দেয়, বকাঝকা ও মন্দ ব্যাবহার করে, জোকের মত কামড়ে ধরে, যেন দেখলেই করে তাড়া,
বাড়ীওয়ালা বলে কথা, যেন সদা তার রণ সাজ, তারচেয়ে বড় পাওনাদার নেইযে আর ঐ
বাড়ীওয়ালা ও মুদি দোকানদার ছাড়া,
তবু যেন ঐ পরিবার একেবারে নাজেহাল পেরেসান দিশেহারা ॥
যখন,
মম এই আকূল মন,
ভাল কিছু করিতে চায়, অক্ষমতায় অপারগতায়, হেরে যায় কষ্ট পায়, অনূভবে শূন্য সাধন দেয় যাতনা পীড়ন ॥
কারো কান্না,
কারো সান্তনা কিবা সমবেদনা,
কারোবা বুকভরা দোয়া,
তবু যায়না যেন কিছু শূন্যতা আর অনটন ও দীনতার সে কষ্ট মোছা ধোয়া,
কেউ নাই আর কিছু নাই যার,
চোখে জল নেই তবু বুকে অস্ফুট হাহাকার,
এমন কোটি জন, মার খাওয়া হেরে যাওয়া নিযুত পরিবার,  
পেতে পারে সুখ একটু হাসি ও মমতায় যদিরে পায় সাধারন জনতার,
সামান্য উদার সহানূভূতী ও সহযোগীতার যায় খুলে দুয়াার, ঘিরেছে জীবন যাদের অমানিশার ঘন কালো অন্ধকার ॥
ক্ষুদ্র করুনার অগনিত অনেক হাত,
এনে দিতে পারে হেথা সোনালী প্রভাত,
কত অসীম অসাধ্য সাধন যে করিতে পারে,
দেখেছি এ জীবনে বহু জনতার একতা কভূ রাহুর করাল গ্রাস কিবা বিভীষিকার কাছে নাহি হারে ॥
মান যাবার ভয়,
তাই বুঝি যতই কষ্ট হয়,
এ দীনতার কথা মোখ ফুটে কারেও নাহি কয়,
সবকিছু যার বুঝি তার ভরসায়, একটু আশায় সব মেনে লয়, নিরবে সয়,
নিশ্চয় শেষ হবে কষ্টের দিন, কেটে যাবে দুঃখ যদিরে বিধাতার সামান্য করুনা হয় ॥
যার দেওয়া ধন,
ইচ্ছে হয় তার যখন,
করেন দান আবার কেড়ে লন,
একবার দান একবার হরন যা ইচ্ছে তার,
কে আছে কিছু বলিবার, কিবা তা ঠেকাবার,
বুঝি বিধাতার মনে, বড় সাধ হয়েছে তা দেখিবার,
কে বন্ধু হয়, করে ন্বিঃস্ব র্দূবল ঐ মানূষগুলির কে কি সেবা উপকার,
যাদেরে বিধাতায় করেছে দান বিদ্যা ও ধন ক্ষমতা সামর্থ্য ও সক্ষমতার এক বিশাল পাহাড় ॥
যত অসহায় নিরুপায় কেউ নাই আর কিছু নাই যার,
কে করিবে তা অস্বীকার, এটা স্বচ্ছলের দায় আর ন্বিঃস্বের মানবিক অধিকার,
নিতে হবে মেনে, দিতে হবে জেনে, কে ন্বিঃস্ব অসহায় নিরুপায়, কি কারন সমস্যা ও প্রয়োজন কি নাই তার ॥
কেন এত ধন,
বলো তা কি প্রয়োজন,
আমি হবো শূন্য, সব বিলীন হবেই যখন,
নেব অপবাদ, হবো অপরাধী আসামী কেন শুধু অকারন,
দান করিতে কেন এত ভয়,
ধন কমে যাবেনা নিশ্চয়, সে তো নহে অপচয়,
আবু হকে বলে, না হলে মনের রোগ মস্ত বিনিয়োগ সঞ্চয়, তা পাবে ফিরে সবে মরনের পর ॥
থাকতে সময় হাতে,
না হারাতে হায়, সব অজানায় আঁধার রাতে,
ধন কর দান কর বিতরণ, করিতে সুখময় দুনিয়ার জীবন, পরকালে নিদানে সাজাতে নিজেরে আলোকিত সুন্দর ॥