সেতো আর কিছু নয়,
আমার কাছে ঠিক যেন তাই মনেহয়,
বান ঠেকানোর বাঁধ, হয়েছে চাষীর গলার কাঁটা ও অকারনে এক অকাল মরন ফাঁদ ॥
এ যেন এক মজার খেলা,
শীতে কেন নয়, কাজ শুরু হয় গ্রীস্মের শেষবেলা,
উন্নয়নতো নয়, যেন মনেহয়, সরকারী টাকার এক পরম পাওয়ার হরিলুটের মেলা,
হামেসা দেখা যায়,
নির্মান কিবা মেরামত করিতে আসে বর্ষায়,
বর্ষার জল বৃষ্টির ঢল জোয়ার এসে করে তল, মিশে এক ধারায়,
কে যেন ফাঁস বাঁধিল গলায়, হঠাৎ বাঁধ ভেংগে নিয়ে যায় সবকিছু নিমেষে ভাসায়,  
ঘর্ম্ম ক্লান্ত নিদহীন ব্যাস্ত পেরেশান, করে দিয়ে যায় সর্বশান্ত, বাড়ীঘর গরুবাছুর কাঁচাপাঁকা ধান কেবা ঠেকায়,
যদি খোলা রয় তৃতীয় নয়ন, তবে আজ নাহয় কাল,
তারা থাকিলে বহাল, নিশ্চয়ই দেখিবে কিবা সে কাজের বাহারি হালচাল,
পানি উন্নয়ন, সেঁচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রন এর বিচক্ষন কৌশল, কেমন নির্ম্মান কিবা মেরামত করা বালি ও ভিজা মাটির বাধ ॥
কি দেখে যারা তদারকিতে রয়,
তারা যেন হদ্দবোঁকা এমনই মনেহয়,
হয় মাথায় বুদ্ধি নাই নাহলে উদ্দেশ্য ভাল নয়,
এটা যেন বোঁকার দেশ, চালাকের দল এসে করেছে জয়,
তারা কি তবে হয়ত হবে, দক্ষ কিবা সৎ নয়, তবু তারা নির্ভয়,
তা কি তবে, ধোকা প্রতারনা দূর্নীতি তছরুপ কিবা আত্বসাতের মত অবক্ষয়,
দেশ জুড়ে ছড়ায় বিত্তে বড় হবার প্রতিযোগীতায়, ধনী গরীবের ব্যাবধান আর বৈষম্য নিরব আর্তনিনাদ ॥
গড়িছে তারা,
লাগাম ছাড়া বাঁধনহারা,
সাহসী ও সৎ বিধান ও বিধায়ক ছাড়া,
কে দেখিবে কে রূধিবে কিবা তাদেরে ধরিবে কারা,
পরের ধনে চড়িছে রাজকীয় গাড়ী, কত বাগানবাড়ী, গড়িছে তারা ঝলমলে বিশাল শ্বেত পাথরের প্রাসাদ ॥
তাহলে হায়,
বলো কি উপায়,
গড়া ও মেরামত করা যাদের দায়,
তারা যদি সবে অসাধু অসৎ ঘূষখোর হয়ে যায়,
তবে নিরীহ নাগরিক পল্লীবাসী আমরা সবে যাবো কোথায়,
বর্ষা এলে হায়,
দেখি নজরদারি ব্যাস্ততা বাড়ে, বাঁধের মেরামত কাজ শুরু হয়ে যায়,
নদী শাসন, বাঁধ ভাংগন করা মেরামত যদিও কঠিন কাজ গুরু দায়,
মাত্র এক কোটি টাকা খরচ করে দশ কোটির বিল করার সুযোগ পায়,
বর্ষায় বৃষ্টিতে ধুয়ে যায়, বাইরের জল এসে হায় নিয়ে যায় সব ভাসায়,
নীতি নির্ধারক,
পরিকল্পনাবিদ ও প্রশাসক,
সবাই যদি হয় চোর ডাকাত ঘূষখোর ঠক,
নাহলে হয় যদি বলদ কিবা দামরা,
গরীব চাষী তবে, কি করিব অসহায় সবে আমরা,
পেটে ভাত নাই তবু যদি হায় ঋনের দায় তুলে নিতে চায় পিঠের চামড়া,
তাই যদি হয়,
কেন তবে ঞ্জানীগুনী জনের বুদ্ধি নাহি লয়,
গোপন আধিপত্য যদি চলে যায়, এটাই কি তবে তার ভয়,
সবে এটাই চায়, চাকুরী কিবা চেয়ারের ক্ষমতা যদি কভূ চলে যায়,
শিক্ষিত মানী সম্ভ্রান্ত লোকেরা তবে গিয়ে বলিবে কারে হাত পাতিবে কোথায়,
দেখেছি অনেক বড় বড় আমলা,
নাই ধরপাকড় হয়না বিচার হয়না মামলা,
আশ্রয় প্রশ্রয় প্রেরণা ও ঠাই যেন অদৃশ্যমান ফুলের মালা,
কারো রুটি রুজি ভাত কাপড়ে গিয়ে কভূ তারা দেয়না কোন হামলা,
তার চেয়ে বেশী ভাল দেখি আমার চাচার ঘরের দিনমজুর কিবা ঠিকা কামলা,
মন্ত্রী যদি হয় চোর ঘূষখোর, রক্ষক হলে ভক্ষক বিপদ ঘোর, বিধিরে এ দেশটারে তুই সামলা,
তবু কেন তারা ঘূষ খায়,
তাদের সবকিছু আছে, তারা সব পায়,
কব্জি ডুবিয়ে বার মজা খায়, গাল বেয়ে কতনা পড়ে যায়,
নাই ভাবনা, কোন পেরেশানি তাড়না, নিতে চায়না, জনতার লোকসান ও দেশের বিশাল ক্ষতির দায়,  
বাড়ীগাড়ী, ড্রাইভার, পাহাড়াদার, ঝাড়ুদার, চাপরাশি, খানসামা যেন সারা বছর তারা শ্বশুর বাড়ীতে বেড়ায়,
পেলো আর মিটালো তারা, জীবনের পঞ্চ স্বাদ, যত বাসনা সখ ও সাধ আহলাদ ॥
হাত পাতে,
লোক চক্ষুর অজান্তে,
লেনদেন হয়ে যায়, কেউ নাহি টের পায়, দিনে কিবা রাতে,
মোটা অংকের টাকা চায়,
তাতে গড়িমসি হলে বিলটা আটকে যায়,
এত টাকা যখন হুমকির মোখে পড়ে যায় অনিশ্চয়তায়,
তারা ভাল করেই জানে, দুই পক্ষেরই হবে সর্বনাশ, যদি তাদের মাঝে কভূ বাধে বিবাদ ॥
তাইতো ঠিকাদার আমকাঠ দিয়ে বলে স্যার দিয়েছি বার্মাটিক,
ইঞ্জিনিয়ার ফিক করে হাসে,
উভয়ে উভয়কে আসলে তারা খুব ভালবাসে,
যদি লিখে দেয়, সই করে আর সেই সুরে কথা কয়, তবে তাইতো সঠিক,
কে আছে তা যাচাই করে,
এ দায়বোধ কিবা মাথা ব্যাথায় কেবা মরে,
দূর্নীতি দমন দপ্তর তাও পরের হুকুমের উপর নিভর, রাজার গোমস্থা, আছে আরও বড় আমলার লেজটা ধরে,
সবখানে বিচড়ন রাজ চামচার,
কি ঘটিছে কোথায় কেউ নেই যেন তা তলিয়ে দেখার,
অনূভবে চিন্তা চেতনায়, তাদের জীবন শুধু ধন আর ভোগ বিনোদন চায়, জুড়ে আছে পূরোটাই তার আবর্জনার গাদ ॥
সাগর নদীর জোয়ার,
বর্ষার মাঠভরা জলে চারিধার থইথই একাকার,
পাহাড়ী ঝর্নার জল,
তার সনে যোগ হয়ে বৃষ্টির অঝোর ধারা ঢল,
উজানের বান, লক্ষ হাজার কোটি টন ওজনের সমান, ভাটিতে বহমান ধাবমান চাপ যার,
যায় কি ঠেকানো হায়,
যারা নদীর জোয়ার ঠেকাতে চায়,
দিয়ে বালি কিবা নরম ভিজা মাটির বাঁধ, তারা কি আসলে সুস্থ্য মানূষ নাকি ভদ্রবেশি শিক্ষিত উম্মাদ ॥
ইংরাজি নাম ফ্লাইওভার,
দোতলা ত্রিতলা সড়ক উড়াল সেতূ নাম যার,
অল্প সময়ে যানযট এড়িয়ে উপায় উপর দিয়ে চলে যাবার,
বলোতো তার ছিল কি দরকার,
চলতো যদি ইট সিমেন্টের সাধারন গাঁথূনী দিলেই তার,
এত বিশাল আকার ও মোটা রডের সনে সিমেন্ট ও পাথরের ঢালাই দেবার,
কে আছে তার জবাব দেবার,
না থাকে ফাটল ও ভিতরে না ঢুকে জল আর,
বাঁধগুলি কেন হয়না তেমন, যেন সহিতে পারে অসীম জলরাশির চাপ ও ভার,
দরকার, কঠিন কাঠামো গড়ার,
না করে তা প্রতি বছর বছর জোড়াতালি বারবার,
আর নয় দূর্ভাবনা উৎকন্ঠা,
যখন তখন মহাবিপদের এই বুঝি বাজিল ঘন্টা,
দূরুদূরু মনটা, কেজানে কখন আসে সেই ক্ষনটা, হতোনা এমন হলে রডসিমেন্টের ঢালাইয়ের স্থায়ী বাঁধ ॥  
এত মেরামত ও চুরি, এত ভয় ও ঝুকি আর এত অপচয় যার,
বালি কিবা নরম ভিজা মাটির বাঁধ না হয়ে তা হতো যদি মজবুত ও স্থায়ী কাঠামোর শুধু একবার,
দিয়ে দুদিকে গভীর প্রাচীর আর আরসিসি পিলার,
যেমনি মজবুত করে হয়, সম যেন ঠিক শহরের ঐ ফ্লাইওভার,
প্রতি বছর প্রতি উপজেলায় এমন বাঁধ নির্ম্মান হতো যদি শুধু এক কিলোমিটার,
চাল রপ্তানীর সম্ভাবনা ছিল যে অপার,
কৃষক, দেশ ও জাতি সুফল পেতো তিনশত বছর তার,
যদি হতো সরকারের বোধোদয় ও সুমতি,
তবে কি আর হতো দেশের এত অপচয় ও এতটা ক্ষতি,
পল্লীবাসি বানভাসি ঐ গরীব চাষীদের হতো এত কষ্ট ও হেন দূর্দশার পরিনতি,
সচেতন মানূষের মন, কভূ সহিতনা এমন কষ্ট দহন, চাপা আক্ষেপ উত্তাপ ক্ষোভ অভিযোগ ও বিষাদ ॥
থাকে যদি তারাই উপবাসী,
এত দুঃক্ষ কষ্ট দূর্দশার জীবন হয় সর্বনাশী,
যারা এত কষ্ট করে সারা বছর ধরে ফলায় ফসল, দেশবাসীর মোখে যোগায় আহার ।
কেন তবে পারিব না বানাতে বাঁধগুলি মজবুত করে সম তার,
সরকারী ও বেসরকারী যৌথ দায় ও ব্যবস্থাপনায় বিনির্ম্মান হতে পারে যার,
আমরা কি করিনি তবে গোমতি, মেঘনা, শীতলক্ষা, যমূনা ও পদ্দার উপর সেতূ তৈয়ার,
মোটেও বেশী হবেনা, বন্যায় ফসলের ক্ষতি, বাঁধ ভাংগন, মেরামত ও এর ত্রান ও পূনঃর্বাসন মূল্যটার ।
হলে সুবোধ সুজন দরদী সরকার,
ষোলআনা মালিকানা নিরিহ অসহায় জনতার,
পরিশোধ করে শতকে দশটাকা হারে বছরে মাত্র একবার,
চাষীরাই টোল দিয়ে করিতে পারে বাঁধের নির্ম্মান ব্যায়মূল্যের ব্যাঙ্ক ঋন ও এর পূঁজি পরিশোধ কিবা প্রত্যাহার ।
দেখিব আর কারোকারো হবেনা পোয়া বারো রাতারাতি,
গজানো ব্যাঙের ছাতার মত, হয়েছে দেশে কালো টাকার অগনিত কোটিপতি,
যেথা নিরব হাহাকার, ঋনের দায়ভার, চাষী হিমশিম,
বদন মলিন, দোকানদার চায় পাওনা তার দোকান বাকী, দূর্ভাবনায় মেজাজ খর আঁখি রক্তিম,
এ জীবনটাই যেন হলো দায়, কেমনে সবদিক সামলায়, কোথা গেলে সুখ শান্তি পায়, গুনিছে প্রমাদ ॥
দুদিনের এ জীবন,
বলোনা কে চাহে এমন,
দায় ঋন ও দূর্ভাবনা সারাক্ষন,
নাই বুকভরা সুখ আর কিছু বিনোদন,
নহে ভোগবিলাস পায়েপায়ে যেন শুধু অভাব আর অনটন,
আমি একজন সাধারন চাষী,
তবু এ জীবন আর প্রিয় আমার দেশটারে বড় ভালবাসি,
স্বপ্ন দেখি আশা করি, এ দেশটারে মনের মত করে গড়ি, ধূয়েমুছে সাফ করি যাকিছু সর্বনাশী,
না করে বিদ্যা অর্জন,
না পেয়ে বড় চেয়ারে চাকুরী কিবা রাজনীতির আসন,
না পেয়ে কলম হাতে, নিত্য জীবন মাছদুধভাতে, হয়েছে মস্তবড় ভূল, বুঝি এ জীবনটাই হলো মিছে হলো বরবাদ ॥
তা পিছু লেগে আছে যেন হায়,
কিছুতেই বাড়ী ছেড়ে যেতে নাহি চায়,
এ যাতনা দুঃসহন,
চাদর একখানা যেন এমন,
এমনই গুন তার, ঢাকিতে বদন,
শুধু বারবার উদোম হয়ে যায় দুটি চরন,
মাঝে মাঝে মনেহয়,
কেন আমি হেন অসহায় অতিশয়,
যার মতন এ জগতে বুঝি আর একজনও নয়,
প্রতীক্ষায় কখন হবে ভোর, পায়ের নীচে বুঝি নেই মাটি মোর আর মাথার উপরে একখানা ছাতা কিবা ছাদ ॥
কেউ কি সুখ পায়,
কৃষকের ছনের ঘরের ভাংগা টূয়ায়,
ঘরের ভিতরে ক্ষিন আলোক ঢুকে চমকে দিতে চায়,
এমন যেজন নেই কোন ধন, বিমূঢ় সব রস রঙ সুর যার ভূবন আংগীনায়,
শুয়ে মাটির বিছানায়,
ভরে কি কভূ মন নিবিড় যাদুর মায়ায়,
যেথা আজও হয়নি আলোর আবাদ, দেখে রুপালী আলোর ঝিলিক বাহার ভরা ঐ সে পূর্নিমার চাঁদ ॥