কি দেখি কি শুনি, মাথায় যেন ভেংগে পড়ে বাজ ॥
ডিজিটাল সভ্যতার,
পশুত্ব হিংস্রতা বন্যতা আর,
বর্বরতার সকল সীমানা হয়েছে পার,
যখন যেথা যৌনাচারে নেই কোন বাধ বিচার,
নেই সহমত, আছে যূলূম অত্যাচার নির্যাতন ও অবিচার,
ধন্য ধন্য নাহি ধিক কি পাওয়ার যোগ্যতা তার, বিদ্যা ও বিঞ্জান মাথা খেয়েছে লজ্বার,
সভ্য সদস্য আমরা ইতো করেছি তার উন্নয়ন ও সংস্কার আর গড়েছি অতী আধূনিক এ বিঞ্জ সমাজ ॥
সভ্য লোকসমাজে বাড়ছে পশুর সংখ্যা ও বিচড়ন,
জনসমাজ কি তবে, সহসাই কিছুদিন পর হচ্ছে কিবা হবে বন,
নরপশুরা কেন এত দূরন্ত ও অকূতোভয়, পায়না সাজা পায়না ধিক, কেন তাদের হয়না লাজ ॥
অদূর ভবিষ্যতে হয়ত পাবে এ সংবাদ,
বনের পশুরা লোকসমাজে এসে নরপশুদের নামে করছে নালিশ, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ,
দুচারটে সুখের ও আনন্দের খবর,
কেন ঝড় তোলেনা বর্বর ঐ নরপশুদের বুকের ভিতর,
পশুমানবেরা স্বেচ্ছায় নেমেছে যখন অসহায় শিশুর তদারকি আর করিতে তার হেফাজতের কাজ ॥
বলব আজিকে এখন সে সমাচার,
দিনটি ছিল ২০ই এপ্রিল শুক্রবার আর,
তা ছিল কুইন্সল্যান্ড শহর, দেশ অস্ট্রেলিয়ার,
তিন বছরের একটি কন্যা শিশু কেজানে কি খেয়াল সেদিন হয়েছিল তার ॥
গুটি গুটি পায়,
সে বাড়ী থেকে বের হয়ে যায়,
তাদের বৃদ্ধ কুকুর ম্যাক্স, কি বুঝে তার পিছে পিছে ধায়,
১৭ বছরে, থেকে এক পরিবারে, হয়েছিল সে বড়ই বিশ্বাসী ও পরম আপন,
পশু হলেও আচড়নে বলে, ছিল তার একজন, ভাল মানূষের চেয়েও অনেক ভালো এমন একটা মন ॥
যদিও সে কানে শোনেনা হায়,
চোখেও নাকি ভালো দেখতে নাহি পায়,
ছিল তার তবে অনূভবে চেতনায়, দেমাগে ও সারা গায়,
প্রভূর প্রতি, যেন তার কভূ সামান্য না হয় ক্ষতি, বুকভরা দরদ ও সুমতি আর দায়,
তাই কুকুরটি গোপনে তার,
শিশু মনিবের পিছু লয় ও সংগী হয়, কি করা আর মাথায়যে তার গুরু দায়ভার,
তাই হুশিয়ার, কিছুতেই যেন মনিবের কোন ক্ষতি হয়ে না যায়, করিতেই হবে তার উপকার ॥
যেতে যেতে এভাবে থেমে থেমে দুজনে গেলো পথ দুই কিলোমিটার,
অজানায় নিরুদ্দেশে, অবশেষে এই দুই প্রভূ ও পেয়াদার ষোল ঘন্টা হয়ে গেলো পার,
সংগী হলো, সারাক্ষণ সংগেই রলো, তাই আর,
এই সফরে হয়নি তাদের কারোই কোন নাওয়া কিবা আহার ॥
পুলিশ ও সরকার,
মামলা হলো, হৈ চৈ পড়িল, দায় বাড়িল সবার,
নেমেছিল কাজে মাঠে, জরুরী সাহায়্য সেবাদানকারী সংস্থার,
প্রায় একশত কর্মকর্তা কর্ম্মচারী ও ভলান্টিয়ার,
তাদেরে পাওয়া গেলো শেষে এক জঙ্গলে এসে, ঘেষে এক পাহাড়ের ধার,
নিখোঁজ হবার ষোল ঘন্টা পর, পাওয়া গেলো রটিল খবর, করেছিল তারা অবুঝ ঐ শিশুটিরে তার কুকুরের সনে উদ্ধার ॥
শিশুটি যখন রহিত ঘূমিয়ে,
ঐ কুকুরটি তারে আদরে বুকে নিয়ে,
ঠান্ডা হতে তার বাঁচিয়েছে প্রাণ নিজের বুকের উঞ্চতা দিয়ে,
সে এক অবাক বিস্ময়,
বিশ্ববাসীর যদিও বিশ্বাস করিতে কষ্ট হয়,
সহস্র বছরের, সভ্যতার পরে ফের, বুঝি পশুর কাছে আজিকে শিখিতে হবে মানূষের, মানবতা কারে কয় ॥
একজন অতী পরিচিত ও বিশ্বস্থ্য বন্ধু পাওয়ায়,
হয়ত শিশুটির মনে মুক্ত বন্য জীবনের স্বাদ নিবার জাগ্রত বাসনায়,
আর কুকুরটিকে সারাক্ষণ তার সংগে থাকিতে দেখায়,
পরম আস্থা ও নির্ভরতায় সে নির্ভাবনায় তার বন্ধুর সনে ভ্রমনে বের হয়ে যায়,  
শিশুটির মধ্যে সামান্যতম কোন উৎকন্ঠা বিচলতা বিষন্নতা বা একাকিত্ব বোধ ছিলনা,
বরং সে ছিল দারুন আত্ববিশ্বাসী ও সাহসী এবং তার মাঝে ছিল রাশি রাশি উৎসাহ ও প্রেরণা ॥
আমি তারে শুধালাম,
করলি কিরে বাবা এটা কেমন কাম,
সে বলে ”ম্যাক্স কেমন এক বিশ্বাসী বন্ধু অনূচর, আর মুক্ত বন্য জীবন কত সুন্দর, তা যাচাই করে দেখিলাম”
এ খবর ও ঘটনা,
বিবিসি বাংলার তথ্য বর্ননা,
এক পশুর বিস্ময়কর মানবতা ও করুনা,
কেউ কোনদিন হয়ত ভূলে যাবেনা, হেন কৃতঞ্জতা ও প্রশংসার যা অনন্য এক উপমা ও উপহার শিখিবার ॥
কাছে পশুর মহত্ব ও উদারতার,
মানূষের হিংস্রতা বন্যতা ও পশুত্বের হোক হার,
শিশুটিরে অক্ষত ও সুস্থ্য আর খুঁজে পেয়েছিল তার পরিবার, সে অবদান আসলে ছিল কার ॥
ইস্,
কত বড় ভাগ্যিস,
কোন ধর্ষনকারী যে পায়নি দেখা ঐ কুকুর আর শিশুটার,
হলে হয়ত, নিশ্চিত মরন ই হতো, ঐ অবুঝ অক্ষম ও দূর্বল বন্ধু দুজনার,
ঘৃন্য জঘন্য বিভৎস সে খবর শুনিতে যে হয়নি কাউকে আবার,
লাখো শুকরিয়া তাই হে বিধাতা দরবারে তোমার, তুমি বাঁচালে মারিতে পারে, কে সে, এমন সাধ্য কার ॥