এক মুসাফির,
যুদ্ধাহত বিজয়ী বীর,
ময়দানে উঁচূ করে শির, ফুটপাতের ঐ খোলা দোকানদার ॥
একেবারে তুলতুলে নরম,
অনেক সময় বেঁচাকেনা হয় দামে অতী কম,
যার ভাল লাগে কিনে খায়, ছোট ছোট কবরী চাঁপা ও বিঁচি কলা,
কখনও দেখি সবরী আনাজী, কোনটা কালো দাগ পড়া কিবা একেবারে থলথলে গলা,  
হরেক মজার এই দুনিয়াটার, কেউ না কেউ খরিদদার, নিশ্চিতই আছে তার ॥  
কে কিনে কে খায়,
কি লাভ ইবা তাতে সে পায়,
কত আয় আর কেমনে বা দিন যায়,
কেজানে হায় কজন পোষ্য আর, কিভাবে চলে তার সংসার ॥
মোর ভাবনার হয়না অবসান,
পথের পাশের ছোট্ট কলার দোকান,
ব্যাবসা যেমনই হোক, সেতো কাজ করে খান,
সে নহে ছোটলোক, হালাল উর্পাজন শ্রেষ্ঠ ও মহান, তার জীবিকা ও কারবার ॥
জানি অতী সামান্য পূঁজি,
কিছুনা কিছুতো নিশ্চিতই হয় নিত্য রুজি,
আমিও চাই তেমন একটা যদি পাই কোন ব্যাবসা করিতে খুঁজি,
যেন নাই কোন ঋন, কোনমতে চলে যায় দিন, পাই একটুখানি সমাদরের ঠাই দুজনার ॥  
অসীম ঐ বিশাল খোলা আকাশ,
যেন সে নিজেই রাজা হয়ে মহারাজার এক উওম দাস,
যেথা যখন খুশী করে গমন বিচড়ন অবস্থান ও বসবাস,  
বাজারে কিবা কোন পথের ধারে বসে পড়ে ঘেষে একপাশ,
কোন ভাড়া নেই আর, গোটা দেশটাই যেন তার, এ জগতে কেউ নাই আর কিছু নাই যার ॥
আচার ও আচড়নে,
দেখে আর কথার্বাতা শুনে তার হয় মনে,
যেন হেন ভদ্র শিক্ষিত, যেথা শ্রদ্ধায় হয় মন অবনত, বিনয়ী বিন¤্র এমন তার বচন ও ব্যাবহার ॥
তার সাদা চূল আর মোখ ভরা সাদা দাড়ি,
বয়সে যত নয় যেন তারচে বেশী হয়ে গেছে বেঁকে দেহ চলন ভারী,
আসে ধারনায়, নাজানি আহা কি মায়ায়, দীনতার তাড়না তারে দিতে চায়না ছাড়ি,  
কে জানে কোন ভূলে কোন কারনে, বদলে সময় হয়ে অসময় সুখটুকু বুঝি তার নিতে চাহে কাড়ি,
ছেলেমেয়ে বুঝি নাই তার,
যে করিতে পারে সামান্য কামাই রোজগার,
চারজনের সংসারে অনায়াসে চলে যায় একজনের আহার,
কেজানে কোথায় থাকে আর, কে আছে তার, কিবা কোথায় ঘরবাড়ী,
ষার্টোধ বয়স দূর্বল দেহ, কেন দেখেনা কেহ, তবু কেন সে যায়না আজও এ পেশা ছাড়ি,  
কেউ কি নিতে পারেনা এই একজনার, লালন পালনের সামান্য এটুকু দায়ভার ॥
চটের ছালা বিছিয়ে,
কলাগুলি থরেথরে ভাজেভাজে ছড়িয়ে সাজিয়ে,
ক্রেতার আশায় পথের বাঁকে পথপানে থাকে বসে তাকিয়ে,
চলে যায় ঘরে, আর থাকেনা তার পরে, হলে ঠিক দূপূর বারটার ॥
এক কঠিন জীবন ও জীবিকা,
হয়তবা তা নিয়তির এক র্নিমম লেখা,
কেউ কেউ হায় এখানে বড় অসহায় আর একা,
খুঁজে বেড়ায় র্তীথের কাকের মত চেয়ে থাকে তবু পায়না সোনার হরিনটার দেখা,
নিজে ঘূরে মরে, র্ঘূনিপাকে মাথা ঘূরে পড়ে, তবু ঘূরাতে পারেনা চাঁকা হায় তার ভাগ্যটার ॥
দেখিনা তারে সারাদিন ঝড়ঝড় র্বষায়,
কেজানে কেমনে চলে আর, কি করে খায়,
শীতের সন্ধায় আসে একটা মোটা চাদর দিয়ে গায়,
আর গুটি গুটি পায়, দেখি সে চলে যায়, আযান হলেই এশার ॥
এ জগতে যার, কেউ নাই আর কিছু নাই,
কোন না কোন কাজ কিছু উর্পাজন তারে, যেমনে পারে করিতেই হয় তাই,
অভাবের তাড়নায়,
বুঝি শুধু জীবিকার কারনে হায়,
আজও তার র্বাধক্যটার নাই, দিলোনা কেউ তারে এতটুকু ঠাই সামান্য ছাড় ॥
জগতের আমরা সবাই,
নিয়তির নিয়ম মানিতে তাই, চাই বা না চাই,
চিন্তায় ও কাজে, অসীম সহনের মাঝে, ধন আর সুথ খুঁজে বেড়াই,
যতই নিরস র্নিমম বা সরস উওম চমৎকার, যেমনই মনে হোক বিধাতার নেয়ামত ও উপহার ॥
ঝুড়িতে ভরে,
নিত্য এনে মাথায় করে,
জেনে, কিনে আর বেঁচে সারা দিনে,
ঝুলিতে রাখিলাম ভাল করে না দেখে না গুনে,
এত পেরেসানি আর তাড়নার, দুদিনের জীবনের সাজানো এ বানিজ্য পসার ॥
দেখি কিছু নাই মোর থলিতে হাতে,
তবে কি এ জীবন ছিল, শুধু পেটেভাতে,
কি করি কই যাই, এখন এই গহীন অাঁধার রাতে,
কেনরে হইল এমন সংগী স্বজন কেউ নাই সাথে, জীবন করলাম পার, হায়রে আমার মুনাফা কইরে তার ॥
জানলনা সে দেখলনা,
তার লাভক্ষতি আর দেনাপানা,
আপন মনে বসে করলনা কেউ তার আপন হিসাবখানা,
মহাজনের এই দাদনের কারবার, ষোলআনা মালিকানা যার, আর আমি তার এক নগন্য অধম ইজারাদার ॥