পর্ব - ০১


সে যে তোমার পাওনা উপহার,
যা কিছু আছে ওরে তোমার কাছে তার সবই তোমার,
কেউ কভু আর তা নেবেনা কাড়ি, যেতেও হবেনা তোমাকে কোনদিন ছাড়ি ॥
সে এক খোলা মাঠ,
কত স্বপ্ন আশা ও তার বাসনা বিরাট,
ভোগবিলাস আর বিনোদন ও রঙতামাসার সে হাট,
কত হৈ চৈ আড়াআড়ি দৌড়ছুট হট্টগোল হানাহানি ও বাড়াবাড়ি ॥
সাধ্য ও ক্ষমতা নাই,
তবুও দেখি কত বড়াই,
ভাবে তার অনেক লম্বা হাত,
চাহে সে করিবে নিমষে সব বাজিমাত,
সুতো ধরে দিলে হেচকা টান পলকে কূপোকাত,
কার দৌড় কত দূর, দেখিছে তামাসা বসে ঐ মহাপাকজাত,
যেমন ইচ্ছে তার রাতকে দিন আর দিনকে রাত আমি সব করতে পারি ॥
দ্রুত বেগে ছুটছে সবে,
হিরামতির অচিন দেশে যেতেই হবে,
কোনদিকে কোন পথে কেউই তা জানেনা তবে,
আরও ধন ও বেশী সুখ চাই,
ভিনদেশে যাযাবর মুসাফির সবাই,
বুঝি আপন ঠিকানা সবে ফেলেছে হারাই,
সব ফেলে সব হারিয়ে শূন্য হাতে,
একেলা সফর, সবে আর সবকিছু হবে পর, কোন এক আঁধার রাতে,
কোন সে দেশে যেতে হবে অবশেষে, এ ভুবন চিরতরে তোমাকে ছেড়ে মরণের কাছে হারি ॥
যেথা হতে একদা আসা,
ছেড়ে এত সাধ ও সাধনার সুন্দর বাসা,
আপন হাতে তিলতিল করে গড়া সাতরঙে সাজানো খাসা,
অফুরান জালবোনা অসীম অবাধ আশা, কতযে স্বপ্ন সাধ ও মোহ ভালোবাসা,
সোনাদানা টাকার পাহাড়, ঝলমলে প্রাসাদখানা বাড়ীগাড়ী আর বিত্তবেসাত কাড়িকাড়ি ॥


পর্ব - ০২


হাতে অল্প সময় পড়ন্ত বেলা,
ছুটছে পেরেশান ঐ কাফেলা,
যদিও ঠিকানা পথ নাই কারো জানা,
তুবও যেন নেই কারো কোন ভাবনা,
শুধু ধন আর ভোগবিলাস ও বিনোদন তাড়না,
ঐ দল পাওয়ার নেশায় এমনই পাগল, যেন সবে বিভোর অবুঝ কানা,
সওদা সামান ওরে সংগে করে কি নিতে হবে, সে টিকেটটা কাটা হয়েছে কিনা,
সপ্ত আকাশের মালিক মহারাজার রাজা একক ও সত্য সঠিক কই তার দাওয়াত পত্রখানা,
কোন চালাকি কারচুপি করে,
শত চেকপোষ্ট ও অগনিত প্রহরী ওরে,
কেউতো খাতির করে, দেবেনা কাউকে ছেড়ে,
কোন গাড়ীটা লওনা সে খবরখানা,
সিপাহীরা নেবে জেলখানায় ধরে অতিথি মহলে ঢোকা যাবেনা,
ওরে গভীর রাতে নাকি অতি ভোরে, কোন ঘাট থেকে কখন সরাসরি তা যাবে ছেড়ে রাজবাড়ী ॥
এসেছ মহাজনের দাদন নিয়ে,
বেঁচাকেনার এ হাটে কি পেলে কি হারিয়ে,
যদি এমন হয় যার ধন তাকেই ফের দিবে ফিরিয়ে,
কি হবে তুমি এ হিরামোতি ঝুড়ি আর ঝোলাভরে কুড়িয়ে নিয়ে,
বলো কে পেতে রাজি এসো ধরবে বাজি, দেহমনের সুখশান্তিটা বিলিয়ে দিয়ে,
কেউ পায়ে হেটে,
যায় যাক কলিজা ফেটে,
কেউবা বেচুইন ঐ দৌড়ে জুটে,
যাবে যেন বাতাসেরে পিছে ফেলে ছুটে,
হার না মানা বাসনাগুলি সব সীমানা কিবা লাগাম টুটে,
কেজানে যদি সে তোমার ভাগ্যে জোটে, নাহলে ফলাফল হয় শূন্য মোটে দাড়িয়ে সারিসারি ॥
ফেলছে পায়েতে মাথার ঘাম,
দুদিনের জীবনের কেনরে হলো এত দাম,
তেজে ঘুম প্রিয়ার মধুচুম, সকল আয়েশ ও আরাম,
নাই কোন যাচাই বাছাই, সাদাকালো মন্দভালো পাপপূণ্য হালাল ও হারাম,
কেন হয়েছে আলো ও আঁধার যেন মিলেমিশে একাকার, কথার সনে মিল নেই তার কোন কাম,
হলোনা দেখাশেখা আজও সব পথঘাট চেনাজানা,
শুয়ে অচেতন ঘুমে ছিল জাগড়নে বিভোর মহাধূমে ঐ সে সফরখানা,
কত দূর মাঠঘাট তেপান্তর,
সব হারিয়ে হয়ে সবার জনমের পর,
কত আপদ নিদান দুরন্ত দামাল তুফান ঝড়,
ধূ ধূ বালুচর নাই কোন লোকজন লোকালয় ও বাড়ীঘর,
সব ফেলে সব ছাড়ি, উজির নাজির মন্ত্রী রাজা সবে দিতে হবে একাকি ঐ অসীমে পারি ॥


পর্ব - ০৩


অচিন দেশের অচেনা পথে,
কেউ পায়ে হেটে, কেউ চড়ে নড়বড়ে পূরাতন অঁচল ভাংগা রথে,
কোন বসার ঠাই, খাবার ও জল নাই, তবু কেউ দিন গণে ও পথ চায় ভগ্ন ক্ষিন আশায় বহুদিন হতে,
কেউ অতি ছোট নৌকায়,
বড় বড় ঢেউ অথই জল শুধুই ভয় দেখায়,
এই বুঝি হায়, যেন ডুবে যায় যায় কাঁপে বুক মরণ দশায়,
নাই বাড়ীঘর জলরাশির কূলকিনার, যে ভুবন ভরা শুধু হাহাকার ও হতাশায়,
পেলে সে সম্মান যে হবে ঐ মহাভাগ্যবান, রাজকুটুমেরে সিপাহীরা এসে নেবে আগায়,
অচিনপুর ঠেলে আবর্জনার ভুর লয়ে মাথাভারি ঋন, দিগন্তহীন অসীমে বিলীন অজানা সে ঠিকানায়,
গ্রহ তারা রবি শশী,
পলকে যাহা সেথা যাবে পসি,
বেগে তেড়ে সব ছেড়ে আড়াআড়ি অতিশয় তাড়াতাড়ি,
যেজন পাবে ওরে, বেড়াতে যাবে দেবে নিমেষে পারি, চড়ে সে অদৃশ্যমান রাজার ঐ হাওয়াই গাড়ী ॥
জয়পরাজয় মোহেভরা এ ভুবন,
বাড়ীগাড়ী অতি আদরের বিবি ও সন্তানগন,
ধনধন আর সুখসুখ করে আহারে নেশার ঘোরে কাটিল জীবন,
নাই কোন তার এতটুকু ছাড়,
গিয়ে শেষে ঐ দেশে যতই করিবে হাহাকার,
কে রূধিবে কুপথে ব্যয় আর ঐ অপচয় কিবা তার অপব্যবহার,
যবে গড়িবে রচিবে তারা সবে মিথ্যা মন্দ ও নানা অনাচার ও গুনাহের খামার,
সাধ্য হবেনা কারো কে বলিবে বাছাধন ওপথ ছাড়ো, কে শুনিবে কার কথা আর কে করিবে তার প্রতিকার,
সবাই স্বাধীন অবলীলায় লয়ে অদেখায় মাথাভারি ঋন, অসাড় অচেতন অসহায় বিদেহী আত্বার সেইতো পরাজয় হার,
তাকেই সবটুকু তার ভাগ নিতে হবে তার,
কেমনে ফিরাবে বিধির বিধান, সে দায় ও মালিকানা ছিল যার,
হোক যাই সেতো ওরে তাদেরই কামাই, ভয়ংকর ঐ পাপ কিবা পুণ্যটার,
নেই ভাবনা পেলে তার সামাণ্য করুণার ছাড় ক্ষুদ্র পুণ্যটারও পাবে সবে মহান পুরস্কার,
তোমারই রেখে যাওয়া ধন,
এত আদরের সন্তান তব উত্তরাধিকারীগন,
হয়ে যাবে অদেখায় গোপনে সবকিছু আর ঐ তাদের সবার সনে তোমার জনমের তরে আড়ি ॥


পর্ব - ০৪


তবে ওরে এত ধন,
মনে প্রশ্ন জাগে অ বোকা মন,
বলো আহা কি লাভ আর কিবা প্রয়োজন,
যদিরে তা সংগে করে না নেওয়া যায়,
কিবা আর পরকালে না’ই কোন কাজে লাগে হায়,
যাই বলো মানিক রতন,
এক কষ্টের অন্যায় ও হারামের উপার্জন,
যদি তা নাইবা ঠেকাতে বা ফিরাতে পারে ঐ মরণ,
তবে কেন আর অর্থহীন অর্থের অকারণ সে দায় বহণ, যা যেতে হবে ফেলে রেখে চিরতরে ছাড়ি ॥
হও হুশিয়ার সাবধান,
অ ভাই থাকিতে ওরে এ দেহে প্রাণ,
করো মনভরে অসহায় দীনজনে অকাতরে দান,
হেন একটা চারা রোপন কর গাছ লাগাও সাজাও শূন্যে উদ্যান,
যখন সে ভরে উঠিবে শত শাখা আর ঘন সবুজ তার পত্রপল্লবে সে অবদান,
একদিন বড় হবে কত ফুলফল ও ছায়া দিবে, হেথা বসে পাখীরা করিবে বিধির গুনগান,
আলো ও ভালোর ঐ বানিজ্য ক্ষেতি চাষ,
দেবে সবারে এমন বিজয় আর নাহি হারে মহাশান্তি সুখের চির বসবাস,
সফল সফর এক দক্ষ নিপুণ কারবারি,
মহা ধনী মহাভাগ্যবান সব হারিয়ে গিয়েও সবকিছু সে জন ছাড়ি,
অঢেল ভোগবিলাস হলেও সে তার নগন্য অধম গোলাম দাস, পেলে রাজকুটুমের তরে ঐ আকাশবাড়ী,
আর কেড়ে নেবেনা সেতো তার কর্ম্মে কেনা, তা নহে ঋন কিবা কোন ধারদেনা ষোলআনা মালিকানা নহে সে ইজারাদারি ॥