কি যেন আজ খেতে চাহে মন ॥                                                                                          
বহিছে শ্রাবনের ধারা,
সারা ঘরে কেহ নাই শুধু আমি একা ছাড়া,
বন্ধ সকল কাজ মাথায় যেন এলোমেলো ভাবনার বাজ বাহিরে যেতে নাপারা,
আপন ঘর যেন আমার কারা, কেন মোর সুখ হরেছে জানিনা এ দশা করেছে কারা,
কি হবে দিয়ে ছাতা, পা হতে মাথা, যদি বাহিরে যাই জানি আমি এখনই ভিজে হবে সারা,
টিনের ঘরের চালে কে যেন কলসীতে জল ঢালে, ঝড়ছে ঝনঝন এমনই তুমুল অবিরাম বরিষন ॥
কিছু সংগ,
এমন উঞ্চ মধুর রংগ,
যেন করে কেমন মম সব অংগ,
মনে কয় মাতাল বাসনা না যেন হয় ভংগ,
করিতে আরোহন যখন তখন কোথা পাব সেই সোহাগ চংগ,
কই সে জন, আমারে ছেড়ে হয়েছে যার সুখ সাগরে সম্মোহন, আজিকে বুঝি বড় বেশী ছিল তার প্রয়োজন ॥
কারে বলি কেমনে,
দিয়ে গরুর মাংসের সনে,
সরব আবেগ আচড়ন তা কি চলে সর্বজনে,
কোন গীত গাহিতে হয় করিতে রণ জয় কোন ক্ষনে,
সম পরিমান চাল ডাল,
গরম গরম ঝড়ঝড়ে তবে তুলতুলে নরম একটু ঝাল,
নামানোর আগে সামান্য ঘি দিয়ে তার উপড়ে মাখিয়ে ভরাই,
বেশী করে কাঁচা লংকা দিয়ে উল্টে পাল্টে যেন যায় বাতাসে তার খুশবো ছড়াই,
বাড়াবে মজা দূনা,
হলে তার সংগে হাসের মাংস ভূনা,
কাঁচা পেয়াজ শশা ও টমেটুর সস না হলে যেন রয়ে যায় স্বাদ কিছুটা উনা,
হয় কি র্পূন সেই রসনা,
আম জলপাই কিবা রসুন ও লেবুর আঁচার বিনা,
খিচুড়ি খেতে পাগল নয়, খুঁজে পাওয়া যাবেনা নিশ্চয়, ভূবন জুড়ে আছে কি এমন কোন বাঙালী জন ॥  
কোন সে খাবার,
সারা বছর দারুন মজাদার,
বরষায় কিবা শীতে কদর আরও বেশী হয় যার,
গরম গরম যদিও ভাগে তা পায় বেশী কিবা কিছু কম, না খেলে হারে কে বলিতে পারে নাম তার,
সৌখীন বিলাসী রুচিকর ও সুস্বাদু সে ভোজন ॥
সব ইতো আমার আছে,
যত উপাদান দোকানে বা ঘরে হাতের কাছে,
তবে আজিকে এমন দিনে,
যখন আমার সবই আছে শুধু সুখ বিনে,  
টাকায় পাওয়া যেত যদি তা আমি এনে দিতাম কিনে,
তাহলে আপনি আমি আপন বাসনার কাছে আর বন্দি হয়ে না রহিতাম ঋনে,
মা মাসী শ্বাশুড়ী আর,
বোন বঁধূয়া কন্যা কেউ ঘরে নাই যার,
সে রাঁধা আর কে রাঁধিবে, মায়ার যাদুর পরশে বাঁধিবে,
ঐ সে দারুন,
ঢেলে দেওয়া পঞ্চ স্বাদ গুন,
ঠিকঠাক ষোলআনা হওয়া চাই যার তেল ঝাল নূন,
র্হষ মজার, ঐ সে খাবার, সম নেই যার, বলো কে করিবে আর, তার আয়োজন ॥
প্রায়ই আজ স্মৃতি মনে পড়ে যায়,
যখন বাড়ীতে যেতাম বৃষ্টি ভেজা কোন এক বরষায়,
বসে ঘরের মেঝেতে মধ্যখানে এক বিছানায়,
মিলে মোরা নয় ভাইবোন, পরম সোহাগ ছোয়ায়,
যতই বলি শোন, হৈ চৈ চিৎকার কথা শোনে কে কার, ঐ আড্ডায়,
খাবার ভাগে পেত কি না পেত, খুশীতে বিগলিত হয়ে যেত মোর বাবা ও মায়,
কিছুদিন পরে পরে মোদের সবারে যখন একসাথে এভাবে কাছে পায়,
আহা কি যে মজা মায়ের হাতের ঐ খাবার, সবাই হাত ও থালা চেটে খায়,
ভাগে পেতাম না, শুধু একবার কিবা এক থালার বেশী যদিও বা কারো তা মন চায়,
ছিলনাতো এই মন, অনূভবে সেদিন তেমন বুঝমান,
ঐ কিশোর বয়সে, কেজানে কোন ক্রোধ ক্ষোভ কিবা রোশে হতো অতী বেশী মান অভিমান,
আজ অবসরে, যখন বিচড়ে মন নিঝুম মনের ঘরে, পূরাতন সেই দোষ সেই স্মৃতি মনে পড়ে, নিরবে কাঁদে এই মন ॥
বলো মায়ের কি ছিল দোষ,
যদিও কারো কারো দেখিতাম হতো চাপা অভিমান রোশ কিবা আক্রোশ,
তবু হেরে যায়নি সে নিয়তির র্নিমমতায়, দেখেছি তার প্রসন্ন মন আর ঐ সোনা মোখ বরাবরই খোশ,  
ছেলেমেয়ে কেউ যদি আরেকটু খেতে চায়,
সবাইতো আর সমান নয়, কেউ সামান্য কম বা বেশী পায়,
কভূ যদি মায় ঐ মজার বিশেষ খাবারটা ভাগে নাও পায়, বা চুপিচুপি অন্যকিছু খায়,
কারনটা তার আজ বুঝি এখন, রান্না হতোনা সেদিন তখন, আমার বাবার ঐ ঘরে আসলে যতটুকু ছিল প্রয়োজন ॥
সে মজার সেদিনের ভূনাখিচূড়ি,
কি বলিব আহা, ছিলনা তার সাথে যার কোন জুড়ি,
জানিনা কেন, ভরিলে ও এ ভূড়ি কানায়কানা ষোলআনা পূরোপূরি,
ইচ্ছে হতো রাতের অন্ধকারে উঠি চুপিসারে আবার খাই পেটভরে তা আমি করে চুরি,
ভরত না এই মন দেখেছি তখন, হয়ত ছিল প্রবল আমার চোখের ক্ষুধা আর তার প্রতি মনের আর্কষন ॥