কি বা পেলো,
আর কি সে হারালো,
হায় আমার অবুঝ বোঁকা ছেলেটায় ॥
বুঝিনা আমি কি করি,
কেমনে তারে ভাল মানূষ করে গড়ি,
ক্লাশটিচার, রেগে যায় বারবার, আবেগে তার দুহাত চেপে ধরি,
চলে তার পিছু পিছু, তবু যদি একটা কিছু হয় উপায় ॥
আমি বিয়ে করেছি আবার,
বিধবা হলে ছোট খালাকে তার,
দুটি সন্তান রেখে যখন মরে গেলো তাদের মায় ॥
এমনই কপাল,
কে দেবে এখন আমার ঘর সামাল,
যেন নেই মোর হাতে আর তলোয়ার ঢাল,
হলেম আমি অসহায়, দুটি শিশু মা হারা হলে ছোটবেলায় ॥
স্কুলে য়ায়না,
ঠিকমত সে নায়না খায়না,
কারো মন পেতে চায়না, কারেও ভয় পায়না,
কারো ধার ধারেনা, সবাই হারে, কেউ যেন পারেনা তারে বুঝায় ॥
দোকানে বাজারে যায়না, পড়েনা নামাজ,
লেখাপড়া করেনা মনে তার ধরেনা কোন কাজ,
কারো কথা শোনেনা, এত বলি তবু তার হয়না লাজ,
ভাল কথা বললে ওরে, যেন তার মাথায় ভেংগে পড়ে বাজ,
ঘরে নেই সে কি সকাল কি বা সাঁঝ, মানেনা নিষেধ বারন কে তারে মানায় ॥
করে যখন যা ইচ্ছে খুশী,
মাঝে মাঝে একটু পড়ে, বাকীটা সময় চুপচাপ টেবিলে গম্ভীর হয়ে থাকে বসি,
ঘরে ফিরে আসে তার ইচ্ছে হলে,
কি লাভ বলো একই কথা বারবার তাহারে বলে,
আপন খেয়ালে হায় যেন সে ভেসে যায় ঐ বানের জলে,
ইচ্ছে হলেই কারে কিছু না বলেই ঘর ছেড়ে বাহিরে চলে যায় ॥
এই আছে এই নাই,
কারে বলি, আমি কোথা যাই,
কেউ না খবর জানে, এ পাড়ায় ও পাড়ায় তারে নাহি কেউ খুঁজে পায় ॥
জানিনা সে কি করে,
কেন মন তার বসেনা ঘরে,
কেজানে সে কি চায়, যায় কিবা থাকে কোথায় ॥
হয়ত ভাবেনা বুঝেনা তাই,
বুঝাবার কোন ভাষা কিবা চেষ্টার ত্রুটি নাই,
রাত দশটার পরে আসে ফিরে ঘরে হৈ চৈ শুনিতে পাই,
মাছ মুরগী ডিম দূধ কলা না পেলে মেজাজ তার চটে যায়, নিত্য দুবেলা সে খেতে চায় ॥
জানিনা কেন,
ভাবটা এমন সারাক্ষন সে যেন,
ঘূরে বেড়ায় সে গা ভাসিয়ে হাওয়ায়, কল্পনায় যেন সে আজও শিশুকালের ঐ দোলনায় দোল খায় ॥
চেষ্টা ছাড়েনি,
যদিও তা পারেনি,
তবু মনে মনে তারা যেন হারেনি,
মানূষ বানাতে তারে হতাশায় আধমরা হয়ে যায়, অসহায় তার মাবাবায় ॥
তারপরে,
একদা বয়স বেড়ে,
সে আমাদেরে যায় ছেড়ে,
দিনেদিনে দিন চলে যায়, স্মৃতির পাতাটা কষ্টে ভরে,  
শুনেছি সে নাকি এখন থাকে, ভূলে গেছে তার বাবামাকে, বড় শহর রাজধানী ঢাকায় ॥
রোজ বিকেলে,
সব রেখে সব ফেলে,
চলে যায় ঐ ঘৃন্য আখড়ায়,
যেথা দলবেধে গাঁধার দলে হায়,
ইয়াবা ফেনসিডিল বা গাঁজা কিনে খায়,
জানিনা কি লাভ তাতে আর কি মজা পায়,
ফিরে আসে ঘরে রাত একটার পরে ভরপূর চূড় হয়ে নেশায় ॥
জীবন মিছে,
জানিনা কিসের পিছে,
লুকিয়ে থাকে মিশে গেছে,
যেথা নষ্ট ও মন্দের ঘের, ঐ বখাটেদের আড্ডায় ॥
কালের ঘূর্নিপাকে,
মরা নদী কিবা তিন পথের বাঁকে,
রথটা যেথা পথের মাঝে মোখ থুবরে পড়ে থাকে,
না জানি কোন ধোকায় বোঁকা হয়ে গেছে মোর খোকায় ॥
সে পথ আমার জানা,
যাওয়া যায় তবে আর ফিরে আসা যায়না,
যদি একবার কারেও গিলে খায় ঐ দারুন নেশায়, তবে সে তলিয়ে যায় অবক্ষয়ের অতল তলায় ॥
মোর বাছাধন,
কোন মোহে কার ইশারায় হলো এমন,
অন্ধ নয়ন, মানিক রতন হলোনা তার আহরন,  
হয়ত একাকি শেষে,
কাঁদিবে অন্ধকার পথের পাশে বসে,
এ জীবন, হোক বা না হোক মরন, আপনার ধন সব হারায় ॥
যতই তেড়ে আসে তারা হেরে যায় ও যাবে,
দিগন্তের বিজয়ের উপহার কবে আর কেমনে পাবে,
জানি আমি,
তারা জানেনা দামী হয়েও তাই হলোনা দামী,
ছোট্ট এ জীবনের হারজিতের মজার খেলার দৌড়ের পাল্লায় ॥
তার দলে,
পরাজয়ের ঐ প্যাচকলে,
একবার পড়িলে, কেউ আর পায়না ছাড়া কোন কৌশলে,
তার দরদী হয়ে,
কষ্ট আর মন্দের ভাগ লয়ে,
কেউ হয়না সাম আর সামনে এসে দেয়না সায় ॥
পড়ে বিষম ফাঁদে,
অসহায় তার বউ নিরবে গুমরে কাঁদে,
পথ পায়না, ভেবে পায়না পড়ে থাকা এই ঘরে তাকি বেঠিকে, যাবে কোনদিকে পালায় ॥
সৎ সংগে হয় র্স্বগ বাস,
আর অসৎ সংগে মহা র্সবনাশ,
কেন আর আজ, হয়না তেমন ভাল কাজ,
বাল্য শিক্ষার সেই অমোঘ বাণী আর অমূল্য পড়ায় ॥
কেন এ মাটির জীবন,
না খোলে ঐ তৃতীয় নয়ন,
মনেরে করে কঠোর শাসন নিয়ন্ত্রন,
মানূষ হয় মানূষ সুবোধ সচেতন সুজন,
না হয় জানা রয় চীর কানা তার ভেদ ও কারন,
না হলে সাধন, তীক্ষ্ন শানিত দরশন মন ও মনন,
খোলে মনের সব জানালা দুয়ার, হয় মানবতার জাগড়ন,  
মন ভরে র্স্বগ নরকে বিশ্বাস,
কেমনে নাহলে বলো করিবে পাশ,
এসে পরবাসে বানিজ্য বসতির যাযাবর বসবাস,
সে যে এক রোগ নহে শুধু ভোগ, বিনোদন বিলাস,
কথা মিথ্যে নয়, মানূষ যখন হয় খেয়াল বাসনা ও অভ্যাসের দাশ,
মনের ভূবনে প্রকাশে গোপনে না করিলে আড়ালে অন্তরালে আলো আর ভালোর চাষ,
কি হবে উপায়, যদি দুদিনের দুনিয়ায়, এ দেহমন যায় ভূলেতে মেতে শুক্ষ্ম জটিল জালেতে জড়ায় ॥
বহুদিন পরে,
আচমকা একদিন এলো সে ফিরে ঘরে,
ফিটফাট পোষাকে হাতে করে,
একখানা বড় বাজারের ব্যাগ ভরে,
বিশ্বাস করিতে বড় কষ্ট হয়, কাঁচা বাজার নয়,
দেখিয়া প্রথমে চমকে উঠি মোর লেগেছে দারুন ভয়,
এনেছে এমনি অজানায় যেন পকেটমার ও হাইজ্যাকারের চোখ কিবা হাত না পড়ে ঐ টাকায় ॥
আমি তো তা চাইনি,
যা চেয়েছিনু তা কেন আজও পাইনি,
আবেগের সোহাগে নাকি খুশীতে, সময় লাগিবে জানিতে, হাউমাউ করে কেঁদে উঠে তার অভাগী মায় ॥