হলো আজ তিন চার দিন,
পাতলা পায়খানা, শরীর খারাপ, চেহারা মলিন,
বাঁধা এই, যেন তার কেউ নেই, নীরিহ র্নিব্বাক অসহায় গরুটার ॥
কি হয় বলো ওরে,
এই সামান্য খাবারে, কি এতবড় এই পেটটা ভরে,
স্বাক্ষী রয়েছে তার, ফাঁকা নীচতলার এই একটা পিলার ॥
ছড়ায় আহা কি ভীষন র্দূগন্ধ,
আশপাশের মানূষগুলির ভাগ্য মন্দ,
সরু পথে এসে পড়ে মলমূত্র রক্ত ও আর্বজনা,
কে কারে বলবে, কে করবে তার সমাধান নেই জানা,
হেন একাকার, যেন মশা আর মাছির হয়েছে এক ভাগাড় ॥  
গরুটি ৩০/৪০ মিনিট পর পর,
হাম্বা হাম্বা করে বড়ই করুন সে স্বর,
দিচ্ছিল কেজানে কেন, র্দীঘ লম্বা টানে যেন ক্রন্দন চিৎকার ॥
বলো সে কোথায় আছে কিবা তার নাম,
দিগন্তের শেষে, অচিন দেশে, অচিন গাঁয়ে বহুদূরে মোর ধাম,
শুধালাম বলো ভাই,
কি হয়েছে কাঁদছ কেন, কি কারন তাই,
বললো, কি হবে তোমারে বলে, তাতে কোন লাভ নাই,
মোর বাছারে আমার, কেমন আছে আহারে, যদি দেখতে পেতাম একবার ॥  
বিষয়টি দেমাগে দিয়েছিল নাড়া,
তবু যায়নি তা, কারেও বলতে পারা,
অনূভবে ছিলনা, কারন অজানা, আমি ছাড়া,
কি ছিল কারন তার, জানিতে চাহিল মন, কষ্টখানা ঐ গরুটার ॥
মসজিদে যাবার পথে গরুটার কাছে গেলাম,
কৌতুহলে ভাল করে আমি তারে তাকিয়ে দেখলাম,
লক্ষ্য করলাম, ওটি গাভী,
কিছুটা ঝুলে তার ওলান ও নাভী,
তাতে কার কি ক্ষতি কি আসে যায়, সেটি যদি হয় গাভী কিবা ষাড় ॥
মনেহয়, গৃহস্ত বেটা,
বাছুরটা রেখে, দিয়েছে বেঁচে সেটা,
এসব বিষয় নহে জানার কিবা ভাবনার,
কে কিনলো কোথায় নিয়ে গেলো কি করবে আর,
ঐ বিক্রেতার, এ জগতে দরকার তার শুধুই টাকার ॥
প্রতি মাসেই এমন আয়োজন দুচারটে হয়,
নাহলে কেন, কেজানে হয়ত ভাল লাভবান নিশ্চয়,
সে ও এক জীবিকা পেশা আর, আয় রোজগার, দারুন চমৎকার ॥
ভাবনা কি, যা করার আয়োজন করে,
কিছু তার বখসিস, হাতে তুলে দেয় পরে,
সবায় কিছু পায়, বাড়ীটার কেয়ার টেকার, দাড়োয়ান ও ম্যানেজার ॥
ভালই যখন রুজি,
তাই, আসে তার সবটা পুঁজি,
এটা তার হাত খরচা, মাষ্টার সাহেবের প্রথম স্ত্রী, বড় বেগম সাহেবার ॥
র্অথ ও জায়গা জমির জন্য,
বাবার আমল থেকে, হয়েছে স্বনাম ধন্য,
প্রাক্তন এক প্রাইমারি শিক্ষক, নাম তার হাজী আবদুল গফুর মাস্টার ॥
চিপা গলির এই শহর ঢাকা,
একই গলিতে আমাদের হয় থাকা,
যূগের হালে কম, অনেকগুলি টাকা দিয়া,
আমি পাশের বিল্ডিং এর পাঁচতলার এক ভাড়াটিয়া,
আর মালিক সে, রযেছে চেয়ারে বসে, সামনের ঐ বিশাল বাড়ীটার ॥
সাত তলা সুন্দর একটা বাড়ী,
উঠেছে উপরে আশপাশের সবগুলিরে ছাড়ি,
বিবাহিত তিন মেয়ে আর, দুজন মাত্র ছেলে রয়েছে তার ॥
তেমন শিক্ষিত নহে, নেই ধারনা,
বাহিরে বাহিরেই থাকে খুব বেশী দেখা যায়না,
কি করে কই যায়, কই থাকে কি খায়, কারোই নাই জানা,
দৃশ্যমান নেই কোন কাজ কারবার, শোনা যায় তারা নাকি ঠিকাদার ॥
ডিজিটাল এ সমাজে,
মানূষ বহু রুপে, কত সাজে,
প্রকাশে গোপনে কেউ ঢাকে ভয়ে লাজে,
জানা অজানা রয়েছে শত আজব পেশা ও বিকল্প উপায় করা রোজগার ॥
মাংসের ভাগ ও বিলি বন্টন,
তালিকার টাকা গ্রহন, হলে সমাপন,
বুকে যার, সন্তান হারা বেদনার ভার, হবে হয়েছে ঐ গরুটার জবাই ॥
উঠে পরদিন সকালে আর তাই,
গরুটার ত্রন্দন আমি শোনতে নাহি পাই,
বারান্দায় গিয়ে দেখি সেটি আর নাই,
র্কমব্যাস্ত র্ঘমক্লান্ত হেথা, বেশ কয়েকজন কশাই,
আর মাংসের ভাগ নিতে, থলে ঝুড়ি হাতে, উপস্থিত মহল্লার ক্রেতারা সবাই ॥
অনেক বিত্তধন টাকার মালিক,
তবু ঠিক নেই, এলোমেলো জীবনের বহু দিক,
নেই সুখ, নেই মান সম্মান, আছে গাড়ী ও ড্রাইভার,
কালিমার উপর ছবি আঁকা রঙ মাখানো, শত গল্পের সমাহার এক পরিবার ॥
চাই অধিক র্অথবিত্ত ও ধন,
হতেই হবে মানূষ হবার সাধনার সাধন,
তার কি আছে প্রয়োজন, তৃতীয় নয়ন ও মন,
আছে কি নাই, করোনা ওরে ভাই, তার অন্বেষন,
তারাইতো হয় দেখি দলপতি, আর এ সমাজের কর্নধার,
চোখ থেকেও দেখেনা, কান থেকেও শোনেনা যারা আর্ত অসহায় মানূষের হাহাকার ॥