( একখানা কবিতায় ছোটগল্প )


ভাগ্যের কত নির্মম ফের,
নিয়ম ও বিধিবিধানের শত ঘের,
সুখে দুঃখে পাওয়া না পাওয়ায় তা দুদিনের,
অদেখা কত দায় তার মাথায় ছোট্ট এ জীবন মানুষের,
পন্ডিত বিদ্যান চতুর ও ক্ষমতাবান প্রাপ্তির চেয়ে খুয়ানো তার ঢের,
খেসারত যেন পূরো একসের বুঝেনা তারা যারা পেতে চায় বেশী গিয়ে সীমানা ছাড়িয়ে ॥
মিলেনা কিছুতেই জীবনের হিসাব,
সবই লোভ মোহ নেশা আর প্রলোভনে নিরবে গোপনে সয়লাব,
আজীবন যা দেখিলাম অবশেষে আজ বুঝিলাম সবই তার ছিল যেন রঙমাখানো খাব,
হলেম কিনা মানুষ হলেম কিনা দামী, সুদাসলে কত দায়ঋন কি পেলাম আমি আসলে কি হারিয়ে ॥
স্কুলটা মোর পাল্টিয়ে,
ভর্তী করালো মোরে পাশের গায়েতে নিয়ে,
ইচ্ছে করেই বয়সটা দিলো মোর বাবামায় দুবছর বাড়িয়ে,
মেয়েরা তাড়াতাড়ি যায় বেড়ে কি হবে এত লেখাপড়া করে বছর ঘুরতেই দিয়ে দেবো বিয়ে,
ঠিকই যেই ভাবা সেই কাজ ঘার ধরে বিয়ে দিয়ে পালকিতে ভরে পরের ঘরে শেষে মোরে দিলো তাড়িয়ে ॥
ভালো একটা বিয়ের ঘর এলো,
ভাবটা এমন যেন মাটিতে বসে চাঁদ হাতে পেলো,
ঘন ঘন দুপক্ষের কত যাওয়া আসা শেষে আমার বিয়েটা হলো,
বরের সংগে নাকি মুরুব্বিদের এমনই পাকাপাকি কথা হয়েছিল,
বছর বছর সে আসিবে বাড়ী নাহলে যত তাড়াতাড়ি বাসা করে যাবে মোরে সেখানে নিয়ে ॥
ছেলে বিএ পাশ, সৌদী আরব থাকে,
বিয়ে করিলাম মনে অনেক সন্দেহ নিয়ে ও পড়ে এক ঘূর্নিপাকে,
আসলে বিএ পাশ কিনা কি কাজ করে কিবা উপার্জন কত নানা ভাবনা ভাবায় আমাকে,
দিবে দশ ভরি সোনা আর দশ লাখ টাকা মোহরানা, কোন দাবী নাই তার কিছুই দিতেও হবেনা তাকে,
চুরি করে তারে দেখার ছলে পুকুর ঘাটে গিয়ে সখীদের সনে ছিলেম আমি গাছের আড়ালে দাড়িয়ে ॥
হলো দুজনার দেখাদেখি,
সে গল্পটা কারে বলি আর কেমনে লেখি,
মনের কথাটা তখনও সবারে জানাতে রয়েছিল বাকী,
পাত্র অপছন্দ নয় তবে আসল কথাটা বলিতে ভয় তাই তা রেখেছি ঢাকি,
ওরে ডাক লোকজন,
মৌনতাযে সম্মতিরই লক্ষণ,
দেখেছি বাবার চোখে সে কি খুশীর নাঁচন,
চলে হাকডাক করো হেজাক বাতি বাবুর্চি খানসামা সামিয়ানা ও সব আয়োজন,
শুরু হলো মাতামাতি,
ভিতরে বাহিরে সব কাজ সমতালে চলছে হাতাহাতি,
হৈচৈ সোরগোল আলোড়ন সবে মহাব্যাস্ত বিচরণ পুলকিত স্বজন ও কাজের লোক যত মহিলা ও পুরুষগণ ॥
হলো প্রথম দরশন,
ওরা এসেছিল দশ/পনর জন,
বুঝতে দেইনি কারেও যদিও মোর ভেংগেছিল মন,
জোড় করে ধরে সাজিয়ে মোরে তাদের সামনে করিল প্রদর্শন,
প্রথম পলকে কে সে যেথা গিয়ে পড়েছিল মোর অ দুটি চপল চকিত নয়ন,
কত মিষ্টি কত পানসুপাড়ী লোকজনে ভরা বাড়ী হঠাৎ শুরু হলো এক মহা আয়োজন,
জানিলাম পরে হায় কি আর করা যায় সে মোর ভাসুর, যেন বহুদূর নহে দুষ্ট মধুর তামাসার কোন বন্ধু জন ॥
ঐ ভরা মজলিসে ঠাসা বৈঠক ঘর,
যদিও শ্যামলা সে ছিল লম্বা স্মার্ট ও সেরা সুন্দর,
ভালো লাগা না লাগা,
কে পায় হেথা কে পায়না জাগা,
অজানা তার কারণ বুঝানো যায়না বুঝেনা বোঁকা মন,
অবহেলায় কেউবা ধূলায় লুটায় কেউবা আবার পায় সোনার সিংহাসন,
মন যা বলে মনের কথায় চলে কেউবা বিপথে বিফলে না পারিলে মনেরে করিতে শাসন,
মানেনা মানা শোনেনা বারণ, কে তাহা চায় আঁধারে হারায়, তাই যদি হয় তারচে ভালো গঙ্গার জলে ডুবে মরণ ॥
চোখের দেখায়,
মন কেন শুধুই বলে হায়,
সেজন বচনে বসনে চলনে ও শিক্ষায়,
সাধ্য কার সারাটা বাড়ীতে কে আছে আর তার সমানে যায়,
কে বেশী সুন্দর বর না ভাসুর,
স্বামী না ভাসুর কে বেশী ভাল কে বেশী মধুর,
উঠেছে রুপের সাগরে নেয়ে যেন বউয়ের চেয়ে শালিকা বেশী টানটান ভরপূর,
যাকিছু পেয়েছ রয়েছে তোমার পরম নেয়ামত উপহার বিধাতার পায়ে ঠেলে দিওনা করে দূর,
আপন ধন অবহেলে দিওনা ঠেলে পরধনে নজর দিলে চোখ পড়ে হতে পারে বিশাল ভুল মহাকসুর,
কেন হেন ভাবনা,
শুভ নহে কভু কারো সনে এই তুলনা,
করে সমূহ অনিষ্ঠ সাধন, মনেরেখো এ বচন কেউ ভুলনা,
আমার স্বামী যদিও ফর্সা ছিল সে কিছুটা খাটো বুঝেছি পরে সেইতো অপরাধ তা পরখ করে দেখায় ॥
সে যাই হোক পেলো মন,
অন্যরকম সে এক চনমনে নব শিহরণ,
ঝটিকা দেখতে আসা নিমেষে প্রেমে পড়া সেই ক্ষণ,
আবেগে গড়া ভালোবাসা কল্পনার সোনালী বাসর রচিল সে বিবাহ বন্ধন,
যে যার মত সবাই গেলো চলে,
তারপর রাত কিছুটা নিরব নিঝুম ও গভীর হলে,
একই দিনে একই ক্ষণ কোন সে মধুর লগনে হলো স্বপ্নের ছবি আঁকা যাদুর পেলব মাখা মধুর মিলন ॥
আমার শ্বাশুড়ী আছে শ্বশুর নাই,
বোনেরা আছে যে যার শ্বশুর বাড়ীতে সবাই,
সে ই সবার ছোট, তার তিন বোন আর পিঠে বড় এক ভাই,
ভাইটি মানে আমার ভাসুর এমএ পাশ জানিনা কেন তবু সে আজও বিয়ে করে নাই,
উদাস হতাশ ও বেকার, তার হাতে ঢের নিজের রোজগার নগদ টাকা ছিল দরকার তবে নাই বুঝিবা তাই ॥
বিয়েতো হলো,
একমাস পরেই বীরহ এলো,
যখন তিন/চার মাস পার হয়ে গেলো,
আর যেন সহেনা মনে গোপনে কি নেশা জাগিল,
দেহটায় কি যেন চায় সারাগায় অদেখায় কি আগুন লাগিল,
ধীরেধীরে শেষে কেমন যেন বদলে গেলাম আমি,
কেন ভাবনাতে নেই কোথায় কেমন আছে প্রিয় মোর বেচারা স্বামী,
জানিনা কখন কেমন করে অন্য একজন মোর মনের ঘরে গোপনে দিলো হানা হলো বেশী দামী,
পরম শ্রদ্ধাভাজন,
কোন নেই তুলনা যার এমনই একজন,
হতোনা যার সনে যদিও কখনো তেমন কোন কথোপকথন,
ঐ ভাসুর আমার মাটির মানুষ ঠিক তেমন একটা কাঠের পুতুল হয় যেমন,
তবু কেন জানিনা কেমন যেন এক মমতায় ভরে হেথা গিয়ে হায় থাকিত পড়ে মোর তৃষিত তাপিত মন ॥
গহীন রাত দুপুরে,
কে যেন হাহাকার করে,
আমার নিরব বিজন মনের ঘরে,
ক্ষোভে ও অভিমানে মনটা থাকে ভরে,
তড়িঘড়ি ব্যস্ত যে মানুষটা ধুমধাম বিয়ে করে,
শিহরণ আর শুড়শুড়িতে কানায় কানায় এ দেহটা ভরে,
দিয়ে জাগিয়ে আমারে রাগিয়ে চলে গেলো ঠিক একমাস পরে,
মাতাল যাদুর নেশায় আমারে মাতায় অসার দেহটার জানোয়ারটারে,
ইচ্ছে করে মন চায় শাড়ীর আঁচল পেচিয়ে গলায় আমি তারে টেনে আনি ধরে,
কিনে দিয়ে গেলো দামী একটা এনরয়েড মোবাইল,
ঘুমন্ত সে ষাড় গরুটা লাফিয়ে দাপিয়ে আমি উঠেছি হাপিয়ে ছোট্ট জমিনের মোর ভাংগিল চারখানা আইল ॥
সেজন ছিল এমন অন্য জগতের যেন অচেনা কেউ,
শান্ত মৌন যদিও মনেহয় অন্তরে বহিছে বুঝি কোন অজানা লুকানো অশান্ত ঢেউ,
মানুষ একজন বোবা ও বধীর,
নেই দূরন্তপনা ঘুরঘুর গুনগুন ভনভন ধীরস্থীর,
কেজানে কেন সে নহে মধুর এমন অতি ব্যথাতুর যেন কষ্টে অধীর,
কোন কারণে সে সবারে করেছে পর হয়েছে এক ধূ ধূ বালুচর যেন এক মরা নদীর,
এমন মানুষ একজন আনত নয়ন দেখিনি কখনো জীবনে আমি এত বেশী নিরব রাশভারি ও গম্ভীর,
আপন জন কাছের মানুষ তবু মনেহয় যেন সে কারো নয় নিঝুম বিজন এক গহীন বন প্রান্তহীন বহুদূর ॥
মোখে কোন হাসি নেই,
কোন সোরগোল কিবা সাড়া কিছুতেই,
কি বলিতে যেন কি ভুলে যায় শুধু হারিয়ে ফেলে তার খেই,
জানিনা কেন তার জীবনে সুখ আনন্দ নেই কোনকিছুই তার যেন নহে প্রসন্ন মধুর,
লুকানো চিকন কত কষ্ট যেন তার অতৃপ্ত মনে নিরবে গোপনে বাজে পরাজয় কিবা করুণ ব্যর্থতার সুর ॥
মলিন বদন,
সারাক্ষণ যেন বিষন্ন মন,
রঙ ও সুরহীন এক বিবর্ণ জীবন,
বলেনা কাউকে তা করিছে সবই গোপন,
কোন কারণে নিভৃতে সে করিছে অশ্রুহীন অস্ফুট রোদন,
কভু হাসিবে না কারেও ভালো বাসিবে না বুঝি করেছে সে এই পণ,
কেন সে হয়েছে এমন বিমূঢ় বিধুর যেন অসীম দুঃক্ষবেদন তার প্রতিদিন সারাক্ষণ,
কেজানে হায় দারুণ খড়ায় ফেটে চৌচির কোন তাড়নায় যেন ভিতরটা তার হয়ে রহে সদা ভরপূর ॥
নাই তার কোন বায়না,
তেমন কথাবার্তাও সে কয়না,
ঘর ছেড়ে বাহিরেও সে কেন বেশী যায়না,
মোখফুটে তার মা কিবা আমার কাছে কভু কিছু চায়না,
কি রোগ তার কোথা পাবো সে ডাক্তার কেন ঠিকমত সে নায়না খায়না,
সে কেনরে মোর দেবর হলোনা,
হয়ত তাহলে আমি জানিতাম সব শুনিতাম না তার কোন মানা,
তার কাছে গিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে জোড় করে ধরে কিবা টেনে এনে তার হাত দুখানা,
রহিতে দিতামনা দূরে হয়ে এমন পর, এমনি করে অনেক খবর অনেক কথা হয়ত যেতো সহজে জানা ॥
বড়ই বেহায়ার মত,
কেন হই আমি আহত মর্মাহত,
তবু বারবার কেন ঐ একই ভাবনায় রত,
গোপনে মনে মনে অভিসারিনী সাজিলাম কেন আপনা,
তার সনে আমরা দুজনে বাপের বাড়ী শ্বশুড়বাড়ী যাওয়া আসায় ছিলনা মানা,
পাশাপাশি বসা গায়ে গায়ে ঘষা তার দেহের সুবাস আমারে করিত আকূল উদাস উঞ্চ মধুর ঐ পরশখানা,
উঠতে নামতে মাঝেমাঝে সে আমার হাতধরা,
এলোমেলো পোষাকে ও চুলে তার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়া,
দেহটা দিয়ে ছেড়ে বাহনের ঝাকুনিতে দুলেদুলে ইচ্ছে করে ভাসুরের গায়ে ঢলে পড়া, বারবার তার হাত দুখানা,
ভালো লাগে যখন আমারে বারবার সোহাগে জড়িয়ে ধরা শাড়ীটা ঠিক করা আচমকা খসে পড়া আঁচলটা বারবার তুলে টানা ॥  
সে করে ইসপিস আর আমি আনচান,
এ দেহটা আমার ভিতরে ভিতরে ভেংগেচূড়ে খানখান,
চুপি চুপি বহুরুপী এক রুপসী তার দাদার অন্তর গহীনে দিতে চায় দারুণ উঞ্চ মধুর মাতাল হানা,
কি লোভে কি আশায় হায় হায় কি উপায় এখন অভিসারি কেন মোর পানে একবার ফিরেও তাকায়না,
তা কেমনে হয় যে তার স্বামী নয় সমূহ আপদের ভয় কেন এমন হলো তার ভাবনা ও পেরেশানি তাড়না,
ক্ষেপেছে বেহায়া মন,
করছে মোরে সারাক্ষণ জ্বালাতন,
বুকভরা হাহাকার দিচ্ছে শতবার এমন ইন্দন না না, এ ব্রত হতে কভু ফিরে আসা কিবা হেরে যাওয়া যাবেনা ॥
কেন সে বুঝেও বুঝেনা,
ছাড়বোনা হাল, দেখবো কোথা তার শেষখানা,
মনে মনে ঠিক করিলাম এইবার দেখাবো মজা মানিক সোনা,
শ্বাশুড়ীকে বলে এসেছি মা এবার আমি ৪/৫ দিন বেড়াবো সে করেনি মানা,
ভাইজান আমাকে নিয়ে যেতে নিয়ে আসতে দুইবার যাওয়া আসার কি দরকার উনিও কি থেকে গেলে হয়না,
আমার কোন অসুবিধা নেই মা, তোমার ভাইজানকেই বলো কেজানে তার কোন কাজ কিবা অসুবিধা আছে কিনা ।
বাড়ী এলাম মাথায় এখন নব তাড়না,
বুঝিলাম আমার মায়ের মাথায় ঘুরছে কোন্ ভাবনা,
মেহমান থাকলেওবা কি আমি দেখবো তার তাবেদারি কিবা খানা,
আমার ভাসুর থাকলো কি চলে গেলো তাতে মা আমার কোন অসুবিধাই হবেনা,
মাকে বললাম মা তুমিনা বলেছিলে মামার বাড়ী যাবে তাহলে এবার নাহয় ঘুরে আসোনা,
এ নিয়ে তুমি কিছু ভেবোনা, তাছাড়া মা ময়না আছেনা, তবে মা ৪/৫ দিনের বেশী যেন সেখানে থেকোনা ॥  
অপেক্ষায় কখন আসিবে রাত,
নিশ্চয় করবোই জয় হবেই হবে বাজিমাত,
হয় আপোষে হার, চলবে নাহলে দন্দ লড়াই ও সংঘাত,
ভাসুর আমার ঘুমিয়ে,
ঐ ঘরে গিয়ে তার যখন বুকেতে লুটিয়ে,
পড়লাম শুয়ে স্বামীর বুকেতে স্ত্রী যেমন,
এক তৃষিত ক্ষুধার্ত ক্ষিপ্র ক্ষিপ্ত অক্টোপাশের মতন,
জড়িয়ে পেচিয়ে পরম সোহাগে ভুলে গিয়ে কূল মান জাত,
ইস মোর আরামের সাম প্রিয় কোল বালিশ দিয়ে এমনি ছড়িয়ে দুই পা দুই হাত,
দেখিব কতদূর তার সততার অহংকার করিতে কূপোকাত হয়েছিল সে ফন্দি আঁটা উঞ্চ মাতাল ভালোবাসার জালবোনা ॥  
ছেড়েছি ভয় লাজ,
কত পথ উপায় ধরেছি আজ,
কত মহড়া চোখেচোখে প্রহরা কত সাজ,
কি করি বলো ধীরে ধীরে সে হলো মম শিরতাজ,
কেমনে সে ঢুকিল ঘরে পেলো সিংহাসন হলো মনের রাজ,
কত অভিনয় বাহানা এমনিতে নেই, গায়ে মনে গছেনা কোন ঘর কাজ,
প্রতিদিন বানাই নতুন কর্ম ছক পাতি নয়া জাল, মোর নয়ন মন হয়ে রহে মোহতাজ,
অদুটি নয়ন পিছুপিছু তার সারা দিনভর,
চোখের উপর দেখাশোনা সবকিছুতে খবরদারি ও খোঁজখবর,
স্নান ও আহার করিছে দেখভাল সবহাল রাখিছে খেয়াল আলনা বিছানা পরিপাটি ভাজ,
কেমনে হলেম আমি এতই বেলেহাজ,
এলোমেলো হয়েছে সব মোর নিজের ও ঘরকাজ,
ঠিকঠাক আছে শুধু রুপ সাজ, ভালো লাগে নির্জনতা কেউ ঘরে এলে যেন মাথায় ভেংগে পড়ে বাজ ॥
কেন এমন ইচ্ছে করে,
মন চায় দুহাতে তারে জড়িয়ে ধরে,
যে কোন ছুতায় তার বুকেতে সে ঢলে পড়ে,
নিজেরে খুলে তারে দেখাই,
শুড়শুড়ি দেই বাসনার উঞ্চ পরশ ভরাই,
লাজ ভয় ধুয়ে মুছে যেন একাকার হয়ে যাই ও সুখ পাই,
সে কোন নেশার ঘোর করেছে তারে হেন মত্ত বিভোর,
আলো নেই কিছুতেই বন্ধ হয়েছে যেন মনের ঘরের সব জানালা দ্বোর,
মনেতে সে বাসনা প্রবোধ না মানা দেহখানা তাই খেলিছে মাতাল ঐ খেলা সারাবেলা চোর চোর,
তার কোলে মাথা রেখে ঐ মোখ দেখে দেখে আমি রঙে ডুবে রসে চূবে তার মাঝে একেবারে হারিয়ে যাই ॥
বিশাল এক দোতলা নতুন বাড়ী,
লৌহ ফটক ও প্রাচীর গেছে একমাথা উচ্চতা ছাড়ি,
কভু যেন কারো কাছে এ কথাটি না মনে হয়,
সাত কামড়া পাঁচবাথ তিন বারান্দা প্রসস্থ্য ভোজনালয়,
টাকা ও রুচির কাছে কোন সখ বা প্রয়োজন যেন অবহেলায় না যায় হারি,
যখন নিঝুম বিজন সারা ঘরে বাসিন্দা শুধু আমরা দুজন মম বাসনারে কেমনে হারাতে পারি ॥
নানা ফুল ও ফলের গাছগাছালী,
শোভা আর সৌরভে রয়েছে ছড়ানো ছায়া মেলি,
ঝিঝিরা বাঁশরী বাজায় নেঁচে নেঁচে গান শোনায় নানা পাখপাখালী,
নিরব নিঝুম ও বিজন,
সারা বাড়ীতে মানুষ মোরা তিনজন,
বুড়ো শ্বাশুড়ী কুমার ভাসুর আর নয়া বৌ টসটসে যৌবন,
পৌষের কুয়াশার ঘের যেন উঁচূ খাড়া এক নতুন খেড়ের পাড়ার মতন,
নয়ন পাগল করা মধু ঠেসে ভরা, কেমনে যাই ছাড়ি হেন মাঝারি পিনোন্নত দুটি স্তন,
সুখ পাই সংগীরে মাতাল করিতে চাই তার নাকেমোখে চেপে ধরে যখনই সে লগন আসে চাহে মন,  
স্বামী বহুদূর রাতগুলি কাটে অধীর হুতাষে দারুন ক্ষুধাতুর আর বিরস ভাসুর শুধু শুয়ে থাকে তার ঘরে একা সারাক্ষণ ॥
শ্বাশুড়ী,
পঞ্চাশোর্ধ আধাবুড়ি,
ঘরে তার একটুও মন বসেনা,
কে করিবে তারে কেনইবা সে শুনিবে মানা,
সংসারের নেই কোন দায়,
এবাড়ী ওবাড়ী শুধুই সে ঘুরে বেড়ায়,
হাসি তামাসার গল্প করে আর বসে চা-পান খায়,
এটা তার অতি পূরাতন অভ্যাস কে তারে আর এখন ফেরায়,
একটা কাজের মেয়ে এসে সকাল ৮টা থেকে চলে যায় দুপুর ১২টায়,
কূটাবাটা ধোয়াধায়ী ঝাড়ামোছা আলনা বিছানা গুছানো ও ঘরের সবকাজ করে দিয়ে যায় ॥
রান্নার দায়ভার,
মাঝেমাঝে শ্বাশুড়ীর ও হামেশা বৌমার,
রান্নাঘরে আছে বড় আকার একটা শিন ও একটা এলপি গ্যাস সিলিন্ডার,
কত সুখ ও আরাম নতুন বৌ এর,
চারিদিকে তার নিরাপদ আবরু ও মোটা পর্দার ঘের,
এত রঙ এত আলো তবু যেন নেই ভালো কিছুতেই সনে ঐ বাতাসের,
অন্তরালে ভেসে ভেসে চলে, কথা নাহি বলে গোপন আঁখির জলে শূন্যতা আর বীরহের,
করুণ শুর বাজে, এ দেহটার আছে ক্ষুধা অনটন হাহাকার নাবলা অদেখা কষ্ট যার পূরো এক সের,
স্বামী না থাকিলে পাশে, কদিন আর মানুষ বাঁচে উপবাসে, বাইরের বিনোদন সেকি ভরে মন হয় ঢের ॥
ঘরে বিশাল রঙীন টিভি ও ডিস,
মোবাইলে ইন্টারনেট ফেসবুক ইউটিউব কতমজা ইস,
বেলী হাস্নাহেনার গন্ধ নিশাচর পাখী যায় ডাকি ডাকি ভোরে দোয়েলের শিস,
জীবনের এত আয়োজন তবু শোভিত হলোনা কেন মন তার কি প্রয়োজন পেলামনা সুখের হদীস,
মন বলে নিত্য রাত নিঝুম হলে,
ঐ নিরালায় আমরা দুজনায় ছাদে মাদুর পেতে হরষে মেতে তার কোলে মাথা রেখে ঘুমাতে দিস ॥
আইপিএস জেনারেটর,
ওয়াটার পাম্প, রিজার্ভার ও মটর,
কত আয়োজন আর বিনোদনভরা ছিলযে ঐ ঘর,
কেন মোখেতে হাসি আর ভিতরে তার বহে যেন এক দামাল ঝড়,
যদি না পায় নারী, উঞ্চ চাওয়ার কাছে যায়গো হারি, স্বামীর সোহাগ ও আদর,
সবকিছু যদিও মনেহয় ঠিক আসলে ঠক ও অনাবশ্যক আর সবাইকে যেন তার হেন দূষমন সম পর ॥
টয়লেট বাথরুম রান্নাঘর,
বিশাল খাবারঘর সবকিছু রয়েছে ঘরের ভিতর,
কি নাই, কি চাই বলো কি দরকার,
বাথরুমে আয়না ও বেসিন আধূনিক ঝর্না বা সাওয়ার,
কাপড় শুকাতে ছাদের উপর টাংগানো রয়েছে বিশাল বড় তার,
ছাদের রেলিং ঘেষে চারিধার সারি সারি রয়েছে টবে শত ফুলের সমাহার,
গভীর রাতে জোছনা কিবা তারকার আলো গায়ে মাখাতে ঘুরে বেড়ানো ধরে হাতেহাতে কত মজার,
তবু ঘরের বাহিরে রয়েছে লম্বা রান্নাঘর একখানা দোচালা,
ষান বাধানো কলতলে গোসলখানা রয়েছে একখানা আধাপাকা উপরে যার খোলা,
আহা কত সুখ আর সুখ,
কেজানে তার ভেদ কে কার খবর রাখে কার মনে কত ক্ষেদ কি অসুখ, ভিতরে ভিতরে পুড়ে খাক হয়ে আছে কার বুক ॥
আমার রুপে মজেনি তার মন,
ছোট ভাই পেলো সুন্দরী বউ একজন,
শুধু কি আছে বলে সামর্থ্য তথা অর্থ বা ধন,
বিদ্যা অমূল্য ধন যূগ করেছে প্রমাণ মিথ্যে সে বচন,
কত তার প্রাপ্তি, সুবিশাল ব্যাপ্তি বিচরণ ও কতনা সাধন,
বয়সে বিদ্যায় কত কম তবু সবকিছু তার মনোরম কি কারণ,
কেনো এলোমেলো অগুছালো হলো বা রয়ে গেলো আমার জীবন,
জীবনের এই না পাওয়া কিবা অনিয়ম, কজনে মেনে নিতে পারে কিবা চান,
নিজে নিজে তাই তার হতেই পারে প্রতিযোগিতার দৌড়ে যে হারে হেন ক্ষোভ কষ্ট বা অভিমান ॥
অ ভাইজান,
আপনারা দুভাই কি তবে তাই চান,
কি ভেবেছেন, আমি কি একখানা কাঠের পুতুল কঠিন পাষান,
আউলা কেশ,
আলুথালু পাগলী বেশ,
স্তনের উপর ছিল শুধু ব্রেসিয়ার,
উপত্যকায় খাড়া দুখানা সুদরশন পাহাড়,
ইচ্ছে কৌশলে ফেলে দিয়েছিল দেখাতে সে বাহার,
বুকের উপর থেকে নাকি বেখেয়ালে আঁচলখানা পড়ে গিয়েছিল তার,
আমি ঐ পোষাকে,
জড়িয়ে ধরে বুকে দুহাতে তাকে,
কাঁদো কাঁদো শুরে বলেছিনু তারে ভাইজান আমারে বাঁচান,
দুকদুক করে লাফানো বুক, কাপড় তলের লুকানো দুষ্ট সুখ আর জাতকূলমান ॥  
এ ঘর ছেড়ে আমি যাই অনেক দূরে চলে,
নাম লেখাই শেষে ঘুরি দেশে দেশে পাগলের দলে,
পড়ি ঝুলে নহে ভুলে, ইচ্ছে করেই কোন পরপুরুষের গলে,
তুষের অনল ঢেকে রেখে আঁচল তলে,
পরের সুখ দেখে নাঁচি আর এমনি বাঁচি আমি হুতাষে বিফলে,
কিসের বন্ধু ভাই ও আপন, তাদের কি প্রয়োজন যদি আগুন হতে না নেয় মোরে তুলে,
পথ না পেয়ে শেষে নাহলে, মরব আমি কলসী বেধে গলে কিবা ফাঁসীর দড়িতে ঝুলে ॥
কি লাভ তাদের হবে তাহলে,
যদি আমারে এ সমাজের সবে কথায় মারে বেহায়া বেলেহাজ ও কলংকীনি বলে,
আমার আবার কিসের মানসম্মান, সহসা আমি করিব প্রাণ বিসর্জন দেবো বলিদান ॥  
আপনি আমারে বলেন,
দেখতে নাহয় আমার সংগে চলেন,
আমি কি একটা কাঠের পুতুল,
যদি চাই কিছু সে কি তবে হবে আমার ভুল,
আমার মিনতি বলেন তাতে কি ক্ষতি, তবে করুন আমারে কবুল,
কি সে সুধা মিটিবে চোখ মন ও দেহের সকল ক্ষুধা, কি মিঠা রসেভরা তা কত তুলতুল ॥
বন্ধু তোমার ওগো মনের দুয়ার খোল,
যে যাই বলুক, বয়স আমার যেগো ষোল,
কানুন বিধান কিবা দুজনার সব ব্যাবধান ভোল,
আঁধার কূপ হতে টেনে দুহাতে আমারে তুমি ধরে তোল,
আমায় নিয়ে কোলে বসিয়ে প্রেমের সোহাগ মাখিয়ে মধুর দোলনায় খেতে দুজনে মজার দোল ॥
চার মাস কবেই হয়ে গেছে পার,
তৃঞ্চায় ছটফট ও ক্ষুধায় হাহাকার,
আমি নিজেরে বাধিতে পারিনাযে আর,
আজ হতে নাহয় আমি হলেমগো শুধুই তোমার,
আর কত পরীক্ষা ধর্য্যের এ সফরের ছুয়েছে দিগন্ত পার,
এ ভুবন আমার যেন নিদহীন বিষাদের এক কালো পাহাড়,
চারিধার ঘেরা যার শুধু আঁধার আর আঁধার,
দুঃসহ যাতনা দহন কষ্ট বেদনা, বহন ও সহনের সীমানাটা কবে হবো পার ॥
আর কত ভয় লাজ,
বৃথা মোর এই দেহ সাজ,
রাঙা বসন অংগ ভূষন পরিপাটি ভাজ,
কি প্রয়োজন এত ধন আর জীবনের এত কারুকাজ,
কি নেশায় রাখিল হায় ভোগের দুনিয়ায় সবারে মাতিয়ে মহারাজ,
এ কোন মোহমেলা যাদুর খেলা সারাক্ষণ নয়ন ও দেহমন ওরে কিসের মোহতাজ,
বহিছে বেলা,
এখনই ভাংবে রঙের মেলা,
শেষ হবে সব মজার খেলা, ঘনিয়ে আসিছে ঐযে ঘন কালো সাঁঝ ॥
অনেক রিহার্সেল মহড়া,
টকঝাল তিক্ত নোনতা ও মিঠে কড়া,
কত অভিনয় আর টানটান শত মান অভিমান ভরা,
মৌচাক কি হবে আর রেখে দিয়ে ঢাক, অবারিত থাক মৌবন পসার ও পসরা,
চমকে দিতে নয়ন,
শিহরিত করিতে তার মন,
অংগ শোভা ভরা টানটান তপ্ত যৌবন,
করেছি নানা কৌশলে শত সে বাহার তারে প্রদর্শন,
জানাতে মনের কানাতে জাগাতে উঞ্চ প্রেমের আবেদন নিবেদন ॥
অগনিত রাত দুপুরে,
মাতাল হয়ে দামাল নেশার চূড়ে,
থাকতাম শুয়ে অর্ধ নগ্ন গায় মোর খাটের উপরে,
ক্ষুদ্র স্বচ্ছ পোষাক, বারোআনা দেহটার দেখা যাক পরিধান করে,
দরজা খোলা যেন দিশেহারা আপন ভোলা অল্প বস্ত্র নাভীর নীচে ও হাটুর উপরে,
ভাবটা এমন যেন ঘুমে অচেতন, উজ্জল বাতির নীচে হাতপা ছড়িয়ে আমি থাকতাম পড়ে,
দুস্তনের মধ্যখানে, কেজানে যদি সে মাতাল দরশনে ও আশায় মধুলোভে সে কভু আসে আমার ঘরে ॥
এমন ঐ যাদুর পোষাকে,
যে দেখে মনেহয় যেন দুহাতে তারে ডাকে,
প্রায়ই রাত দুপুরে,
উপুর হয়ে তার দেহটার উপরে,
সিথানে পৈথানে তার বিছানায় ঘুরে ঘুরে,
নূয়ে নূয়ে যেন আধো শুয়ে ঐ সোনার খাটের চারিধারে,
মশারি টানিয়ে গুজে দিতাম মন চাহিত চুমো খাই তারে জড়িয়ে ধরে,
সেদিন যখন শুধু আমরা দুজন, আর কেউ নাই সারা বাড়ীতে এই পূরোটা ঘরে,
ভয়ে নহে সরমে হতেম পাথর, তবু ক্ষুধায় কাতর মোর দেহটার ভিতর এলোমেলো ঝড়ে,
যেভাবে হিংস্র বাঘ সবল থাবায় ধরে তার শিকার,
এই আশাতে যদি সোহাগ মধুর ঐ সে লৌহ পরশ আমিও পেতাম তার,
আমারেও সে তেমনি করে খাবে ধরে,
ইচ্ছে করে আমি বুঝিতাম, জেগেও যেন সে মরার মতই থাকতো পড়ে ॥
এ ঘরের ত্রিসীমানায়,
কে যে কখন আসে আর যায়,
কোন কাজে ব্যস্ত থাকে কখন কোথায়,
সবকিছু মোর জানা ই ছিল সাজানো এ মাথায়,
নির্জনতায় নানা দুষ্টুমির বুদ্ধি পাকায় ঘুরপাক খায়,
পাতলা শাড়ীর আঁচল ঢেলে দিয়ে জল ভিজা সারা গায়,
কামড়ে লেগে থাকা বুকের উপর ভাজেভাজে দারুন নেশা জাগায়,
ঘর থেকে গামছা তোয়ালে পেটিকোট ব্লাউজ ব্রেসিয়ার যখন সে যাহা চায়,
গোসলে পিঠ কঁচলে বা ভিজা পিঠ মুছে দেওয়া যার অনুরোধ বা ফরমায়েশ পায়,
ব্রা পরিয়ে বা তার হুক লাগিয়ে ও কাঠি দিয়ে পিটিয়ে চুল শুকিয়ে দেওয়ার উছিলায় ॥
দারুন মজা পিঠের ঘামাচি খুটায়,
সোহাগ মালিশ ঘার কাধ পিঠ মাথা ও কোমড় ব্যাথায়,
দেখাতো অবলীলায়,
শত রুপ ভাজেভাজে তার অর্ধনগ্ন গায়,
শীতল এক পাথর মহলে আগুন লাগাবার বাসনায়,
গোপনে তলেতলে,
এমনি কত মিথ্যা বলে বলে,
ঐ মোম দেহখানি তার যেন যায় একেবারে গলে,
দহন লীলায় মজার খেলায় আমি তার গায় পরতাম সুযোগ পেলেই নানান ছলে ॥
সফল হয়েছি শেষটায়,
তৃষিত মনের উগ্র দুষ্ট বাসনায়,
অযথা অকারণ তারে কত খাটিয়েছি হায়,
এ কি করেছি আমি মাতাল নেশার সে তপ্ত তামাসায়,
আজ মনে পড়ে মোর কষ্ট লাগে, হাসি পায় ও অনুতাপে মোরে খায়,
নেশা জাগাতে যখন তখন দিনে কি রাতে, তার হাতে আমি কত কাজ করিয়েছি হায় ॥
এই করে করে,
তারপর বহুদিন পরে,
চলছিল যে মহড়া লক্ষ প্রহর ধরে,
যেদিন পাহাড়ী ঢলে গোমতির বাঁধখানা ভেংগে পড়ে,
দুটি দেহ দুটি মন হলো একাকার,
শেষে দুজনেই একদিন আপন হলেম দুজনার,
মানিলাম পোষ বলো আর কি দোষ কার তাই মানিলাম হার,
গুনাহগার, পার পেয়ে বিধাতার রোশ সব দোষ জানিনা পাব কিনা তার অপার করুনা ও ক্ষমার ছাড় ॥
বহু কাঠখড় পুড়িয়ে,
চড়াই উৎরাই গড়িয়ে গড়িয়ে পেরিয়ে,
শেষে বাধিলাম জোড়,
অবারিত হলো দুজনার দ্বোর,
এ কোন পরশ যাদুর বিনিসূতার ডোর,
পরম মধুর কানায় কানা ভরপূর ঐ সে নেশার ঘোর,
হবে কষ্ট বেদনার অবসান আঁধার কেটে আসিবেই ওরে সোনালী ভোর,
আপন ভুবনে আপনার ঘরে দুজনেই বন্দি, চলছিল যে খেলা যেন সারাবেলা চোর চোর ॥
আজ আমার ভাসুর,
অতি কাছের মানুষ অতিশয় মধুর,
কত স্বপ্ন আশা আর উঞ্চ ভালোবাসা মধু ভরপূর,
হাত বাড়ালেই পাই, যখন যেমন যাহা চাই কোন বাধা নাই তা নহে বেশী দূর,
বন্ধু পতি পরম আপন অবলার গতি সুজন সুমতি মম বুকভরা সুখ স্বপ্নের শান্তিপুর ॥
মজিলাম আমি এ কোন হিংসায়,
কেন নামিলাম আমি নোংরা প্রতিযোগীতার সে খেলায়,
মেয়েদের মাঝে ছিলেম আমি সেরা রুপসী,
সে রুপ দেখছিল সবে কাছে ও দূরে নিরবে বসি বসি,
ছেলেদের মাঝে ছিল ভাসুর আমার,
দুতিন বছরের বড় আমার এক চাচাতো বোন প্রেমে পড়ে গিয়েছিল তার,
একথা শুনে কেন গোপনে কোন কারণে চটিল চিত্ত আমার,
নৃত্য না করে উঠেছিল জ্বলে তেলেবেগুনে, জানিনা কোন ক্ষনে কে কেমনে আমার মনে বপিল সে ভয়ংকর বীজ হিংসার ॥
একদিন তারপর,
ভাসুর আমার ছাড়িল বাড়ী গেলো শহর,
বৌ গেলো তার বাপের বাড়ীতে নাইয়র,
কত রটনা নিন্দা গল্প, নহে অল্প তার পরিসর,
ভাসুর হলো স্বামী আর স্বামী হলো তার দেবর,
এখন কে কেমন কোথায় আছে সে খবর ভয়ংকর,
নেই কারো কাছে, হয়ত রটেছে সবখানে এ খবর,
বড় ছেলে বাড়ীঘর ফেলে নিরুদ্দেশ দুভাই দুজনার হলো পর,
ছোট ভাই স্বামী তার এলোনা বাড়ীতে আর, হলো পার তিনবছর, কেউ জানেনা কি হয়েছিল তারপর ॥
কেন তুমি তুলে দিলে ঝড়,
বলো আমি কি মানুষ নাকি পাথর,
এ কি কান্ড বাধালে,
জুড়ে দিলে মোরে গাধার পালে,
বাড়ীঘর ফেলে এখন আমি বনে গাছের ডালে,
ভেংগে হলো দুই এক সোনার সংসার ও একখানা ঘর,
ভাই আর নহে ভাই, পাপেতে জড়াই হলো জনমের দূষমন সম পর ॥
তারা দুজনেই সুন্দর,
ছেলেটার একটা চাকরী হবার পর,
ঢাকায় গিয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে করে কোর্টে বিয়ে বেধেছিল ঘর,
আজ গোঁধূলী সাঁঝের বেলা,
পিছনে রেখে ফেলে শত রঙের মেলা,
কত মজার কত সে বাহার মনের খেয়াল মত দেহটার দামাল খেলা,
পারের আশায় বিজন পারঘাটায় দুহাত বাড়িয়ে রয়েছি অকূলে ঠায় দাড়িয়ে ॥
ভয়ংকর এক দাবানল,
কেমনে কে দিবে এসে তাতে ঢেলে কিছু জল,
তা কভু হয়না সফল পুড়ে করে ছাই রিপুর দামাল তাড়নার ঢল,
বাঁচিবার আর কোন পথ বা উপায় নাই, দুই জীবনই বুঝি তাই তার হয়যে বিফল,
ভয়াবহ ক্ষতি,
নাহলে সুবোধ সুমতি,
কি তার পরিনাম ও পরিনতি,
কেজানে হয় শেষে কার কোন দূর্গতি,
না মেনে ধর্ম্ম আপনার কর্ম্ম আপনারে করে ছারখার তল,
কঠিন সে পরীক্ষায় যেজন হেরে যায় ত্রিগুনে বাড়ে তার ঋন দায় রহিতে পারেনা অটল অবিচল ॥  
যে অনলে নিমেষে সিসা যায় গলে,
দহন লীলায় পড়ে রিপুর কবলে ও তার ঐ রাক্ষুসী ছোবলে,
মাটির কোটরে যে ঔরস কে করিবে তারে বলো প্রসমিত বশ দলে পিষে পদতলে,
ইসলাম চায় শান্তি ও কল্যাণ,
মেনে চলা চাই সব অনুশাসন ও বিধিবিধান,
ভূলের পরিনতি ও মাসুল ক্ষতি দিয়ে হয় যার অবসান,
নারী পুরুষের প্রয়োজন সদা এমন এক নিরাপদ দূরত্বে করা অবস্থান,  
শূন্য হয় শেষে চারকূল হারিয়ে আর কিছু তার পাবার নাহি রয়, নেই যার কোন পূরণ কিবা সমাধান,
দুজনার দৃষ্টির বাহিরে, যেথা কোন উঞ্চ সোহাগ পরশের অবকাশ নাহিরে যেন রহে দুজনের দেহখান সম্ব্রম ও সম্মান ॥