এ তোমার বিবাহের বায়না ॥
কি লাগে কি চাই তোমার লাগি,
এ ফর্দ আমি বানিয়েছি কাল রাত্রী জাগি,
যদি ঢাকা গিয়া করতাম বিয়া আমরা দুজনে গোপনে ভাগি,
সে ওতো মানুষ মমতা ও মানবতায় ভরা তোমার বাবা হোকনা যতই রাগি,
হতো বিয়ে কোর্টে কিবা মসজিদে যেয়ে, এত ঝামেলার চেয়ে সে কি অনেক বেশী ভালো ছিলনা ॥
বাবামা গুরুজন,
শ্রদ্ধাভাজন পরম আপন,
স্বপ্ন আশায় ভরা তাদের ঐ মন,
তুলতুলে এমন নরম কাঁদা মাটির মতন,
তাতে চাপ পড়ে কোন ছাপ লেগে যায় যদি থাকে যা আজীবন,
না না, মানুষের মন ভাংগাতো ভালোনা, খোদার ঘর ভাংগার সনে হতে পারে যার তুলনা ॥
শুধু ভালোবাসার মোহ আর মধুটা ছাড়া ,
চোখের যাদু মনের ক্ষুধা মনের টান পরান কাড়া,
নারী পুরুষ দুজনেই প্রেমেতে বেহুষ,
শ্রেষ্ঠ হবার কেমনে দাবীদার তারা না হয়ে মানুষ,
বন্ধুর কাছে বন্ধু কেউ মরা নদী কেউ সিন্ধু মনটা ছাড়াতো আসলে আর কিছুই তারা চায়না ॥
আস্থা আর নির্ভরতা,
সে এক শান্তি সুখের বারতা,
দুঃখ বেদনার অজানা শত গোপন কথা,
ঐটুকু ঠাই আর কোথাও নাই, দেশে দেশে ঘূরে বেড়ায় মন যাহা চায় তা কেন সে পায়না ॥
খেয়ে কিবা না খেয়ে থাকে,
কষ্ট বেদনাগুলো আড়ালে লুকিয়ে ঢাকে,
সোহাগে আদরে বুকেতে ধরে ও কোলে তুলে রাখে,
একটুখানি ভালোবাসা,
কত রঙীন স্বপ্ন আর মধুর আশা,
পাতার ঘরে জোছনার ঝিলিক ঝড়া নিঝুম বাসা,
পায় কি না পায় সে প্রতীক্ষায় মাটির বিছানায় ভালোই দিন চলে যায় আর কোথাও যায়না ॥
দুপুর গড়িয়ে যায়,
ক্লান্ত দিনের ফুরানো বেলায়,
চুপচাপ বারবার ফিরে ফিরে তবু চায়,
বলিতে বাধে অল্প বিষাদে কি যেন বলিতে চায়,
মলিন প্রদীপ ক্ষিন শিখা একটুখানি তেল যদি সে পায়,
ক্ষুধায় কষ্ট পায়, বুঝালে বুঝেনা কে তারে আর বুঝাতে যায়, তবু কেনযে খায়না ॥
এক বালিশে ঘূমায় দুখানা মাথা,
নড়বড় ছোট্ট চেকির উপ হোগলার বিছানা পাতা,
শিয়রে ঝুলানো ছিন্ন মলিন মশারী পৈথানে একখানা কাথা,
প্যাচা ও বাদুরের দল সংগে থাকা,
নদীর পারে বিজন কাঁশবনে শেয়াল ডাকা,
তারা দুজনে একা বুঝি করেছে জয় নেই কিছুতেই তাদের ভয় ভাবনা কি যাতনা ॥
দেখিতে আকূল হয়ে রয় মন,
জানিনা সে আসিবে কবে ও কখন,
পথ চাওয়া আর বসে কালগোনা সারাক্ষন,
চনমন টনটন বিগলিত দেহটার সোহাগ শিহরণ,
এমনই জ¦ালায় তাহারে পোড়ায় সারা গায় অদেখায় অস্থীর ছটফট পেরেশানি তাড়না ॥
যখন কোন কাজ নেই হাতে,
বিষন্ন বিকেল ফুরফুরে সোনালী প্রভাতে,
বিজন ঘরে শূণ্য বিছানে ঘূম আসেনা আখিপাতে,
তার কি নেই প্রেম সে পরান জোছনা রাতে শোনায় গান তবে কেন সে গুনগুন গায়না ॥
রাগ করোনা দেবো গড়াই,
দেখিও ভাল করে থলেতে কি আছে কি নাই,
দুঃক্ষ পেওনা কালই কিনে পাঠিয়ে দেবো বাদ পড়া কিছু তাই,
লাল রেশমী চুড়ি ও লালফিতা,
চওড়া জড়ির পার লালশাড়ী ও আলতা,
বেলীফুলের মালা ও একখানা সোনার নাকফুল,
দেখতে সোনার মত হেন পিতলের নোলক টায়রা ও কানের দুল,
আমি যদি তোমার বন্ধু হই,
যাবো তোমারে সোনাইমুড়ির মেলাতে লই,
অ মোর বুলবুলি টিয়া ময়না কথা দিলাম হলেও বাকী তা নহে ফাঁকি কিবা শুধুই সান্তনা ॥
যাই হোক কমবেশী দাম,
বাক্স ভরেই সব কিনে পাঠালাম,
চুলের খুশবো তেল,
বড় খোপা ও লম্বা বিনূনী বাধার টারসেল,
ছোট ও বড় ব্লাউজ পেটিকোট তোয়ালে ও সেন্ডেল,
কপালের টিপ চোখের কাজল ও কুমকুম,
কত ঢং ঠোট ও গালের রঙ যেন ভরে যায় মোর ঠোটে গায় দিলে চুম,
যা যা দরকার সাবান স্নো ও পাউডার যা মনে পড়েছে ও দোকানে আছে কাঁকই আয়না ॥  
যে নারী লক্ষ্মী ও সতী,
সংগী প্রাণ বুঝমান হলে লজ্বাবতী,
মিলে স্বামী তার সুবোধ সুজন ও সুমতি,
গুরু ও ভাই কিবা বন্ধু বলো সে হলো তার পতি,
কেউ কখনো পারেনা তার হরিতে ধন করিতে কোন ক্ষতি,
বিধাতায় সংগে রয় আজীবন সংগী হয় আপদে নিদানে অবলার গতি,
কভূ যায়না হারি,
সুখ ছাড়েনা সে ঘরবাড়ী,
দুঃক্ষ বিষাদেও পড়েনা খাদে ভাংগেনা জোড় করেনা বিভোর কোন নেশার ঘোর পথ হারায়না ॥
হয় আবরু ভূষন,
আমরন এক দেহ এক মন,
চীর বন্ধু আপন ঐ দুজনার দুজন,
ছবি আঁকে সুখেদুঃখে লতার মত জড়িয়ে থাকে এ দেহের আবরন,
দুই ভূবনের এক জীবন মানুষের নাই মরন, সবই তার অদৃশ্যমান,
তাই তৃতীয় নয়ন যার নাই চোখ থেকেও সব দেখেও তার মিলেনা স্রষ্টার সন্ধান,
এ জীবন কিছুক্ষন তবু ছেড়ে যেতে কেউ চায়না, মহান দাতার দান ও তার ভেদ খুঁজে পায়না ॥