(১)
কবি হবার প্রত্যয়ে
হেঁটে গেছি কত হাজার মাইল বিরান পথ।
সেই কাঙ্ক্ষিত কবিতাটি আর হয়নি লেখা,
কেনো জানো?
আমার পথে কখনোই হাঁটেনি নাটোরের বনলতা।
রাতের আঁধারে কত খুঁজেছি সেই জ্যোৎস্না
হিজল,তমাল, দেবদারুর তলায়,
আমার আঁখি বারে বারে ফিরেছে
ল্যাম্পপোস্টের নিয়ন আলোয়।


(২)
পদ্মা,মেঘনা, যমুনার উত্তাল ঢেউয়ে
কবিদের কলম
কত বিরহের,
কত দুঃখের কবিতা রচে।
আমিও গিয়েছি পদ্মা,মেঘনা, যমুনা, কপোতাক্ষ এবং করতোয়া
আরো কত নদীর কাছে,
চিৎকার করে বলেছি
আমাকে একটা কবিতা ভিক্ষা দাও।
তারা বিন্দু মাত্র কর্ণপাত করেনি আমার বিলাপে
কারন কি জানো?
তারাও তাঁদের ঢেউ হারিয়ে ধু ধু বালুচর।


(৩)
গহীন অরণ্যে হেঁটেছি
উঠেছি সু-উচ্চ পর্বতের চূড়ায়
শীয়ন কালা জঙ্গলে
হাঁটতে গিয়ে ভয়ে অঙ্গরূহ শিহরিত হয়েছে।
শ্বাপদ সঙ্কুল পথ অতিক্রম করতে করতে ভেবেছি
এবার বুঝি কিছু একটা হবে।
কিন্তু আঁধার কালো বন
আর সূ-উচ্চ পর্বতমালা একসাথে বলল,
নাও তোমাকে দিলাম একমুঠো ভয়,
কবিতা নয়,
কবিদের যে ভয় থাকতে নয়।



(৪)
জীবনের সব লেনদেন চুকে
একবার গিয়েছিলাম রাজপথের মিছিলে,
রাজপথেই নিজেকে মুক্ত করে
লিখবো মুক্তির কবিতা।
কিন্তু হলো উল্টোটা,
যে মানবতার মুক্তির মিছিলে আমি
সেখানেই শুরু হলো
ইট পাটকেল, টিয়ার শেল আর ককটেল মারা
জীবন টা নিয়ে পলাতক আমি
কবিতার হলো সারা।


(৫)
জীবন থেকে পলাতক আমি
নিজেকে খুঁজে পেলাম রেল লাইনের বস্তিতে,
অনাদরে বেড়ে উঠা নিষ্পাপ মুখগুলোর
অনাহারী চিৎকার
পাথর আর রেল লাইনে হারিয়ে যেতে দেখে।
আমিও লিখলাম একটা কবিতা
খাদ্য,বস্ত্র, বাসস্থানের নিশ্চয়তা।
ডিজিটাল দেয়ালে সাঁটিয়ে দিলাম
কবিতার পংক্তিমালা
স্বভাবতই বীরাচারীরা আসলো তেড়ে কর্কশ গর্জনে
কে বলেছে অমার্জিতদের কথা লিখতে?
কবি হওয়ার ইচ্ছেতো
মিথ্যে কিছু লিখলেই হতো।
কবি হওয়া তোমার কম্য নয়,
বাতিল কর এই কবিতা
না হয় হবে দেশদ্রোহী
পঁচতে হবে আঁধার নিরালায়।
বুঝিয়ে দিলে স্বাধীনতা
ক্ষমতার অলৌকিক যোগ্যতা,
অজ্ঞাত রয়ে গেলো আমার কবিতা।


(৬)
তাইতো এখন নিরুদ্দেশ
আমি আর কবিতা।
অশ্লীল লিখে যায় কপট কবিরা,
সবাই বুঝিয়ে দেয়, কবি হওয়া সহজ নয়!