আপনজন
              অচিন্ত্য সরকার


আপনজন করতে চেয়েছিলে,
তোমার এক ধূসর হেমন্তে,
আমিও না করিনি।
তৃষ্ণার্ত মরু কি শিশিরের হাতছানি
অবহেলায় ফেরাতে পারে?
পলাশ ফুটেছিল তোমার মনে,
বসন্ত এসেছিল হৃদয়ের কোণে কোণে।


তারপর,যথারীতি কোকিল ডাকলো,
তোমার মনও আনচান করলো,
রসবতী গাছে আগাছার নজর পড়ল।
আগাছা শিকড়ের আলিঙ্গন মোহে  
চৈত্রের ফাটল আনলে সেই তুমি।
ফেটে চৌচির হলো পেলব মনভূমি।

শুধু মাটিকে আঁকড়ে ধরে,ভিতরে
শিকড় প্রবেশ করার জন্যই কি
গাছ মাটির আপনজন হয়?
ফুল,ফল,ছায়া,প্রাণবায়ু,শুদ্ধতা
এসবের কি কোন মূল্য নেই?

অথচ তুমি অবলীলায় সব তুচ্ছ করে
ভুলে গেলে অমূল্য প্রাণের সম্পদ,
হারিয়ে গেলে মিথ্যের আবহে,
ভুলে প্রথম ফোটা সেই মল্লিকা কুড়ি,
শুধুমাত্র আগাছার শিকড়ের মোহে।


আগাছাকে আপানজন ভেবে
কলুষিত করলে ফেলে আসা
সোনালী স্বপ্নের ক্ষণ।
যাকে নিজেই বলেছিলে শ্রেষ্ঠ বন্ধু
তাকেই শত্রু ভাবতে ভাবোনি একবিন্দু
বিষাদ সিন্ধুতে ডুবে গেল মন।


একবিন্দুও ভাগ নিতে চাওনি তার,
লুকোচুরি খেলেছো দিনের পর দিন
সাজিয়েছো মিথ্যের জারিজুরি
খেলেছে তাড়নার শিকড় বিহার।


তারপর একদিন মোহভঙ্গ হলো
বুঝলে আগাছা শিকড়ের আলিঙ্গন,
আসলে ছিল বিষময় নাগপাশ.....
কেঁদে কেঁদে বললে,'বন্ধু,বাঁচাও
নিঃস্ব হয়েছি আমি,শূণ্য চারপাশ।'


কোন গালিতে কান দিইনি,
কোন নিষেধের বাধা মানিনি,
হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম আবার।
ভরসা করোনি পুরোপুরি,
তখনও মনে যে আগাছার কারবার,
অপমান অবহেলা নীরবে সয়েছি
অভিযোগও করেনি একবার।


এখন সুখি হয়েছো,আনন্দ পেয়েছি।  
আশ্বস্ত হয়েছি আর একবার
তোমার সরল স্বীকারোক্তিতে।
ভালো লেগেছে শুনে,
এখনও আছি,আপনজনের পংক্তিতে..