বেশ করেছিস জঙ্গিবাবা
অচিন্ত্য সরকার


ওরা তো রোজই মরছে,পথে,ঘাটে,হাটে মাঠে,
কলে কেটে,সাপে কেটে কে আর হিসেব রাখে।
এই তো সেদিন সখিনা, সারুতি,লক্ষ্মী,আমিনারা
কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের পেটে গেল,কি পেল?
কাঁচ কলা!পাঁচ তলার ছাদে কাজ করতে করতে
পড়ে মরলো খালেক,তার বৌ বাচ্চা পথে বসলো,
সুতো কলে কাটা পড়লো পাচু,সাগরে মাছ ধরতে
গিয়ে আর এলো না হারান,গত মাসে পোকা মারার
তেল খেলো রাখাল,অনেক টাকা ধার করে চাষ
করেছিলো যে!খনির মধ্যে গনেশ আর তরিকুল
মরলো গ্যাস খেয়ে, ঘরে আজও মাথা খুটে মরে
তার সমোত্ত বউ মেয়ে। কত আর বলবো বল,
চোখে আসে জল।ভেসে গেছে সংসার ,কেও
ফিরেও চাইনি একবার। খবরের কাগজ, রেডিও,
টিভি,কেও কোনো গন্ধও পায়নি।রোজই মরে
এভাবে অজ্ঞাতে অনাহারে, নেতায় মারে,মহাজনে
মারে,মালিকে মারে,হাতে,ভাতে যে যেমন ভাবে পারে।
মানের কথা,সে আর বলি কারে! বেশ করিছিস জঙ্গি বাবা,
মেরে অন্তত তুই ওদের জাতে তো তুললি।তোরা মারলি
তাই,মরে ওরা মন্ত্রীর হাতে ফুলের মালা পেলো,
উড়োজাহাজ চড়তে পারলো,দেশ বিদেশে কতো
নাম হলো ওদের,টিভিতে দেখাচ্ছে রোজ সকাল সাঁজে,
গুণি মানুষরা ব্যস্ত আলোচনার ঝাঁজে।আর ওদের বউ গুলো,
ওরা বেঁচে থাকতে তো পাঁচ'শ টাকাই কোন দিন একসাথে
দেখেনি,এখন পাঁচ পাঁচ লাখ একসাথে, কি সুখ বলো দেখিনি!
আবার নাকি সরকারি চাকরিও পাবে,একেই তো বলে মরে
বেঁচে যাওয়া, এক্কেবারে ভাগ্য লক্ষ্মীর দেখা পাওয়া।
তাই বলি কি ,তোরা মেরে বেশ করেছিস জঙ্গিবাবা।
ওয়াই,জেড কত রকম ক্যাটেগরী,সাথে বুলেট প্রুফ দামী গাড়ী,
ওসব তো পাবে বড় কথা বলতে পারা,আছে যত নেতা আর মন্ত্রী,
ওদের ওপর হানলে হানা,তোদের মান টা বাড়তো হয়ত
দু'চার আনা,কিন্তু তাতে ভুকা শ্রমিকদের কিবা হতো,
বন্ধে দু'দিন ঘরে বসে অভাব বাড়া ছাড়া?তাই বলছি জঙ্গীবাবা,
এবার থেকে মারলে মারিস যেথায় যত আছে এমন হতভাগ্য
ছন্নছাড়া। হয়তো তোদের কমবে কিছু মান,খবরজীবী খবর পাবে,
তর্কজীবী তর্ক,ওরা অন্তত মরে বাঁচুক,দু'বেলা পাক
পেটটা ভরা ভাত আর একটু সন্মান।