পাগল হবো
অচিন্ত্য সরকার


মা,প্রনাম নিও,কেমন আছো প্রশ্ন করবো না
কারণ,তোমার কষ্টটা আমি বুঝতে পারি কিন্তু
কি করি বলো,নিজেকে বড় অসহায় মনে হয়।
এই প্লাস্টিক-মোড়া সভ্যতার যুগে নিজেকে
আর কতোটা বা অসভ্য করতে পারি বলো?
গর্ভধারিনী মা পাথর প্রাসাদে আজ বেমানান
আর তোমার জন্য জায়গা কোথায় পাই আর!
পাতা পড়লে বাড়ির রঙ নষ্ট,শিকড়ে ভীত নষ্ট
তোমার জায়গা একচিলতে ছাদের টব-বাগান।


তোমার শ্বাস কষ্ট টা ইদানিং খুব বেড়েছে,জানি
ইঞ্জিন ভ্যানের বিকট শব্দ আর কালো ধোঁয়া
এই বয়সে আর এসব সহ্য হবার কথা নয়,কিন্তু
ওদের সবার ইউনিয়ন আছে,ভোটানুগত্য আছে;
তাই প্রতিবাদ করতে বড় ভয় হয়;জীবনটাই না
বেঘোরে যায় পাছে! আমাদের ভবিষ্যৎ? সে কথা
কে আর ভাবছে আজ! দিল্লি-কোলকাতার মতো
শহর গুলো তো তোমার বুকে পা দিয়ে আকাশ
ছুঁতে চাইছে,পন্ডিতরা হয়েছে বোকা কালিদাস
সভ্য হতে কাটছে গাছ,সাফ করছে সবুজ ঘাস।
তোমার দক্ষিণ হাওয়া  কাঁচের দেওয়ালে  রুদ্ধ
আমরা বিষ নিঃশ্বাসী ইয়ার কণ্ডিশানে বেশ তুষ্ট।
শ্বাস কষ্ট? সিলিন্ডারে অক্সিজেন আছে দোকানে
কি করে নিতে হবে ডাক্তার বদ্দিরা সবই জানে।
হাসি পায়,বুঝিনে মানে;তারপর ভাবি আমরা তো
সভ্য,পাগল তো নয়,  নিজের ভাল তো শুনেছি
পাগলেও জানে। তাই বলছি শোন মা,কানে কানে
তোমার বৌ মা যেন না জানে;এবার ভেবেছি পাগল
হবো,মাটির বাড়ি করবো গ্রামে,তোমার কোলে
ফুলে ফলে শুদ্ধ বাতাস শুদ্ধ জলে,মাকে নিয়ে
আসবো চলে বৃ্দ্ধাশ্রম থেকে,পাগল হয়ে থাকবো
সুখে সহজ সরল গ্রামে,দুই মাকে কে কাছে রেখে।