(রক্তকথা কবিতার ধারাবাহিকতা)


আমার চার বছরের সন্তান সাঈদ আহনাফ নিবিড়
যদি তাকে চকলেটের মোড়কে বিষ দেয় কেউ,
সে বাছবিচার না করে পুরে দিবে মুখে-
আর ফলাফলটা সহজেই অনুমেয়!


গুলশান হামলায় আজ যারা প্রতিষ্ঠিত জঙ্গি-
শফিকুল, সামেহ, নিবরাস, রোহান, খায়রুল
তোমাদের জন্য আমার দু’ফোটা অশ্রু ঝরেছে নিরবে!
কারণ ধর্মের মোড়কে তোমাদের সুন্দর এক জীবনের
অমৃত না দিয়ে দেয়া হয়েছে বিষ-
তাই ইসলামের আলোকিত উজ্জ্বল মহাসড়কে না এসে
তোমরা হারিয়ে গেলে অন্ধ গলিতে!


যে জান্নাতের মোহে তোমরা জীবন বিলিয়ে দিলে
যে জান্নাতের জন্য তোমরা হলে জিহাদী-
সেই জান্নাত কখনোই জীবনের চরম আরাধ্য নয়!
জীবনের চরম আরাধ্য হলো ঐশী প্রেম- আল্লাহ্‌কে ভালবাসা,
যে ভালবাসার জন্য তুমি হয়ে যাবে আল্লাহ্‌র
আর স্বয়ং আল্লাহ্‌ হয়ে যাবেন তোমার কান-
যা দিয়ে তুমি শোনো;
আল্লাহ্‌ হয়ে যাবে তোমার চোখ-
যা দিয়ে তুমি দেখো! (হাদীসে কুদসীতে বর্ণিত)


মহানবী (সঃ) বলেছেন-‘মানুষ তার প্রেমাস্পদের সাথী’
স্রষ্টাকে পেতে হলে ভালবাসতে হবে তাঁর প্রতিটি সৃষ্টিকে!
জনৈক বিধর্মী মহিলা এক মৃত্যু পথযাত্রী
কুকুরের মুখে পানি দিয়ে হয়েছেন আল্লাহ্‌র প্রিয়ভাজন-
এটাতো হাদীসেই বর্ণীত!
শেষ বিচারে যখন আল্লাহ্‌ জিজ্ঞাসা করবেন-
‘হে আদম সন্তান! আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম, আনাহারী ছিলাম
তুমি আমায় শুশ্রূষা করোনি কেন? খাবার দাওনি কেন?’
এ প্রশ্নতো অন্য কোনো কিছু নয়-
মানব প্রেম সম্পর্কিত জিজ্ঞাসা!


নবীন প্রান যারা সত্যের সন্ধানী
তাদের পরিপূর্ণ ইসলামী জীবন বিধানের কথা না বলে
আমরা বলি জান্নাত আর জাহান্নামের কথা!
আমরা বলি জান্নাতের সহজ পথ জিহাদের কথা!
অথচ মহানবী (সঃ) সারাজীবন দাওয়াতের কাজ করে গেলেন-
তাঁর জীবনেও জিহাদ ছিল, তবে স্বেচ্ছা প্রণোদিত নয়
যেটা বিধর্মীরা তাঁর উপর চাপিয়ে দিয়েছেন শুধু তাই;
আর যুদ্ধে তিনি ছিলেন কতই না মানবিক!
যুদ্ধবন্দীদের হত্যার কথা সাহাবীরা তাঁকে বললেও
তিনি বলতেন- এদেরই ভবিষ্যত প্রজন্ম আসতে পারে
ইসলামের পতাকাতলে!


দুনিয়ায় যারা স্বার্থান্বেষী আর লোভী তারা আকৃষ্ট হয় জান্নাতের
আর যারা দুর্বৃত্ত ও পাপাচারী তারা ভীত থাকে জাহান্নামের!
অথচ স্রষ্টাকে ভাল না বেসে তুমি কি করে পৌঁছুবে জান্নাতে-
যেখানে গোটা জিন্দেগীর ইবাদতও তোমার পাথেয় হবে না
যদি স্রষ্টা তোমাকে এতটুকু করুণা না করেন শেষ বিচারে!


আর ঐশী প্রেমে যদি বিলীন হতে পারো
কিবা যায় আসে জান্নাত-জাহান্নামে!


তাই জীবকে ভালোবাসো, মানুষকে ভালোবাসো, স্রষ্টাকে ভালোবাসো
খুঁজে নাও হৃদয়ে প্রেমের জান্নাত!