বত্রিশটি বসন্ত দেখেছি
গাদাগাদা শিমুলের স্তূপে বসে
দেখেছি যৌবনহীনা দুধকুমারের বুক
চৈত্রের দাবদাহে পুড়তে দেখেছি
কৃষাণীর নগ্নপিঠ।


বত্রিশটি বসন্ত দেখেছি
ছন্দ আর কাব্যের পাত্র খুলে
চিপেচিপে বের করে এনেছি
বসন্তের রূপরসযৌবন।


গামার গাছের মগডালে বসা
কোকিলের কুহুকুহু সুর শুনেছি
কিশোরীর খোপায় দেখেছি
প্রজাপতির ওড়াউড়ি
কৃষ্ণচুড়ায় দেখেছি আগুনের ফুলকি
আমি বসন্ত দেখেছি!!


বত্রিশটি বসন্ত দেখেছি
বাসন্তী উৎসবে দেখেছি
অষ্টাদশী রমনীর উত্তাল যৌবন
দুরন্ত ছেলেদের উল্লোসিত হর্ষধ্বনি।


বত্রিশটি বসন্ত দেখেছি
শতকবির কবিতায় পড়েছি
বাসন্তী রঙের রঙ ছড়ানো ছন্দ
প্রেমিক হৃদয়ে দেখেছি
বসন্তের ঢেউ খেলানো স্রোত।


বত্রিশটি বসন্ত দেখেছি
শুনেছি রাজপথ দখলের মুহুর্মুহু স্লোগান
কালো রাস্তায় দেখেছি
বসন্তের রক্ত গোলাপ।


আমি বত্রিশটি বসন্ত দেখেছি
রঙ মহলে দেখেছি বিত্তের ঝনঝনানি
ভোজনশালায় দেখেছি ভোজন বিলাশ
ডাস্টবিনে দেখেছি দুবছরের শিশুর ক্ষুধার্ত মুখ।


আমি বত্রিশটি বসন্ত দেখেছি
কাগজে টিভিতে দেখেছি
সোনার বাংলার দুর্বার ছুটে চলা
বক্তৃতার মঞ্চে শুনেছি দারিদ্রমুক্ত ভাষণ
কুষ্টিয়ায় দেখেছি
রোগ শোক আর দারিদ্রতায় পিষ্ট
আত্মঘাতি আতিকের লাশ।


বত্রিশটি বসন্ত দেখেছি
দেখেছি শত-সহস্র দেশপ্রমিক যুবক
শত বাধায় ক্ষ্যান্ত হয়না ক্লান্ত হয়না
পিছুডাকে থমকে দাঁড়ায়না
লাল সবুজের পতাকা হাতে ছুটে চলে
ছুটে চলে নতুন এক সূর্যোদয়ের পথে
তাইতো আশায় বুক বাঁধি
আরো কিছু বসন্তের দিকে তাকিয়ে থাকি।