।আঞ্চলিক ভাষার প্রতি পূর্ণ সম্মান সহ।


বাঙালি আছিল সোনার পুতলা
কইতো বাঙলা ভাষা;
বাইরা দেশ ঘুরিত যাইয়ে চৌদ্দকাঙ্গাল বেশ!
আতকা দুক্কু পাইছে গেদা;বুদাই মককর,
হাছা মিছা, ভাছার ঘোরে, বহুত ছমছ্যা
- হুদাহুদি হুক্কি মারা, হত্তেহত্তে কাইজ্যা!
মাই বাফে বহুকষ্টে লিহাইয়া পড়াইয়া,
আদরের পুতুরে যেদিন পাঠাইলো বৈদেশ
- টেননাফ তুন কন্টাক্ অইয়্যে ভালা,
বোডত চরি বুডুর গরি,মালোশিয়া দেশ |


হাতপায়ে ডাঙ্গর পোয়া বেশি ট্যাহা চায়!
মালয় থেকে সোমালিয়া ত্রিপোলিতে পাড়ি,
গোড়ায় গলদ গুরো গয়াল বলদ বাছুর! দালাল 'ফখর' ভিসার দোহান খুইল্যে লিবিয়ায়,
'কদম আলী' ইরুপ যাইবো চইড়বো ডহর গাড়ি!
আয় এএএ আয়, আয়ও য় য় য় ও -
পিপায় চড়িয়া পোলায়,সাগরপথে যায়!
পথের কথা কি আর কমু কাহন,
বোগদা বিলোই, হানিভাতের চাকর,
হগগল হানো মোগো মানু, চাচা খালু মামু!
জঙ্গি ঠেলা,জংলা সরাই,কত্তো কাঁডাতার,
মাইঝেমইধ্যে কচুরিরতল নাক জাগাইন্না হাঁচুর |


জেল-জুলুমের বালাই ছাড়া কস্টুরাতে লাইন;
থাকতে শুরু ডাইল রুটিতে কাগজপত্র জমা!
শীতর দেশো বৃষ্টি নামেক রোইদ ওঠেক
আলোর শহর ভালোর শহর ফাউ,
বেবাক ফকফক্যা আর ঝকঝক্যা আইন,
বিপদ শুধু ভাষার হলেই হতো!
মিশ্র ভাষার নানান বুলি,জিন্নিপোহার লাহান |


দিন কাটে তো রাত কাটে না ঝুরে,
কিডা কোবু,শুনবু কিডা,কেবা আছু!
মানষির ছাওয়াল কনে যাতিচ্ এদিক ইট্টু শোন-
আসর বাসর ব্যর্থ ঘুরে,কাঁসর বাদ্য জুড়ে
- পেট ভরেনা, পেটের ভেতর ছুঁচো!
ভাতের ক্ষুধার ছোবল রাতে, জীবনঘড়ির বেইল বারোটা!
পাস্তা পিজ্জা নাস্তা খানা সবই অজানা
- একখান জিনিস চিনতে পারে হঠাৎ,
'জিনা কাবাব' সামনে খোলা, রোসাং পুলায় ভাজে 'পালাটা' |


চিনলে কী লাভ! এহানে কে চিনবে পরোটা!
এটা সেটা মিশ্র ভাষায় কইছে যা-তা
ব্যাঙের মাথা রঙের ছাতা, তাল কবিতা
তিলের পাতা!
মাথায় আসে অবশেষে,দেশের কতা!
সাধনপুরের বোধন গাঁয়ের সুখ,
মদন চাচার ভাতর অডল্,দাদন কাকুর মুখ!
ভূকের চোটে কাতর ওঠে্ বলতে থাকে ছাইই
- হায়, কী নিদারুণ অপভাষার দুখ!
ইনি পরাটা, দে না পরাটা, ইনাপরাটা ভাই
মারাঠা কারিগর আনাড়ি আরো, চোখ রাঙিয়ে বলে-
নেহিপারান্থা,দুনাপরাটা,গুনাপরাটা, সুনাপরাটা হাইইই ই,
কাছে দাঁড়িয়ে ঘাটমরাটা, অসহায় আমিও তা-ই - ই ||


________________
© আগুন নদী © ডিসেম্বর ২৩


পুনশ্চঃ
রম্য রসের প্রয়োজনে, কবিতায় - কয়েকটি অঞ্চলের আঞ্চলিক, কথ্য ভাষা অর্থবোধক মিশ্র এবং অপভ্রংশ প্রয়োগ করা হয়েছে। মূলত প্রতিবাদী প্রয়াস -