আমি দেখিতে চাই না দূরের আকাশ,
দূরের পৃথিবী, দূরের নীহারিকা।
আমি জানিতে চাই না গ্রহের গতি,
অথবা নক্ষত্রের আলো কেমন করে আসে।

আমি দেখিতে চাই না হিমালয় পর্বত,
সমুদ্র সৈকত, কিংবা সীমান্তরেখা।
আমি বুঝতে চাই না অতল মহাসাগরের গভীরতা,
যেখানে ঢেউয়ের নিচে লুকিয়ে আছে
অগণিত রহস্যের প্রাচীন ভাষা।

আমি দেখিতে চাই—
জীবনের কাছাকাছি অঞ্চল,
চিরচেনা নদী, প্রান্তরের হিজল-করচ গাছ,
যেখানে বাতাসে দোলে নরম শ্যামল ছায়া,
আর কিশোরীর হাসির মতো নদীটি বয়ে চলে।

আমি দেখিতে চাই চালের কুমড়ালতা,
বাড়ির উঠোনে লাল-হলুদ ফুলের মেলা,
সরিষার ক্ষেত, উঁচু উঁচু গাছ,
যেখানে পাখিরা গান গেয়ে
প্রতিদিন নতুন ভোর আনে।

আমি শুনিতে চাই—
বৃদ্ধ বটগাছের নিচে বসে
গল্পগাথা বলা কোনো চেনা মানুষের কণ্ঠস্বর,
যেখানে সময় থেমে থাকে,
শুধু স্মৃতিগুলো বয়ে চলে নদীর জলের মতো।

আমি ছুঁইতে চাই কাঁচা মাটির সোঁদা ঘ্রাণ,
ঝরাপাতার কাঁদুনিকে গভীরভাবে বুঝতে চাই,
বৃষ্টিস্নাত বিকেলের নিস্তব্ধতা,
কিংবা সন্ধ্যার আকাশে
প্রথম তারাটির মৃদু জ্বলে ওঠা।

আমি দূরের রহস্য বুঝতে চাই না,
আমি কেবল বুঝতে চাই—
ভোরের কুয়াশায়
ঘাসের উপর শিশিরবিন্দুটি,
যেখানে প্রতিটি বিন্দুতে লুকিয়ে আছে
জীবনের এক অনির্বচনীয় মায়া।

আর সুন্দর করে লিখতে চাই
একটি নিখুঁত কবিতা—
যেখানে শব্দেরা মিলবে হৃদয়ের গভীরতায়,
আর প্রতিটি পঙক্তির মাঝে
থাকবে জীবনের আসল সৌন্দর্য।