কেউ জানে না—
একেকটি মানুষ বুকের ভেতর কতটা ঝড় লুকিয়ে রাখে,
কতটা কান্না রোদনের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়,
কতটা আর্তনাদ শব্দহীন থেকে যায় রাতের অন্ধকারে।

নিস্তব্ধতার আড়ালে যে হাসি ছড়িয়ে দেয় সকালবেলায়,
সে কি জানাতে পারে তার রাত্রিজাগা বিষণ্ণতা?
সে কি বলতে পারে কতটা একা একেকটি দীর্ঘশ্বাস
আকাশের তারাদের কাছে গোপন চিঠি হয়ে পৌঁছায়?

কেউ বোঝে না—
কেন কিছু মানুষ ভিড়ের মাঝেও একা হয়ে যায়,
কেন তাদের চোখের ভেতর ক্লান্ত নৌকোর মতো ভাসে
অগণিত ব্যথার ঢেউ,
কেন তারা রোদের ভিতর দাঁড়িয়ে থেকেও
অনুভব করে জমাটবাঁধা শীতের স্পর্শ।

একেকটি দীর্ঘশ্বাসের আছে নিজস্ব ইতিহাস—
কেউ জন্ম দেয় তা শৈশবের হারানো বিকেলের স্মৃতিতে,
কেউ লালন করে প্রথম প্রেমের না বলা কথায়,
কেউ বয়ে নিয়ে চলে সম্পর্কের ভাঙনের প্রতিধ্বনি,
আবার কেউ গোপনে রেখে দেয় তা অবহেলার কর্কশ দরজার ওপারে।

কেউ জানে না—
কতটা শব্দহীন কান্না রাত্রির অন্ধকার চাদরে মিশে যায়,
কতটা ব্যথা প্রতিদিন নগরের কোলাহলে বিলীন হয়ে যায়,
কতটা অপেক্ষা জমে থাকে চেনা কারও ফেরার প্রতীক্ষায়।

তবু মানুষ বেঁচে থাকে,
মুখে হাসি টেনে নেয়, কথায় প্রাণ ঢেলে দেয়,
কারণ তারা জানে—
এই পৃথিবী কেবল দীর্ঘশ্বাসের জন্য থেমে থাকবে না,
এই শহর, এই নদী, এই পথ
কারো না বলা ব্যথা বুঝতে চাইবে না।

তাই একেকটি দীর্ঘশ্বাস
অদৃশ্য বাতাসের মতো উড়ে যায়,
কারো মন আর্দ্র করে, কারো হৃদয়ে দাগ কেটে যায়,
আবার কখনো, কিছুই না ছুঁয়ে
শুধু হারিয়ে যায়...