কঠোর সাধনায় লাভে যে জন ব্রহ্মজ্ঞান
প্রথা মতে সেই তো শুধু হয় ব্রাহ্মণ ।
কিন্তু হায়! যজ্ঞ সাধনাবিনা ব্রাহ্মণ জন্মে
বংশ পরম্পরায় তাদের সকল বাছাধন ।
তাই ওদের দিয়ে তারা করাবে না কভুও
আয় রোজগারের কঠোর কাজ কর্ম ।
ঘৃত ভক্ষনকৃত চর্ম রক্ষায় তন্ত্রমন্ত্র যোগে
সেই নন্দনদের পেশাই বানালো ধর্ম ।
আর সেটা যুগ যুগ জিইয়ে রাখতে গিয়ে
ইনিয়ে বিনিয়ে জুরে ধর্মের দোহাই ।
যেই ছল চাতুরীর কুফল আজও আমরা
উপমহাদেশ বাসি প্রায় সকলে পোহাই ।
ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বৈষ্ণব শুদ্র হতে আরও যে
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতে জাতিকে করে বিভক্ত ।
নিজেরা শিরোমণি সেজে থাকতে কতনা
বাহানায় ওদের করে রেখেছে অন্ধভক্ত ।
ধর্মান্ধতায় ডুবে গিয়ে তারাও আর বুঝল
না কি ভয়ানক জাল রেখেছে পাতিয়ে ।
বারোমাসে তেরো পার্বণ পূজারী বানিয়ে
রাখল তাদের হৈ হুল্লোড়ে সদা মাতিয়ে ।
ধর্মের অন্তর্নিহিত তত্ত্ব লুকিয়ে বিনোদনে
ওদের মনোজগৎ করে বেড়াজালে বন্দী ।
স্বজাতিকে ধর্মদাস বানিয়ে রাখাতে আর
কেউই করেনি এমন অমানবিক ফন্দি ।
মুসলিম শাসনামলে ওরা মাথাচাড়া দিতে
পারেনি বলে বৃটিশদের দালাল সাজে ।
ভাঁজে ভাঁজে চলে তাদের মন জয় করল
শোষণের সহায়ক প্রায় সকল কাজে ।
ধর্মে জাতি বৈষম্য সৃষ্টি করেও তাদের ঐ
দুর্ণিবার আকাঙ্ক্ষা আজও হয়নি পূর্ণ ।
নিজেরা সেজে উচ্চবর্ণ বাকীদের বানিয়ে
অচ্ছুত মনভেঙ্গে আজও করে চূর্ণবিচূর্ণ ।
তাই তারা সর্বদাই ধর্মে উস্কানি চুলকানি
রাজনৈতিক ইন্ধন ঘটিয়ে নিচ্ছে ফায়দা ।
ওদের ঐ উঁচু স্থানটি ধরে রাখতেই আজও
করে যাচ্ছে নানা রকম কসরত কায়দা ।
যার কষাঘাতে উপমহাদেশের শত কোটি
মানুষ বাঁচে নিদারুণ মানবেতর ভাবে ।
উচ্চবর্ণরা বিলাস বসনের জীবন আদর্শে
মত্ত নিম্নবর্ণরা ধুঁকে মরছে অর্থাভাবে  ।  
ওদের ভেদ দর্শন আর গনতান্ত্রিক শাসন
মিলে উপমহাদেশে চলছে সর্বত্র প্রহসন ।
হেথা কভু আসবে না শান্তি শৃংখলা সমৃদ্ধ
যদি না হয় এই সংকটের চির নিরসন ।


রচনাকালঃ- রাত ১০:৪৪টা, শুক্রবার, ২২ পৌষ ১৪২৯, ৬ জানুয়ারি ২০২৩, মিরপুর, ঢাকা ।