কাফনের দোকানে সকাল হতেই গমন,
সাড়ে তিন হাত দেহটার কাফনের বন্দোবস্তে,
গোর খোদকের আগমন বাঁশঝাড়ের ঠিক পিছনে,
যতনে খনন করিতে হবে গোর,
মোল্লা সাহেব ব্যস্ত সব কিছুর তদারকিতে।
দলে দলে ছুটিছে মানুষ,
বোবা দেহটা স্থির অনাদরে চাটাইয়ের উপরে,
পরিধেয় বস্ত্র কিংবা অলঙ্কার নেই গাত্রে,
ঠাণ্ডা হয়ে গেছে দেহটা।
মসজিদের মিনার থেকে অনবরত ভেসে আসছে আওয়াজ,
বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে,
এলাকায় এলাকায় খবর পৌছিয়ে দিয়েছে,
আত্মীয়,অনাত্মীয় মিলে।
আগর বাতি জ্বালিয়ে রাখা আছে শিহরে,
কতক মানুষের কান্নায় জানান দিচ্ছে-
আত্মার বিদায় হয়েছে ক্ষণিক আগে,
গোসলের জন্য মুরব্বি সমাজের আহ্বান,
তাড়াতাড়ি করো জানাজার সময় গনিয়ে এলো বলে।
গোরস্থান থেকে খবর এলো শিশু দলের মারফতে,
কবর গৃহ তৈরি আছে,
নিয়ে আসো লাশ অতিদ্রুততার সাথে।
খাটিয়া সমেত লাশ নিয়ে চলছে একদল যুবা,
অপেক্ষায় আছে নামাজিরা নিকটস্থ মসজিদ মাঠে,
মোল্লা সাহেব শুনালেন উদ্দেশ্য করে জনতায়,
আমাদের আসিতে হবে এক এক করে ছাড় না কারো।
জানাজার শেষে বোবা দেহটা নিয়ে বাঁশঝাড়মুখী সবে,
মুঠোভরা মাটিতে ভরিলো কবর,
দেহটা একাকী নির্জনে,
অবরুদ্ধ দেহ মাটির আবরণে-
পালাবার রাস্তা নেই এই ক্ষণে।
পশ্চিম আকাশে দু'হাত তুলিয়া রবের আরশে এই আর্জি,
ওগো দয়াময় ক্ষমা করো আজ-
যত পাপ,অনাচারের।
দলে দলে চলিলো মানুষ বাঁশঝাড় ছেড়ে,
আত্মীয়ও রইলো না কেউ-
বোবা দেহটাকে ঘিরে।
নতুন ভোর দেখার আগে যদি মরণের দূত আসে,
কোথায় পালাবো?
এমন ঠিকানা কি আছে?
শেষ বেলায় এসে হিসাবের খাতা খুলে বসি,
তবেই মিলিবে কি করেছি,
কত পাপ,কত অবিচার।
আজি শেষ সময়ে এসে নিজেকে বাঁচাতে,
সরল,সহজ পথে চলি,
না চলিলে আজ কি করিবো হায় রবের দরবারে উঠি,
যদি চলি সুন্দর পথে,
সহজ,সরল মনে,
আমাদের মরণে উৎসব রচিবে-
ফেরেশতাদের আবাসস্থলে।
তাই,
শেষ সময়ের আগে প্রতিজ্ঞায় বসি সবে,
এমন জীবন রাঙাবো যেন মরণে আত্মা হাসে,
বিদেহী দেহের বিদায়ী কাফেলায়,
লাখো মানুষের অশ্রুঝরে।
শেষ সময়ের আগে-
গোরের কথা ভেবে নিজেরে করি ঠিক,
এই যে হয় সকল মুনাজাতের বাণী।