ধানসিঁড়ির তীরে জন্ম তোমার
জন্ম পরাধীন  বাংলায়
আষাঢ়ের বৃষ্টি  ভেজা স্বরে প্রথম
মা! মা! বলে ডেকে ওঠা।


সিংহ রাশির বরকতে
তুমি পেয়েছো অসীম সাহস,অসীম প্রতিভা।
জ্বিন,ভূত, দানবে নেই ভয়
নেই ভয় কুচক্রী মহলের দৌরাত্ম্যে।


তুমি বীর!
তোমার বীরত্ব গাঁথা প্রকাশিত
এই মুক্ত বাংলায়।
তোমার শত্রুরা ভীত সন্ত্রস্ত
তোমার ঐশ্বরিক ক্ষমতায়।


নিপিড়ীত মানুষদের হৃদয় তুমি
তুমি তাদের চোখের মণি।
তোমার মাঝে এক  দীপ্তি শিখা
চিরন্তন সত্যকে দেখতে পারি।


শরৎ এর মেঘের ভেসে আসা ভেলায়
চিরায়ত লোকবিশ্বাসের পূজারী হয়ে
দৈবচয়নে তুমি এসেছো এই পল্লীতে
এক শিক্ষকের আলয়ে।


বেড়ে উঠেছো তুমি!
পল্লীর ধুলো বালি মাটিতে গড়িয়ে
খাল বিল পুকুরে নাইয়ে
দাড়িয়াবান্ধা ফুটবল খেলে খেলে।


তুমি কর্মঠ!
তুমি বীর! তুমি দায়িত্ববান!
তোমার নিকট আমার প্রণাম।


তুমি কাঁধে নিয়েছো কত বোঝা!
কত কাজ!কত হিসেব!
সবই পূরণ করবে নাকি
সময়ের মৃত্যুর পূর্বে।


তুমি বীর!
সময়ের দৌড়ে তুমি ধৈর্য্যশীল।
তুমি চিত্রগুপ্তের মতো
সব হিসেব করে চলো।
শত বাধা! শত ঝঞ্জাট!
বাতাসের বেগে সমাধান করে ফেলো ।


তুমি বীর!
তুমি  করেছো জয় হাজার খানেক যুদ্ধ ।
পাড়ি দিয়েছো মৃত্যুভয়
ভেদ করেছো চক্রবুহ্য।


ন্যায়ের বিধানে তুমি শ্রেষ্ঠ!
তুমি বিদ্রোহ করেছো ; দিয়েছো দন্ড
সততার জন্য কুটুমের  সাথে
হয়েছে যুদ্ধ ; তুমি বীর!
তুমি তুলে ধরেছো হাত বিশ্বাসের,
ভরসা আর সততায় মুষ্টিবদ্ধ করেছো
নিজের শক্তিকে  ন্যায়বিধানে।


পল্লি ষড়যন্ত্র হয়েছে  তোমার বিপরীতে
তুমি বীর!  তুমি যোদ্ধা!
সব অগ্নিপরীক্ষা দিয়ে প্রমাণ করেছো
তুমি সঠিক!  তুমি সততা!


বয়সের দৌড়ে তুমি হাঁপিয়ে গিয়েছো
দায়িত্বের ভারে তুমি ক্লান্ত হয়েছো
চামড়ার লাবণ্য কিছুটা ফ্যাকাশে হয়েছে
দুঃশ্চিতার রেখাগুলো ফুটে উঠেছে
পুরো কপাল জুড়ে।


তুমি বীর!  তুমি যোদ্ধা!
ক্যান্সার ময়দানে তুমি লড়েছো
নিজের সবটুকুই দিয়ে।
তোমার সাহসিকতা!  তোমার নির্ভীকতা!
কেমোথেরাপিকে বশ করেছে ।
তোমার চুলগুলোর বিদায়বেলা
সকলের  মনে নাড়া দিয়েছে।


তুমি বীর!  তুমি যোদ্ধা!
তুমি শীতের রুক্ষতায়;  ডিসেম্বরের ভোরে
অস্ফুটস্বরে বিদায়ের শঙ্খনাদ বাজালে
ধানসিঁড়ির তীরে সেই পল্লীতে।


তুমি বীর ! তুমি যোদ্ধা!  
তোমার জীবন গাঁথা অমরত্ব পেয়েছে
এই মুক্ত বাংলার প্রকৃতিতে।